হিল ভয়েস, ১০ জুন ২০২৪, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক বিভিন্ন গ্রামের জুম্ম গ্রামবাসীদের ছবি ও পরিবারের তালিকা সেনা ক্যাম্পে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া সেনাবাহিনী গ্রামবাসীদেরকে বিনামূল্যে গাছের খুঁটি সেনা ক্যাম্প দিতেও বাধ্য করছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মে ২০২৪ সকাল ১০ টার দিকে ধুপশীল সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বরত ওয়ারেন্ট অফিসার জাভেদ ধুপশীল, শালবাগান, লতাপাহাড়, ধুপশীল মধ্য পাড়া গ্রামের হেডম্যান ও কার্বারিদের নিয়ে একটি সভা করেন। সভায় ওয়ারেন্ট অফিসার জাভেদ গ্রামের পরিবার প্রধানের নাম ও ছবি, পরিবারের সদস্যদের তালিকা অবিলম্বে ক্যাম্পে জমা দিতে উপস্থিত হেডম্যান ও কার্বারিদের নির্দেশ দেন।
এর পূর্বে, গত ২২ মে ২০২৪ তারিখও সকাল ৯ টায় তক্তানালা সেনা ক্যাম্পের সার্জেন্ট ফরিদ তক্তানালা গ্রামের হেডম্যান ও কার্বারিকে ডেকে গ্রামের প্রত্যেক পরিবারের পরিবার প্রধানের নাম, আইডি কার্ডের ফটোকপি ও ছবি ক্যাম্পে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। এছাড়া গ্রামের প্রত্যেক পরিবার থেকে বিনামূল্যে ১০টি করে গাছের খুঁটি ক্যাম্পে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেন সার্জেন্ট ফরিদ।
একইদিন আলিখ্যং সেনা ক্যাম্প ও তাংকোয়াইতাং সেনা ক্যাম্পের কর্তৃপক্ষও সংশ্লিষ্ট গ্রামের কার্বারিদের ডেকে দুই গ্রামের পরিবার প্রধানের তালিকা ও ছবি ক্যাম্পে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, সেনাবাহিনী কর্তৃক যেসব গ্রামের পরিবার প্রধানের নাম ও ছবি এবং পরিবারের তালিকা চাওয়া হয়েছে সেগুলি হল- ১নং বিলাইছড়ি ইউনিয়নের ধুপশীল পাড়া, ধুপশীল চাকমা পাড়া, মধ্যপাড়া; ৩নং ফারুয়া ইউনিয়নের আলিখ্যং নতুনপাড়া, রোয়াপাড়াছড়া, চাইন্দ্যা, উলুছড়ি, তক্তানালা উত্তর ও দক্ষিণ পাড়া, ওরাছড়ি, গোয়াইনছড়ি, এগুজ্জ্যাছড়ি, তারাছড়ি, তাংকোয়াইতাং, গবছড়ি, চঙরাছড়ি, পানছড়ি, সারবোতলি, মন্দিরাছড়া এবং ৪নং বড়তলি ইউনিয়নের রায়মংছড়া।
ইতিমধ্যে কিছু গ্রাম থেকে পরিবারের উক্ত তথ্যাবলি সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে সেনাবাহিনীর এসব তথ্যাবলী সংগ্রহের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জুম্ম গ্রামবাসীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। গ্রামবাসীরা সেনাবাহিনীর এই কাজকে ‘হয়রানিমূলক ও ষড়যন্ত্রমূলক’ বলে মনে করছেন।