হিল ভয়েস, ৫ জুন ২০২৪, বিশেষ প্রতিবেদন: পাহাড় ও সমতলে বসবাসরত আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কলম যোদ্ধা, বুদ্ধিজীবী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. ডালেম চন্দ্র বর্মনের মৃত্যুতে বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনসমূহের পক্ষ থেকে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়েছে।
আজ ৫ জুন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অন্বেষ চাকমা স্বাক্ষরিত এক শোক বার্তায় বলা হয়, অধ্যাপক ডালেম চন্দ্র বর্মন আজীবন আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিবেদিত ছিলেন। আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অধ্যাপক ডালেম চন্দ্র বর্মনের সংগ্রামী ভূমিকা আদিবাসী জনতা আজীবন স্মরণে রাখবে। তাঁর সৃষ্টিকর্ম আদিবাসী ছাত্র-যুব সমাজের মননে সংগ্রামী দিশা জন্মাবে।
এদিকে, অধ্যাপকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম। সংগঠনটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা স্বাক্ষরিত শোক বার্তায় বলা হয়, “আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ও আন্দোলনে ড. ডালেম চন্দ্র বর্মন ছিলেন অবিচল ও নিবেদিতপ্রাণ। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সহমর্মিতা ও সহযোগিতা দিয়ে গেছেন। আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে তাঁর মতো শিক্ষাবিদের শূন্যতা আমরা প্রতিনিয়ত অনুভব করব।”
এক শোক বার্তায় কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা বলেন, তিনি আদিবাসীদের অধিকার আন্দোলনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং কাপেং ফাউন্ডেশনের আদিবাসীদের মানবাধিকার রিপোর্টসহ বিভিন্ন প্রকাশনার সম্পাদনা ও গবেষণার সাথে একনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে কাপেং ফাউন্ডেশন গভীর শোক, বিনম্র শ্রদ্ধা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে।
উল্লেখ্য, আজ বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনি:শ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
স্বজনেরা জানান, অধ্যাপক ডালেম চন্দ্র বর্মণ কয়েক বছর ধরে পারকিনসনস রোগে ভুগছিলেন। এরপর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অকার্যকর হতে শুরু করে।
অধ্যাপক ডালেম চন্দ্র বর্মণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরে যাওয়ার পর বেসরকারি আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত এই শিক্ষকের অনেক গবেষণা প্রবন্ধ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
এছাড়াও শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক, বর্মন যুব পরিষদসহ বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনসমূহ।