হিল ভয়েস, ৯ মার্চ ২০২৪, বান্দরবান: সেনাবাহিনী সৃষ্ট কেএনএফ সন্ত্রাসীদের কর্তৃক বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার বগালেক এলাকায় এক নিরীহ জুম্ম গ্রামবাসী মারধরের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ ৯ মার্চ ২০২৪ সকাল ৮টার দিকে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া সন্ত্রাসীরা দুই মারমা নারীকেও গালিগালাজ করে এবং ভয় দেখায় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
ভুক্তভোগী গ্রামবাসীর নাম সিংমংউ মারমা (৩৮), পীং-চিংক্যউ মারমা, গ্রাম-পলিকা পাড়া, রুমা সদর উপজেলা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মত আজ সকালেও সিংমংউ মারমা বাড়ি থেকে কিছু দূরে নিজেদের জুমে কাজ করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। সকাল ৮টার দিকে পথে তিনি হঠাৎ বগালেক রাস্তার সাত কিলো নামক জায়গার আগে পলিকা পাড়ার উপর পাহাড় ও ঝিরির মাঝখানে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ৭ জনের একটি সশস্ত্র দলের সাথে মুখোমুখি হন। এসময় তার সাথে জুমের ঘরের জন্য পাঁচ কেজি চাল ছিল।
দেখা হওয়ার সাথে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা সিংমংউ মারমাকে থামিয়ে ‘নাম কী, কোথায় যাও, চালগুলো কোথায় নিয়ে যাচ্ছো, চালগুলো কি শান্তিবাহিনীর জন্য নিয়ে যাচ্ছো?’ ইত্যাদি নানা প্রশ্ন করে এবং গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা সিংমংউ মারমাকে উপর্যুপরি থাপ্পর মারে এবং ব্যাপকভাবে মারধর করে। এছাড়া এসবিবিএল এর গুলি দিয়ে গালে, মুখে আঘাত করে।
এই সময় সিংমংউ মারমার সাথে গ্রামের আরো দুই মারমা মহিলা ছিল। কেএনএফ সন্ত্রাসীরা তাদেরকেও অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে এবং নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ ২০২৪ বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার নেতৃত্বে গঠিত ও সেনা-মদদপুষ্ট ‘শান্তি কমিটি’র সাথে বম পার্টি খ্যাত কেএনএফ সন্ত্রাসী দলের এক বৈঠক হয়। সেখানে কিছু বিষয়ে উভয়পক্ষের সমঝোতা হয় বলে জানা যায়।
কিন্তু শান্তি রক্ষার নামে বৈঠক হলেও বম পার্টি খ্যাত কেএনএফ সন্ত্রাসীরা তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং গ্রামে গ্রামে টহল ও গ্রামবাসীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করেনি বলে গ্রামবাসীর সূত্র জানায়। তাই সেই বৈঠক শেষ হতে না হতেই তারা গ্রামবাসীদের সাথে এমন আচরণ শুরু করেছে।
আরো উল্লেখ্য যে, গতবার ৫ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পরও কেএনএফ সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। এসময় একজন ইউপি চেয়ারম্যানকে অপহরণ সহ চাঁদাবাজি, জনগণকে মারধর ব্যাপকভাবে বুদ্ধি পায়। শান্তি কমিটি ও কেএনএফের মধ্যে অনুষ্ঠিত ৫ নভেম্বর ২০২৩ তারিখের সভায় ঐক্যমত্যের অন্যতম বিষয় ছিল, সংলাপ চলাকালীন কেএনএফ এবং সেনাবাহিনী পরস্পরের উপর কোন আক্রমণ করবে না।