হিল ভয়েস, ২৩ আগস্ট ২০২৪, ঢাকা: আকস্মিক বন্যায় খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও মৌলভীবাজারে হাজার হাজার আদিবাসীর বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। শুক্রবার (২২ আগস্ট) কাপেং ফাউন্ডেশনের এক প্রেস নোটে এ তথ্য জানানো হয়।
কাপেং ফাউন্ডেশনের প্রেস নোটে আরও বলা হয়েছে, গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে এবং সেখানকার নদ-নদীগুলো বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙ্গামাটি, মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, বিভিন্ন জেলার মোট ৪৩টি উপজেলা আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আদিবাসীসহ প্রায় ১,৮৯,৬৬৩ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এইসব জেলার মধ্যে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজার হল আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল যেখানে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, সাঁওতাল, খাসি, গারো আদিবাসী জনগোষ্ঠী বসবাস করে আসছে। খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা, পানছড়ি, রামগড় ও খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা, রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি ও লংগদু এবং মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা।
রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে এবং খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালা, পাশাপাশি রাঙ্গামাটির লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বিঘিœত হয়েছে। এ জেলায় মোট ৯৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ি জেলায় ১৯ আগস্ট ২০২৪ থেকে একটানা ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ি সদর এবং দীঘিনালা ও পানছড়ি উপজেলার বহু গ্রাম প্লাবিত হয়।
বুধবার (২১ আগস্ট) ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ির চেঙ্গী ও মাইনী নদী উপচে পড়ে, যা অপরিবর্তিত রয়েছে। খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা, কবাখালী ও মেরুং ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি গ্রাম ইতিমধ্যে পানির নিচে তলিয়ে গেছে এবং দীঘিনালা-লংগদু সড়ক এখনো পানির নিচে থাকায় রাঙ্গামাটির সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দীঘিনালার কবাখালী ও মেরুং ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ এখন বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংকটে পড়েছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে খাগড়াছড়ি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সদর, মাটিরাঙ্গা ও দীঘিনালা উপজেলায় প্রায় ৯ হাজার মানুষ আটকা পড়েছে। দীঘিনালার কবাখালী ও মেরুং ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ এখন বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংকটে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ইতিমধ্যেই জলমগ্ন এলাকা ছাড়াও খাগড়াছড়ি পৌর এলাকার খবংপুজ্যে, উপলীপাড়া, কলেজপাড়া, নারাংখিয়ে, স্বনির্ভর, আদালত রোড, মাস্টারপাড়া, মিলনপুর, বায়তুশরাফসহ বেশ কয়েকটি সড়ক ইতিমধ্যেই তলিয়ে গেছে।
অন্যদিকে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে এই আকস্মিক বন্যায় আদিবাসী খাসিয়াসহ প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষ পানিতে আটকে পড়েছে এবং ১৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন বাজার ধসে পড়েছে এবং বিস্তীর্ণ আমন ক্ষেত ও কৃষকের আবাদ করা সবজি তলিয়ে গেছে।
+ There are no comments
Add yours