হিল ভয়েস, ২৪ জুলাই ২০২৪, রাঙ্গামাটি: কোটা সংস্কার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করে আদিবাসীদের জন্য ৫% কোটা পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)।
গত ২২ জুলাই ২০২৪ পিসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অন্বেষ চাকমা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই বিবৃতির কথা জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গত ২১ জুলাই ২০২৪ তারিখে আপিল বিভাগ ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে সাধারণ আসনে ৯৩%, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৫%, প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গ কোটায় ১% এবং আদিবাসী কোটায় ১% আসন বরাদ্দ করে চূড়ান্ত রায় প্রদান করেন। দেশে বসবাসরত ৫০ টির অধিক আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য মাত্র ১ শতাংশ কোটা বরাদ্দ রেখে আপিল বিভাগের রায় অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ।
দেশের সবচেয়ে দরিদ্রতম ও অনগ্রসর অংশ হলো আদিবাসীরা। একদিকে ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি ও জীবনধারা যেমন আদিবাসীদেরকে মূল জনগোষ্ঠী থেকে সার্বিকভাবে পিছিয়ে রাখতে বাধ্য করেছে অপরদিকে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন, শোষণ-নিপীড়ন আদিবাসীদের জনজীবনকে অস্তিত্বের হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে আদিবাসীরা দেশের মূল জনগোষ্ঠীর সাথে কোনভাবেই উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় ঠিকে থাকতে পারছে না। মাত্র কয়েকটি জনগোষ্ঠী ব্যতিত অধিকাংশ আদিবাসী জনগোষ্ঠী থেকে এখনও বিসিএসে প্রতিনিধিত্ব নেই এবং তাদেরকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় অন্তর্ভুক্তকরণের কোন নির্দেশনা আপিল বিভাগের রায়ে প্রতিফলিত হয়নি। তাই মাত্র ১ শতাংশ কোটা ৫০টির অধিক আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রের মূল স্রোতধারার সাথে অন্তর্ভুক্ত করার রাষ্ট্রীয় নীতি কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”
এতে আরও বলা হয়, “বাংলাদেশ বির্নিমাণে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আদিবাসীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত প্রয়োজন। এই প্রয়োজন মেটানোর জন্যই ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে আদিবাসীদের জন্য ন্যূনতম ৫% কোটা পুনর্বহালের জন্য পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ জোর দাবি জানাচ্ছে।”
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র জারি করায় এর পরবর্তীতে বিসিএসে পাহাড় এবং সমতলের আদিবাসীরা সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়। অথচ এর পূর্বে সরকারি চাকরিতে উক্ত গ্রেডে নিয়োগের ক্ষেত্রে আদিবাসীদের জন্য ৫% কোটা চালু ছিল।
+ There are no comments
Add yours