হিল ভয়েস, ৩০ জুন ২০২৪ বান্দরবান: অতি সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের যৌথবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বিরোধী অভিযানের নামে বান্দরবান জেলায় আদিবাসী এক বম গ্রামবাসী নিহত এবং লুসাই ও ম্রো সম্প্রদায়ের তিন ব্যক্তি আটক হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে ভুক্তভোগীরা কেএনএফের সদস্য দাবি করা হলেও, স্থানীয় সূত্রে তারা নিরীহ গ্রামবাসী বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুন ২০২৪ বান্দরবানের থানচি উপজেলার বাকলাইপাড়া সেনা ক্যাম্প হতে লেঃ কর্নেল সরদার জুলকার নাইন, পিএসসি (অধিনায়ক, ১৬ইবি) এর নেতৃত্বে ৬৫ জনের যৌথবাহিনীর একটি দল সিমত্লাংপি পাড়া গ্রামে সামরিক অভিযান চালায়। এদিন যৌথবাহিনীর দলটি ভোর রাতে গ্রামটি ঘিরে ফেলে এক গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে এবং অপর এক গ্রামবাসীকে আটক করে।
গুলিতে নিহত ব্যক্তির নাম লালঅপ লিয়ান বম এবং তার বাড়ি থাংদুয়াই পাড়া বলে জানা গেছে। আটকের শিকার ব্যক্তির নাম ডানা ম্রো (২৪) বলে জানা গেছে।
ঘটনার পর যৌথবাহিনী ও পুলিশ কর্তৃক নিহত ও আটককৃত ব্যক্তি ‘কেএনএফের সদস্য’ বলে প্রচার করা হলেও স্থানীয় সূত্রে তারা সাধারণ গ্রামবাসী বলে জানা গেছে।
অপরদিকে, গত ২৭ জুন ২০২৪ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের একটি দল বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের বেথানি পাড়া থেকে আদিবাসী লুসাই সম্প্রদায়ের আরো দুই গ্রামবাসীকে আটক করে। কিন্তু যৌথবাহিনী কর্তৃক ২৮ জুন আটকের খবর প্রচার করা হয়।
আটককৃত দুই ব্যক্তি হলেন- লাল বেই সেই লুসাই (৪২), পীং-মৃত বিয়াত লিয়ান লুসাই ও ডাললিয়ান লুসাই, পীং-বাননুন লুসাই। তাদের উভয়ের বাড়ি বান্দরবান সদর উপজেলা ফারুকপাড়া গ্রামে বলে জানা গেছে।
আটকের পর গত ২৯ জুন, লাল বেই সেই লুসাই-কে বান্দরবান চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে, সেদিনই লাল বেই সেই লুসাই-কে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
অপরদিকে, আটককৃত ডাললিয়ান লুসাই-কে বান্দরবার সদরের সেনবাহিনী এখনো তাদের হেফাজতে রেখেছে বলে জানা গেছে।
আটককৃত উভয় ব্যক্তিই সাধারণ গ্রামবাসী বলে জানায় স্থানীয় একাধিক সূত্র। তবে, লাল বেই সেই লুসাই আত্মীয় সম্পর্কে কেএনএফ-এর স্বঘোষিত মেজর লালসাংরেম বম ভগ্নীপতি হন বলে জানা গেছে।