হিল ভয়েস, ১৯ আগস্ট ২০২৪, রাঙ্গামাটি: পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী নাগরিক সমাজ, প্রথাগত নেতৃত্ব, ছাত্র-যুবদের প্রতিনিধি ও অন্যান্য অংশীজনদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনসহ অন্তবর্তীকালীন প্রতিনিধি নিয়োগ, আইন-নীতি প্রণয়ন ও পরিমার্জন এবং প্রাসঙ্গিক প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণার্থে দাবি জানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল (১৮ আগস্ট) উপদেষ্টার বরাবরে লিখিত বিভিন্ন দাবি সম্বলিত এই স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক। নাগরিকগণ হলেন- রাজা দেবাশীষ রায়, সার্কেল চীফ, চাকমা সার্কেল; গৌতম দেওয়ান, সভাপতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি; প্রফেসর মংসানু চৌধুরী, শিক্ষাবিদ ও সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি; নিরূপা দেওয়ান, প্রাক্তন সদস্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ; বাঞ্ছিতা চাকমা, প্রাক্তন সদস্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ; সুদত্ত বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা, সাধারণ সম্পাদক, পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ অন্দোলন; শান্তি বিজয় চাকমা, সাধারণ সম্পাদক, পার্বত্য চট্টগ্রাম হেডম্যান নেটওয়ার্ক; এডভোকেট সুষ্মিতা চাকমা, কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী, উইমেন্স রিসোর্স নেটওয়ার্ক; জুয়ামলিয়ান আমলাই, সভাপতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলন, বান্দরবান চ্যাপ্টার; এডভোকেট মাধবী মারমা, নির্বাহী সদস্য, উইমেন্স রিসোর্স নেটওয়ার্ক, বান্দরবান পার্বত্য জেলা; ড. সুধীন কুমার চাকমা, উপদেষ্টা, সচেতন নাগরিক কমিটি, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা; থোয়াইং চ প্রু মাস্টার, প্রাক্তন চেয়ারম্যান, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ; দীনেন্দ্র ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদক, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি, বান্দরবান চ্যাপ্টার; অশোক কুমার চাকমা, নির্বাহী পরিচালক, মোনঘর শিশু সদন, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা; স্বদেশপ্রীতি চাকমা, হেডম্যান ও সাধারণ সম্পাদক, পার্বত্য চট্টগ্রাম হেডম্যান নেটওয়ার্ক, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশের প্রেরণা নিয়ে নব গঠিত সরকারের যে যাত্রা শুরু হয়েছে আমরাও তার অংশীদার হতে চাই..’
স্মারকলিপিতে নিম্নোক্ত দাবি জানানো হয়:
১. যত দ্রুত সম্ভব পার্বত্য চট্টগ্রামের সচেতন আদিবাসী ছাত্র, যুব ও নাগরিক সমাজের সাথে যথাযথ আলোচনা ও সম্মতি সাপেক্ষে নিম্নলিখিত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা:
(ক) পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড-এর চেয়ারম্যান নিয়োগ করা;
(খ) ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্স-এর চেয়ারপার্সন নিয়োগ করা;
(গ) অন্তবর্তীকালীন তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ করা;
২. নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন, ১৯০০’ সম্পর্কিত সিভিল রিভিউ পিটিশন নম্বর ৫৪/২০১৮ এবং ১৯২/২০১৮ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ১৯৯৭, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন, ১৯৯৮ এবং পার্বত্য জেলা পরিষদ (সংশোধনী) আইন, ১৯৯৮ সম্পর্কিত সিভিল আপিল নম্বর ৯৫/২০১১-মামলাসমূহের শুনানি স্থগিত রাখার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৩. বিধি প্রণয়নসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ সাপেক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনকে কার্যকর করা;
৪. কার্যপরিধি পরিবর্তনের মাধ্যমে ‘ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্স’ কর্তৃক স্বীকৃত ও অস্বীকৃত ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণ পাহাড়ি উদ্বাস্তুগণের অন্তবর্তীকালীন ও চূড়ান্ত পুনর্বাসন নিশ্চিত করা;
৫. আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও নীতির আলোকে সাংবিধানিকভাবে দেশের আদিবাসীদের পরিচয় ও তাঁদের অধিকারের স্বীকৃতি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে দেশের আদিবাসী সমাজ এবং সরকারের উপদেষ্টামন্ডলী ও অন্যান্য নীতিনির্ধারণী মহলের মধ্যে সংলাপের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
+ There are no comments
Add yours