হিল ভয়েস, ৩১ আগস্ট ২০২৪, বিশেষ প্রতিবেদক: সম্প্রতি স্থানীয় বিক্ষুব্ধ বাঙালি-পাহাড়ি জনতার প্রতিরোধের মুখে ও তাড়া খেয়ে রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়া মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের আবার বাঙ্গালহালিয়ায় নিয়ে আসতে সেনাবাহিনী ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া সপ্তাহখানেক আগে মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের কর্তৃক বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আদুমং মারমা (৫০) অপহরণ ঘটনার সাথে সেনাবাহিনী ও ডিজিএফআইয়ের যোগসাজস রয়েছে বলেও জানা গেছে। একদিকে চাঁদার অংশ ভাগ পেতে এবং অপরদিকে বাঙ্গালহালিয়ায় মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের নিয়ে আসার জন্য সেনাবাহিনী ও ডিজিএফআই এই ঘটনায় যুক্ত রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত ২০ আগস্ট, সকাল আনুমানিক ৮:৩০ টার দিকে মগ পার্টির চিংসু মারমা (৪০) ও মন্ডি মারমা (৩৫) নামে দুই চাঁদা সংগ্রাহক বাঙ্গালহালিয়া বাজারে গিয়ে আজিজ সওদাগর (৬৫) নামে এক দোকানদারের সাথে চাঁদা সংগ্রহ নিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মগ পার্টির সদস্যরা আজিজ সওদাগরকে বেদম মারধর করে। এর কিছুক্ষণ পরেই বাঙ্গালহালিয়া বাজারের স্থানীয় বাঙালি-পাহাড়ি বিক্ষুব্ধ জনতা মগ পার্টির উক্ত দুই সদস্যকে গণপিটুনি দিয়ে গুরুতর আহত করে এবং বাজার সংলগ্ন মগ পার্টির আস্তানায় অগ্নিসংযোগ করে। এতে মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা বাঙ্গালহালিয়া বাজার এলাকা ত্যাগ করে তাদের মূল আস্তানা গাইন্দ্যা ইউনিয়নের পোয়াইতু পাড়ার দিকে চলে যেতে বাধ্য হয়।
এরপর গত ২৫ আগস্ট, বিকাল আনুমানিক ৩ টার দিকে মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের কর্তৃক চেয়ারম্যান আদুমং মারমা অপহরণের শিকার হন। জানা গেছে, ঐদিন চেয়ারম্যান আদুমং মারমা রাজস্থলীতে তার ভাতা তুলতে যান। ভাতা তোলার পরপরই মগ পার্টির থার্ড-ইন-কমান্ড বলে পরিচিত সাইলুমং মারমা ফোন দিয়ে চেয়ারম্যান আদুমং মারমাকে যতদ্রুত সম্ভব পোয়াইতু পাড়ায় অবস্থিত তাদের আস্তানায় একা গিয়ে দেখা করতে বলে। সেখানে যাওয়ার আগে চেয়ারম্যান তার সহকারী ক্যশৈহ্লা মারমা (অবঃ পুলিশ সদস্য)-এর হাতে তার ভাতাগুলো দিয়ে পোয়াইতু পাড়ার দিকে যান। সেদিন থেকে চেয়ারম্যান আদুমং মারমা এখনো বাড়িতে ফেরেননি। তার ফোনও বন্ধ রয়েছে। মগ পার্টির নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এদিকে, গত ২৯ আগস্ট, অপহৃত চেয়ারম্যান এর সহকারী ক্যাশৈহ্লা মারমা চেয়ারম্যানের ভাতাগুলো চেয়ারম্যানের স্ত্রীর হাতে দেন। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরেই সেই ভাতাগুলো সেনাবাহিনীর বাঙ্গালহালিয়া ক্যাম্পের সাফি চেয়ারম্যানের স্ত্রীর কাছ থেকে নিয়ে যান।
গতকাল (৩০ আগস্ট) সকালে বাঙ্গালহালিয়া ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার সাফি বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের সকল নির্বাচিত মেম্বার ও সংরক্ষিত আসনের মেম্বারদের ক্যাম্পে ডাকেন। এসময় ক্যাম্প কমান্ডার মেম্বারদেরকে চেয়ারম্যানের অপহরণ ঘটনায় জেএসএস-এর হাত আছে বলে প্রচার করার নির্দেশ দেন এবং জেএসএস-এর বিরুদ্ধে মিছিল-সমাবেশ করতে বলেন।
তবে ক্যাম্প কমান্ডারের উক্ত মতের পক্ষে শুধুমাত্র ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল মত দিলেও বাকি সমস্ত মেম্বারগণ দ্বিমত পোষণ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মুরুব্বি বলেন, সেনাবাহিনী অপহৃত চেয়ারম্যানকে চাপ প্রয়োগ করে একদিকে তার মাধ্যমে মগ পার্টিকে আবারো বাঙ্গালহালিয়াতে নিয়ে আসার এবং মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায়ের ষড়যন্ত্র করছে।
দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে, সেনাবাহিনী, সাবেক পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর, কোনো কোনো সময় আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি দীপংকর তালুকদারের মদদে ও আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এই মগ পার্টি খ্যাত তথাকথিত মারমা ন্যাশনালিস্ট পার্টি (এমএনপি) এর সন্ত্রাসীরা রাজস্থলী এলাকায় অবস্থান করে জনসংহতি সমিতি ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের খুন, অপহরণ সহ চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।আবারো মগ পার্টিকে বাঙ্গালহালিয়ায় নিয়ে আসতে সেনা ষড়যন্ত্র, চেয়ারম্যান অপহরণেও সেনা যোগসাজস
হিল ভয়েস, ৩১ আগস্ট ২০২৪, বিশেষ প্রতিবেদক: সম্প্রতি স্থানীয় বিক্ষুব্ধ বাঙালি-পাহাড়ি জনতার প্রতিরোধের মুখে ও তাড়া খেয়ে রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়া মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের আবার বাঙ্গালহালিয়ায় নিয়ে আসতে সেনাবাহিনী ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া সপ্তাহখানেক আগে মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের কর্তৃক বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আদুমং মারমা (৫০) অপহরণ ঘটনার সাথে সেনাবাহিনী ও ডিজিএফআইয়ের যোগসাজস রয়েছে বলেও জানা গেছে। একদিকে চাঁদার অংশ ভাগ পেতে এবং অপরদিকে বাঙ্গালহালিয়ায় মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের নিয়ে আসার জন্য সেনাবাহিনী ও ডিজিএফআই এই ঘটনায় যুক্ত রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত ২০ আগস্ট, সকাল আনুমানিক ৮:৩০ টার দিকে মগ পার্টির চিংসু মারমা (৪০) ও মন্ডি মারমা (৩৫) নামে দুই চাঁদা সংগ্রাহক বাঙ্গালহালিয়া বাজারে গিয়ে আজিজ সওদাগর (৬৫) নামে এক দোকানদারের সাথে চাঁদা সংগ্রহ নিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মগ পার্টির সদস্যরা আজিজ সওদাগরকে বেদম মারধর করে। এর কিছুক্ষণ পরেই বাঙ্গালহালিয়া বাজারের স্থানীয় বাঙালি-পাহাড়ি বিক্ষুব্ধ জনতা মগ পার্টির উক্ত দুই সদস্যকে গণপিটুনি দিয়ে গুরুতর আহত করে এবং বাজার সংলগ্ন মগ পার্টির আস্তানায় অগ্নিসংযোগ করে। এতে মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা বাঙ্গালহালিয়া বাজার এলাকা ত্যাগ করে তাদের মূল আস্তানা গাইন্দ্যা ইউনিয়নের পোয়াইতু পাড়ার দিকে চলে যেতে বাধ্য হয়।
এরপর গত ২৫ আগস্ট, বিকাল আনুমানিক ৩ টার দিকে মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের কর্তৃক চেয়ারম্যান আদুমং মারমা অপহরণের শিকার হন। জানা গেছে, ঐদিন চেয়ারম্যান আদুমং মারমা রাজস্থলীতে তার ভাতা তুলতে যান। ভাতা তোলার পরপরই মগ পার্টির থার্ড-ইন-কমান্ড বলে পরিচিত সাইলুমং মারমা ফোন দিয়ে চেয়ারম্যান আদুমং মারমাকে যতদ্রুত সম্ভব পোয়াইতু পাড়ায় অবস্থিত তাদের আস্তানায় একা গিয়ে দেখা করতে বলে। সেখানে যাওয়ার আগে চেয়ারম্যান তার সহকারী ক্যশৈহ্লা মারমা (অবঃ পুলিশ সদস্য)-এর হাতে তার ভাতাগুলো দিয়ে পোয়াইতু পাড়ার দিকে যান। সেদিন থেকে চেয়ারম্যান আদুমং মারমা এখনো বাড়িতে ফেরেননি। তার ফোনও বন্ধ রয়েছে। মগ পার্টির নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এদিকে, গত ২৯ আগস্ট, অপহৃত চেয়ারম্যান এর সহকারী ক্যাশৈহ্লা মারমা চেয়ারম্যানের ভাতাগুলো চেয়ারম্যানের স্ত্রীর হাতে দেন। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরেই সেই ভাতাগুলো সেনাবাহিনীর বাঙ্গালহালিয়া ক্যাম্পের সাফি চেয়ারম্যানের স্ত্রীর কাছ থেকে নিয়ে যান।
গতকাল (৩০ আগস্ট) সকালে বাঙ্গালহালিয়া ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার সাফি বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের সকল নির্বাচিত মেম্বার ও সংরক্ষিত আসনের মেম্বারদের ক্যাম্পে ডাকেন। এসময় ক্যাম্প কমান্ডার মেম্বারদেরকে চেয়ারম্যানের অপহরণ ঘটনায় জেএসএস-এর হাত আছে বলে প্রচার করার নির্দেশ দেন এবং জেএসএস-এর বিরুদ্ধে মিছিল-সমাবেশ করতে বলেন।
তবে ক্যাম্প কমান্ডারের উক্ত মতের পক্ষে শুধুমাত্র ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল মত দিলেও বাকি সমস্ত মেম্বারগণ দ্বিমত পোষণ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মুরুব্বি বলেন, সেনাবাহিনী অপহৃত চেয়ারম্যানকে চাপ প্রয়োগ করে একদিকে তার মাধ্যমে মগ পার্টিকে আবারো বাঙ্গালহালিয়াতে নিয়ে আসার এবং মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায়ের ষড়যন্ত্র করছে।
দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে, সেনাবাহিনী, সাবেক পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর, কোনো কোনো সময় আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি দীপংকর তালুকদারের মদদে ও আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এই মগ পার্টি খ্যাত তথাকথিত মারমা ন্যাশনালিস্ট পার্টি (এমএনপি) এর সন্ত্রাসীরা রাজস্থলী এলাকায় অবস্থান করে জনসংহতি সমিতি ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের খুন, অপহরণ সহ চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
+ There are no comments
Add yours