হিল ভয়েস, ২ জুন ২০২৪, বান্দরবান: বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলার ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ২৮৯নং চৈক্ষ্যং মৌজার সোনাইছড়ি এলাকায় পাহাড়ি ভূমিতে সরকারের বনবিভাগ কর্তৃক সামাজিক বনায়নের উদ্যোগে আপত্তি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার পাহাড়ি-বাঙালি জনগণ।
গত ২২ মে ২০২৪ এলাকার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পাহাড়ি ও বাঙালি জনগণের গণস্বাক্ষর সম্বলিত উপরোক্ত বিষয়ে লিখিত এক আবেদনপত্র আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে প্রদান করা হয়েছে।
আবেদনে বনবিভাগ যে জায়গায় সামাজিক বনায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলি সোনাইছড়ি এলাকাধীন থনওয়াই পাড়া, পাদুই পাড়া, কাইরী পাড়া সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন পাড়ার স্থায়ী লোকজনের সুদীর্ঘ বছরের আবাদী ও ভোগদখলীয় জুম চাষের পাহাড়ি জায়গা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীগণ আলীকদম উপজেলাধীন ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ২৮৯নং চৈক্ষ্যং মৌজাস্থ সোনাইছড়ি এলাকাধীন থনওয়াই পাড়া, পাদুই পাড়া, কাইরী পাড়া সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল শান্তিপ্রিয় ম্রো সম্প্রদায়ের লোকজন হই। এইমর্মে মহোদয়ের সদয় অবগতি ও প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানাইতেছি যে, আমাদের ৩ পাড়ায় প্রায় ৫০০ (পাঁচশত) পরিবারের লোকজন বাপ-দাদার আমল থেকে সোনাইছড়ি এলাকাধীন পাহাড়ি জায়গায় জুম চাষ করিয়া পারিবারিক জীবিকা নির্বাহ করিয়া আসিতেছি। বর্তমান সময়ে বনবিভাগ কর্তৃক আমাদের আবাদীয় ও ভোগদখলীয় উক্ত পাহাড়ি জায়গা বেদখল করিয়া সামাজিক বনায়ন করার পাঁয়তারা করিতেছে। উক্ত পাহাড়ি জায়গা ছাড়া আমাদের আর কোনো জায়গা জমি নেই। আমাদের জুমচাষের একমাত্র পাহাড়ি উক্ত জায়গা হাতছাড়া হয়েে গেলে পথে বসা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না।’
বর্তমানে এ বিষয়ে স্থানীয় জনগণ চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে বলে জানা গেছে।
আবেদনপত্রে এলাকার জনগণের প্রতি সদয় হয়ে বনবিভাগ যাতে উক্ত জায়গা দখল করে সামাজিক বনায়ন করতে না পারে সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে।
পাদুই ম্রো কার্বারি, মেনলেং ম্রো, অভিনগর ত্রিপুরা (ভারপ্রাপ্ত কার্বারি), যাকোরাম ত্রিপুরা (কার্বারি), পুবারাং ত্রিপুরা (কার্বারি), কফিল উদ্দিন, অংসুইপ্রু কার্বারি, মাহবুল আলম মেম্বার সহ প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি আবেদনপত্রে স্বাক্ষর প্রদান করেন।
বান্দরবান পার্বত্য আসনের সংসদ সদস্য, বান্দরবান জেলা প্রশাসক, আলীকদম সেনা জোনের কম্যান্ডার, লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বরাবরেও আবেদনপত্রের অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে।