বান্দরবানে সেনামদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের কর্তৃক চাঁদাবাজি ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ

হিল ভয়েস, ১১ আগস্ট ২০২৪, বান্দরবান: সম্প্রতি পার্বত্য জেলা বান্দরবানে সেনামদদপুষ্ট ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীদের কর্তৃক চাঁদাবাজি ও অপহরণের পর ব্যাপক মুক্তিপণ আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ আগস্ট ২০২৪, সকাল ৯ টার দিকে বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক রাস্তামাথা এলাকায় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীদের দুই সদস্য চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কে মালবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা তুলতে শুরু করে। এসময় পাহাড়ি-বাঙালি এলাকাবাসী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং চাঁদা উত্তোলনকারী দু’জনকে আটক করে উত্তম-মধ্যম দেয়। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা একটি গাড়িতে এসে তাদেরকে তুলে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় সেনা সদস্যরা ঘটনাটি কোথাও প্রকাশ না করার জন্য এলাকাবাসীকে নির্দেশ দিয়ে যায়।

সন্ত্রাসীদের মধ্যে একজনের নাম নুমং মারমা (৩০), পিতা-অজ্ঞাত, বাড়ি রাজস্থলী এবং অপরজন একজন খিয়াং যুবক (নাম অজ্ঞাত) বলে জানা গেছে।

অপরদিকে, গত ১৬ জুলাই ২০২৪, সন্ধ্যা ৭ টার দিকে অটল চাকমা (৪০) এর নেতৃত্বে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীদের অপর একটি দল বান্দরবান সদরের সুয়ালক এলাকার ‘ইকোভ্যালি রিসোর্ট’ থেকে ফেরার পথে মংতিং মারমা (৩৮) নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে। মংতিং মারমা ‘ইকোভ্যালি রিসোর্ট’ এর মালিক বলে জানা গেছে।

অপহৃত অংতিং মারমার পিতা মংথোয়াইচিং মারমা সুয়ালক মৌজার হেডম্যান এবং বাড়ি সুয়ালকপাড়া গ্রামে।

জানা গেছে, অপহরণকারী সন্ত্রাসীরা গত ১৮ জুলাই, মংতিং মারমার পিতা হেডম্যান মংথোয়াইচিং মারমাকে ফোন করে তার ছেলের মুক্তিপণ হিসেবে ১ কোটি টাকা দাবি করে।

এরপর অংতিং মারমার আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী আশেপাশের জঙ্গলে অপহৃতকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। তখন অটল চাকমা হেডম্যান মংথোয়াইচিং মারমাকে ফোন করে বলে যে, ‘বেশি খোঁজাখুঁজি করবে না। জঙ্গলে আসবে না। আসলে তোমাদেরকে গুলি করব।’

পরে এক পর্যায়ে অটল চাকমা হেডম্যানকে ফোন করে বলে যে, ৬৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। না হলে ছেলের লাশ নিয়ে যেতে হবে।

এরপর গত ২৩ জুলাই, হেডম্যান মংথোয়াইচিং মারমা তার ছেলের মুক্তির জন্য অপহরণকারী সন্ত্রাসীদের ৬৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে বাধ্য হন এবং ঐদিনই সন্ত্রাসীরা মধ্যরাতে অপহৃত মংতিং মারমাকে গাড়িতে সুয়ালকপাড়া গ্রামে এসে ছেড়ে দিয়ে যায় বলে জানা যায়।

এদিকে, মুক্তিপণের বিনিময়ে অপহৃত ব্যক্তির মুক্তির পর, বান্দরবানের ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীদের নেতা নোয়াপতং মৌজার হেডম্যান মংপু হেডম্যানকে তার বাড়িতে ফ্রিজসহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র কিনতে দেখা গেছে বলে এলাকাবাসীরা জানান। এলাকাবাসীর ধারণা, ঐ মুক্তিপণের টাকা দিয়েই মংপু হেডম্যান ঐসব বিলাসী জিনিসপত্র ক্রয় করেন।

আরও জানা যায়, গত ৫ আগস্ট, বান্দরবান সদরের সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ জীপ-সিএনজি চালকদের একটি দল বালাঘাটা এলাকায় গিয়ে সেখানে অবস্থিত ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীদের একটি আস্তানা ও চাঁদা উত্তোলনের পোস্ট ভেঙে দেয়।

More From Author

+ There are no comments

Add yours