হিল ভয়েস, ১ মে ২০২৪, বিশেষ প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদ ভবনে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির ৯ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত ৩০ এপ্রিল ২০২৪ সকাল ১১:০০ ঘটিকা থেকে দুপুর ১:১৫ ঘটিকা পর্যন্ত কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ এমপি-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় কমিটির সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা এবং ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পুনর্বাসন সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান সুদত্ত চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম কুমার চাকমা। এছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: খলিলুর রহমান এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম, যুগ্ম সচিব ও উপ-সচিব প্রমুখ কর্মকর্তাবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিগত ৮ম সভার গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বিধিমালা প্রণয়ন এবং ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিষয়টি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তর করা, পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট বিষয় হস্তান্তর সংক্রান্ত কমিটি গঠন, প্রত্যাহৃত সেনা ক্যাম্পের জায়গায় এপিবিএন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, জাতিসংঘের পার্মানেন্ট ফোরামে চুক্তি বাস্তবায়ন বিষয়ে বক্তব্য, বান্দরবানে কেএনএফের তৎপরতা, টাস্কফোর্সের গাড়ি ও জনবল বরাদ্দ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
ভূমি কমিশনের বিধিমালা প্রণয়নের বিষয়ে তাগাদা দেয়া হলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: খলিলুর রহমান জানান, অরিচেই ভূমি কমিশনের বিধিমালা প্রণয়ন করা হবে। এসময় জনসংহতি সমিতির সভাপতি তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট ‘ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা’ বিষয়টিও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে হস্তান্তরের কথা তুলে ধরেন। উক্ত ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিষয়টিও অতিদ্রুত তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান ভূমি সচিব।
চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির ৮ম সভায় তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে হন্তান্তরিত বিভাগ ও দপ্তর হস্তান্তর সম্পর্কে আলোচনা করে সমস্যা ও এ সম্পর্কে উপায় বের করার জন্য জনসংহতি সমিতির সভাপতিকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু পার্বত্য মন্ত্রণালয় সেই কমিটি গঠন না করে মন্ত্রণালয়ের সচিবকে প্রধান করে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়। উক্ত কমিটি বাতিল করে চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির ৮ম সভায় পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে এবং সদস্য হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের তিন চেয়ারম্যান এবং আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম কুমার চাকমার সমন্বয়ে উক্ত কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।
সভায় পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় জনবল সৃজন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের শূন্যপদসমূহে পার্বত্য অঞ্চলের স্থায়ী অধিবাসীদের প্রেষণে পদায়ন, টাস্ক ফোর্সের প্রয়োজনীয় গাড়ি ও জনবল সৃজনের কাজ ত্বরাণ্বিতকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার অভিযানে যাতে নিরীহ কেউ হয়রানির শিকার না হন সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিতকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
উল্লেখ্য যে, গত ২০ আগষ্ট ২০২৩ জাতীয় সংসদ ভবনে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির ৮ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভার ৮ মাস পরে কমিটির ৯ম সভা অনুষ্ঠিত হলো।