মঙ্গল কুমার চাকমা
জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক পার্মানেন্ট ফোরামের ২৩তম অধিবেশন শুরু হয়েছে গত ১৫ এপ্রিল থেকে। চলবে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত। দেশের আদিবাসী প্রতিনিধিদলের মতো এবছরও বাংলাদেশ সরকারি প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। সরকারি প্রতিনিধিদলের পক্ষে গত ১৯ এপ্রিল পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মশিউর রহমান পার্মানেন্ট ফোরামে বক্তব্য দিয়েছেন। তার বক্তব্যে নতুন কিছু ছিল না। গতবছরের মতো পার্বত্য চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৬৫ ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে বলে চর্বিত চর্বন করেছেন তিনি। পূর্বের বছরগুলোর মতো আবার ভূমি কমিশনের বিধিমালা অচিরেই প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বস্তুত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির দুই-তৃতীয়াংশ ধারা, বিশেষ করে চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহ, অবাস্তবায়িত থাকলেও দেশে-বিদেশে জনমতকে বিভ্রান্ত করার জন্য এবং চুক্তি বাস্তবায়নের দায়বদ্ধতা থেকে রেহাই পাওয়ার হীনউদ্দেশ্যেই এভাবে চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৬৫টি বাস্তবায়িত হয়েছে বলে সরকার পক্ষ ক্রমাগত অসত্য বক্তব্য প্রচার করে আসছে।
সরকারি তথ্যানুসারে চুক্তির ‘ক’ খন্ডের সব ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে। তাই যদি হয় তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, ১নং ধারার পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলের মর্যাদা সংরক্ষণে কেন আইনী ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ দেয়া হয়নি? উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলের মর্যাদা ক্ষুন্ন করার জন্য কেনই বা প্রতিনিয়ত পার্বত্য চট্টগ্রামে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ঘটছে? কেনই বা পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা নন এমন ব্যক্তিদেরকে স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট দেয়া হচ্ছে এবং সেই সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে? শুধু তাই নয়, তিন পার্বত্য জেলার ভোটার তালিকায়ও তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ‘ক’ খন্ডের ৩নং ধারা অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটি গঠিত হয়েছে সত্য, কিন্তু এই কমিটির নেই নিজস্ব কোন কার্যালয়, জনবল ও তহবিল। উপরন্তু চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির সভায় গৃহীত কোন সিদ্ধান্তই বাস্তবায়িত হয়নি। যেমন পার্বত্য চুক্তি লঙ্ঘন করে ডেপুটি কমিশনারের উপর ন্যস্ত পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দার সনদপত্র প্রদানের এখতিয়ার বাতিল করার জন্য ২০১০ সালে এই কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও তা কার্যকর করা হয়নি।
এছাড়া চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির একাধিক সভায় নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট ‘পুলিশ (স্থানীয়)’ ও ‘আইন-শৃঙ্খলা সংরক্ষণ ও উন্নয়ন’ বিষয় হস্তান্তর করা ও পার্বত্য জেলা পুলিশ বাহিনী গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
‘ক’ খন্ডের সবক’টি ধারা যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে কেন ২নং ধারা মোতাবেক চুক্তির উক্ত বিধান কার্যকর করার জন্য ১৮৬১ সালের পুলিশ এ্যাক্ট, পুলিশ রেগুলেশন, ১৯২৭ সালের বন আইন ও ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশনসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রযোজ্য অন্যান্য আইন (আইন, বিধিমালা, আদেশ, পরিপত্র, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মবন্টন) সংশোধন করা হয়নি?
‘খ’ খন্ডের ৩৫টি ধারার মধ্যে ৩২টি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে বলে সরকার দাবি করে থাকে। তাই যদি হয়, তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ শাসনব্যবস্থার অধীনে প্রতিষ্ঠিত তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট কেন আইন-শৃঙ্খলা, পুলিশ, ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, বন ও পরিবেশ, পর্যটন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ইত্যাদি হস্তান্তর করা হয়নি কেন?
উপরন্তু ‘খ’ খন্ডের ৯নং ধারা অনুসারে বিগত ২৬ বছরেও এখনো পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকা প্রণীত হয়নি এবং তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়নি। সরকারি প্রতিনিধিদলের কাছে জানতে চাই, কেনই বা ২৬ বছরেও এখনো পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন বিধিমালা ও ভোটার তালিকা বিধিমালা প্রণীত হয়নি?
আঞ্চলিক পরিষদ সংক্রান্ত ‘গ’ খন্ডের ১৪টি ধারার সবক’টি বাস্তবায়িত হয়েছে মর্মে সরকার পক্ষ দাবি করে থাকে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ৯(গ) নং ধারা অনুসারে কেন তিন পার্বত্য জেলার সাধারণ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা ও উন্নয়নের ব্যাপারে আঞ্চলিক পরিষদের তত্ত্বাবধান ও সমন্বয় সাধন করার ক্ষমতা ও দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়নি?
বলাবাহুল্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সমন্বয় সাধন ও তত্ত্বাবধানের এখতিয়ারকে পাশ কাটিয়ে জেলার ডিসি ও এসপিরা একতরফাভাবে জেলার সাধারণ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলার ক্ষমতা প্রয়োগ করে চলেছেন। অপরদিকে আঞ্চলিক পরিষদকে পাশ কাটিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ একতরফাভাবে তাদের উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে।
অথচ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে আঞ্চলিক পরিষদের সাথে আলোচনা করে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে পার্বত্য সচিব পার্মানেন্ট ফোরামে অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। বলাবাহুল্য, পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়ন কার্যক্রম থেকে আঞ্চলিক পরিষদকে এযাবৎ বরাবরই দূরে রাখা হয়েছে। আঞ্চলিক পরিষদকে পাশ কাটিয়ে, এমনকি তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে অন্ধকারে রেখে, জুম্ম জনগণের বাগান-বাগিচা ও ঘরবাড়ি ধ্বংস, জুম্মদের গ্রাম উচ্ছেদ করে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের কোনরূপ ক্ষতিপূরণ না দিয়ে সরকার একতরফাভাবে সীমান্ত সড়ক ও বিভিন্ন সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে চলেছে।
অন্যদিকে ১৩নং ধারায় সন্নিবেশিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে আইন প্রণয়ন করতে গেলে সরকার কর্তৃক আঞ্চলিক পরিষদের সাথে আলোচনাক্রমে ও ইহার পরামর্শক্রমে আইন প্রণয়ন করার বিধান থাকা সত্ত্বেও এই ধারা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না। বস্তুত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আইন প্রণয়নে সরকার আঞ্চলিক পরিষদের পরামর্শ গ্রহণ করছে না বা পরামর্শ নেয়া হলেও মতামত উপেক্ষা করা হচ্ছে। যেমন- পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন ২০১৪, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন ২০১৪ প্রণয়নের সময় আঞ্চলিক পরিষদের পরামর্শ/মতামত উপেক্ষা করা হয়।
আরো উল্লেখ্য যে, চুক্তির ‘ঘ’ খন্ডের ১৯টি ধারার মধ্যে ১৫টি সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত, ২টি আংশিক বাস্তবায়িত এবং ২টি বাস্তবায়ন চলমান বলে দাবি করা হয়েছে। তাই যদি হতো, তাহলে-
প্রথমত: ১নং ও ২নং ধারা মোতাবেক কেন এখনো ৮৩ হাজার আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পরিবারদের মধ্যে একটা পরিবারকেও পুনর্বাসন করা সম্ভব হয়নি? কেনই বা ভারত প্রত্যাগত ৯ হাজার শরণার্থী পরিবার ভূমি ফেরত পায়নি?
দ্বিতীয়ত: ৩নং ধারা মোতাবেক কেন ভূমিহীন জুম্মদের দুই একর করে ভূমি বন্দোবস্তী দেয়া হয়নি?
তৃতীয়ত: ৪, ৫ ও ৬নং ধারা মোতাবেক ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমশিন গঠিত হয়েছে সত্য, কিন্তু বিগত ২৬ বছরে একটাও ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়নি। অন্যদিকে বিগত ৭ বছর ধরে ভূমি কমিশনের বিধিমালা প্রণয়নের কাজ সরকার ঝুলিয়ে রেখেছে। ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়ায় আদিবাসী জুম্মদের জায়গা-জমি ক্রমাগত হারাতে বসেছে।
পার্মানেন্ট ফোরামে পার্বত্য সচিব তার বক্তৃতায় পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘ডিজিটাল ভূমি জরিপ ও ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ’ নেয়া হয়েছে মর্মে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু পার্বত্য চুক্তিতে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির পরই তবে ভূমি জরিপ করা যাবে মর্মে বিধান রয়েছে। যেহেতু এখনো পার্বত্যাঞ্চলের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি হয়নি, তাই পার্বত্য সচিবের বক্তব্য অনুসারে যদি ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির আগে ভূমি জরিপের উদ্যোগ নেয়া হয়, তাহলে তা হবে পার্বত্য চুক্তির সরাসরি বরখেলাপ।
চতুর্থত: ৭নং ধারা মোতাবেক ৮৭৯ জন প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থীদের ব্যাংক ঋণ এখনো মওকুফ করা হয়নি। এমনকি জনসংহতি সমিতির ৪ জন সদস্যের ২২,০০০ টাকার ঋণও বিগত ২৬ বছরে মওকুফ করা হয়নি।
পঞ্চমত: ৮নং ধারা মোতাবেক এখনো অস্থানীয়দের নিকট প্রদত্ত ভূমি লীজ বাতিল করা হয়নি। পক্ষান্তরে সেনাবাহিনীর পর্যটন ও ক্যাম্প সম্প্রসারনের নামে এবং বহিরাগত লীজ কোম্পানী ও সেটেলারদের জবরদস্তিমূলক ভূমি বেদখলের ফলে জুম্মরা প্রতিনিয়ত স্বভূমি থেকে উচ্ছেদ হয়ে পড়ছে।
ষষ্ঠত: ২৪১টি অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে মর্মে পার্বত্য সচিব পার্মানেন্ট ফোরামে অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। জনসংহতি সমিতির মতে, ৫৪৫টি ক্যাম্পের মধ্যে চুক্তির অব্যাবহিত পর (১৯৯৭-২০০১) দুই দফায় (৩১টি ও ৩৫টি) ৬৬টি ক্যাম্প এবং ২০০৯ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর আরো ৩৫টি ক্যাম্প- সর্বমোট ১০১টি অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামে চার শতাধিক ক্যাম্প বলবত রয়েছে। বর্তমানে আরো নতুন নতুন ক্যাম্প স্থাপন করা হচ্ছে। অধিকন্তু ২০০১ সালে ‘অপারেশন উত্তরণ’ নামক সেনাশাসন জারি করা হয়েছে। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের বেসামরিকীকরণ এখনো সুদূর পরাহত।
অধিকন্তু সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পরিবর্তে পূর্ববর্তী স্বৈরশাসকদের মতো ব্যাপক সামরিকায়ন করে ফ্যাসীবাদী কায়দায় দমন-পীড়নের মাধ্যমে সমাধানের নীতি গ্রহণ করেছে, যা পার্বত্য সমস্যাকে উত্তরোত্তর জটিল করে তুলছে।
প্রতিবেশী মায়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ এবং সীমান্ত বরাবর সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর অনুপ্রবেশের কারণ দেখিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিকায়ণের বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন পার্বত্য সচিব। মূলত রাষ্ট্রীয় বাহিনী ‘ভাগ করো শাসন করো’ উপনিবেশিক নীতির ভিত্তিতে একের পর এক সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ সৃষ্টি করে চলেছে। বলাবাহুল্য, সেসব সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উপস্থিতি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অজুহাত দেখিয়ে পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিকে বৈধতা দেয়ার অপচেষ্টা হলো সরকারের পুরোনো কৌশল।
অলিখিত চুক্তি অনুসারে সেটেলারদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনক পুনর্বাসনের কথা ছিল। কথা ছিল সেটেলার রেশন প্রদান বন্ধ করার এবং গুচ্ছগ্রাম ভেঙ্গে দেয়ার। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। তাই চুক্তি-উত্তর সময়ে সেটেলার কর্তৃক প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সহায়তায় আদিবাসী জুম্মদের উপর ২০টির অধিক সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে।
আদিবাসীদের জন্য ‘নির্দিষ্ট পাবলিক সার্ভিসে’ ৫% কোটা রয়েছে বলে পার্মানেন্ট ফোরামে পার্বত্য সচিবের বক্তব্যও সর্বাংশে সঠিক নয়। বস্তুত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি পদে ৫% কোটা থাকলেও ২০১৮ সালে প্রথম শ্রেণি ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তার পদে কোটা বাতিল করা হয়েছে, যে কথা পার্বত্য সচিব উল্লেখ করেননি। অন্যদিকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি নিয়োগেও ৫% কোটা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয় না।
সরকারি চাকরিতে সারাদেশে আদিবাসীদের জন্য ৫% কোটা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে পার্বত্য চুক্তিতে রয়েছে বিশেষ বিধান। পার্বত্য চুক্তির ‘ঘ’ খন্ডের ১৮নং ধারায় পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল চাকরিতে জুম্মদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়োগ করার বিধান রয়েছে। কিন্তু সরকার এই বিধান প্রতিনিয়ত লঙ্ঘন করে চলেছে।
বস্তুত পার্বত্য সমস্যা একটি রাজনৈতিক ও জাতীয় সমস্যা। তাই এই রাজনৈতিক সমস্যাকে রাজনৈতিকভাবে সমাধানের কোন বিকল্প নেই। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল পার্বত্য সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান করা। ব্যাপক সামরিকায়ন করে, ৭২টি ধারার মধ্যে ৬৫টি বাস্তবায়িত মর্মে অসত্য তথ্য প্রচার করে, সর্বোপরি চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করে কখনোই পার্বত্য সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধান হতে পারে না, এই বাস্তবতাকে যত দ্রুত উপলব্ধি করবে সরকার পক্ষ, ততই দ্রুত পার্বত্য সমস্যার কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক সমাধান অর্জিত হবে বৈকি।