হিল ভয়েস, ৭ মে ২০২৪, বিশেষ প্রতিবেদক: জুরাছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জুরাছড়ির অন্তর্গত বিভিন্ন ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমার পক্ষে প্রচারণায় নেমেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, প্রতিদ্বন্দ্বী অপর দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রচার কাজে নিয়োজিত কর্মীদের ধর-পাকড়, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের এবং সাধারণ ভোটারদের হুমকি দিয়ে চলেছে সেনা সদস্যরা। এতে করে এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট হতে বসেছে।
এলাকায় স্থানীয় এক মুরুব্বী বলেছেন, সেনাবাহিনী ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা পেয়ে তার পক্ষে এধরনের নির্বাচনী আচরণ বিধি পরিপন্থী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
যেমন আজ ৭ মে ২০২৪ রাত আনুমানিক ২:৩০ ঘটিকার সময়ে জুরাছড়ির বনযোগীছড়া বাজারের পাশে জ্ঞান জ্যোতি চাকমার বাড়ি ঘেরাও করে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে টিভি, মোবাইল ফোন, আলমারি, ওয়ারড্রব সহ জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়। জ্ঞান জ্যোতি চাকমা সেসময় বাড়িতে ছিলেন না। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুরেশ কুমার চাকমাকে ভোট না দিতে জ্ঞানজ্যোতি চাকমার পরিবারের লোকদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়। এই মর্মে হুমকি দেয়া হয় যে, কালকে যদি বাড়ি থেকে জ্ঞান জ্যোতি চাকমা বের হয়, তাহলে তাকে মেরে ফেলা হবে।
গত ৫ মে ২০২৪ দুপুর ১:০০টা থেকে ২:০০টা সময়ে বনযোগীছড়া জোনের অধীন শালবাগান ক্যাম্পের সুবদার মাসুদ-এর নেতৃত্বে ২৫/৩০ জনের একটি সেনাদল জুরাছড়ি সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের থাচি পাড়ায় গিয়ে কয়েকটি বাড়ি চারিদিক থেকে ঘিরে রেখে ভিতরে থাকা লোকজনদেরকে আনারস মার্কায় (জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমার প্রতীক) ভোট দিতে নির্দেশ দেন। সেই সাথে সুবেদার মাসুদ হুমকি দেন যে, “জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা যদি ভোট না পান, তাহলে আল্লাহর কসম কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।”
এর আগে গত ৬ মে তারিখে সুবেদার মাসুদ সকাল ৭:০০ ঘটিকায় আমতলা গ্রামে কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিকে ডেকেও একই ধরনের হুমকি প্রদান করেন।
অন্যদিকে গত ৫ মে ২০২৪ বনযোগীছড়া সেনা জোনের নিয়ন্ত্রণাধীন যক্ষা বাজার সেনা ক্যাম্পের সেনা সদস্য কর্তৃক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুরেশ কুমার চাকমার পক্ষে প্রচারণা কাজে নিয়োজিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) স্থানীয় তিনজন ছাত্রকে আটক করে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় জড়িত করে জুরাছড়ি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। মামলায় উক্ত ৩ জুম্ম ছাত্রনেতা ছাড়াও আরো ১৩ জন জুম্ম গ্রামবাসী এবং অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনকে জড়িত করা হয়েছে।