আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাও, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল কর: বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন

হিল ভয়েস, ৯ আগস্ট ২০২৪, ঢাকা: আজ (৯ আগস্ট) আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসে “আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাও; সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল কর”-এই দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক মেরাজ খান আদর কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় এই বিবৃতি দানের কথা জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আজ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। প্রতি বছর ৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালিত হলেও, বাংলাদেশে ২০০৪ থেকে পালিত হয়ে আসছে। মূলত, ২০০১ সালে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম গঠিত হবার পরে বেসরকারিভাবে বৃহৎভাবে আন্তর্জাতিক দিবসটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলা; চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা ও বগুড়া ইত্যাদি জেলাগুলিতে সাঁওতাল, শিং (গঞ্জু), ওঁরাও, মুন্ডারি, বেদিয়া মাহাতো, রাজোয়ার, কর্মকার, তেলী, তুরী, ভুইমালী, কোল, কড়া, রাজবংশী, মাল পাহাড়িয়া, মাহালী ইত্যাদি জাতিগোষ্ঠী বসবাস করছে। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবন) চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, মুরং বা ম্রো, খিয়াং, লুসাই, পাংখোয়া, বম, খুমী ও চাক জনগোষ্ঠী বসবাস করছে। বিশ্বের তাবৎ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি বাংলাদেশের ৩০ লক্ষাধিক আদিবাসীরা তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়, ভূমির অধিকার ও নাগরিক মর্যাদার স্বীকৃতি দাবীতে দিবসটি উদযাপন করে থাকেন।”

প্রেস বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয় “বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা এবং সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ এক যৌথ বিবৃতিতে দেশবাসীকে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসের শুভেচ্ছা জানান। সেই সাথে আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক পরিচয়, ভূমির অধিকার, নাগরিক মর্যাদার স্বীকৃতি সহ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের দাবি জানান।”

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দের বরাত দিয়ে বলা হয়, “হাজার বছর ধরে বসবাস করে আসা জনগোষ্ঠী শুধুমাত্র সংখ্যায় কম হওয়ার কারণে বিভিন্ন সময় তাদের সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় অবজ্ঞার শিকার হতে হয়েছে। ন্যূনতম নাগরিক অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত। আমরা দাবি জানাই আদিবাসীদের ভূমি অধিকার এবং নাগরিক অধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে। বিভিন্ন সময় নির্যাতন, নিপীড়ন, গুম, খুনের শিকার হতে হয়েছে, অথচ কোন বিচার হয়নি। অতীতের কোন সরকারই আদিবাসীদের উপরে নির্যাতন, নিপীড়ন এবং হামলার বিচার করতে ব্যর্থ। ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীদেরও রক্ত ঝরেছে। তারাও অংশগ্রহণ করেছে মহান মুক্তিযুদ্ধে। বাংলাদেশ যেমন একজন বাঙালির তেমনি এদেশ একজন আদিবাসীর। শুধুমাত্র সংখ্যায় কম বলে তাদের দেওয়া হচ্ছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তকমা, যা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। আদিবাসীদের তাদের যোগ্য সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে। আদিবাসীদের উপরে সকল নির্যাতন এবং হামলার বিচার করতে হবে। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।”

More From Author

+ There are no comments

Add yours