হিল ভয়েস, ২৭ আগস্ট ২০২৪, খাগড়াছড়ি: পার্বত্য চুক্তি বিরোধী ইউপিডিএফ কর্তৃক খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার ৫নং বাবুছড়া ইউনিয়নের বিশেষত ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত প্রায় ২২টি গ্রামের জনগণকে বাজারে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি বা কেনাবেচায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দেওয়ার কারণে এলাকাবাসী ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে, জোর করে, হুমকি দিয়ে তারাই আবার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদাও আদায় করছে।
গত প্রায় এক মাসের অধিক সময় ধরে ইউপিডিএফ সদস্যরা গ্রামবাসীদের উপর এই অন্যায় ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে গ্রামবাসীর সূত্রে জানা গেছে। গতকাল (২৬ আগস্ট) গ্রামবাসীদের কাছ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহে ইউপিডিএফের বাধা দানের কারণে স্থানীয় দোকানগুলোও বন্ধ হয়েছে। এতে দোকান ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এবং গ্রামবাসী নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অভাবের কারণে চরমভাবে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে চাল, ভোজ্য তেল, সিদোল এবং বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী বাজার থেকে আনতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। অনেকে খেয়ে না খেয়ে, ন্যূনতম খাদ্যসামগ্রীর অভাবে দুর্বিষহ জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন।
যেসব জুম্ম গ্রামবাসী এই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন, সেই গ্রামগুলো হল- শিলছড়ি, হগেয়েতুলি, রিষিমোনছড়া, লাম্বাছড়া, দজরপাড়া, দেওয়ানপাড়া, বাঘেরহাট, থলছড়া, উগলছড়ি, শামুকছড়ি, নাড়াইছড়ি, দুলুছড়ি, মোজোলেংছড়া, দ্বিরেনপাড়া, নাগপুদিমাছড়া, শ্যামচরণকার্বারী পাড়া, দজরপাড়া, উল্টাচড়ি মুখ, পাকুজ্যাছড়ি, বটতলা, ধনপাতা মুখ, ভিচ্যাছড়া ইত্যাদি গ্রাম।
এলাকার এক বয়োজ্যেষ্ঠ মুরুব্বি জানান, অনেক অনুনয়-বিনয় করে কেবল মাত্র ১০ কেজি চাউল ও অল্প পরিমাণ পরিমাণ বাজার আনার অনুমতি পেয়েছি। কিন্তু এর পরে কী হবে ভগবানই জানেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী জানান, এলাকার লোকজন বাজার আনতে গেলে ইউপিডিএফ কর্মীরা জোরপূর্বক বাজার কেড়ে নিয়ে বিভিন্ন অশ্লীল কথাবার্তা বলে এবং হুমকি প্রদান করে।
ভুক্তভোগী এক নারী জানান, সম্প্রতি তিনি বাজারে যেতে বাধ্য হলে ইউপিডিএফ কর্মীরা তার সেই বাজারের প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলো কেড়ে নেয়। তাকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, দ্বিতীয়বার বাজার আনতে গেলে প্যান্ট এবং জামা-কাপড় খুলে আসতে হবে।
জানা গেছে, ইউপিডিএফের সদস্যরা প্রশাসনের নাকের ডগায় বিভিন্না স্থানে চেক পোস্ট ও চাঁদা সংগ্রহের পোস্ট বসিয়ে গ্রামবাসীদের উপর চাপানো তাদের নিষেধাজ্ঞার কাজ নিয়ন্ত্রণ করছে। আর এইসব কর্মকান্ডে নেতৃত্ব দিচ্ছে ইউপিডিএফের সশস্ত্র পরিচালক নয়ন চাকমা এবং চাঁদা সংগ্রাহক ও চীফ কালেক্টর রুবেল, পোস্ট কালেক্টর কমল, দেবময় ওরফে ভেঙামো, জারুলছড়ি কানা, চগুলো সহ আরো কয়েকজন।
+ There are no comments
Add yours