হিল ভয়েস, ৮ মার্চ ২০২৪, চট্টগ্রাম: ‘নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করে নারীর অধিকার নিশ্চিত করুন, পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করুন’-এই শ্লোগানে আজ ৮ মার্চ চট্টগ্রামে বন্দর এলাকায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস- ২০২৪ উপলক্ষে আদিবাসী মহিলা ফোরামের উদ্যোগে বিকাল ৪ ঘটিকায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আদিবাসী মহিলা ফোরামের সভাপতি চিজিপুদি চাকমা এবং সভায় সঞ্চালনা করেন পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ চাকমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন চাকমা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি দিসান তঞ্চঙ্গ্যা।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের সহ-সভাপতি জিসন চাকমা, সাধারণ সম্পাদক জগৎ জ্যোতি চাকমা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সোনাবী চাকমা ও মাইল্যার মাথা ইউনিট কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অমর বিকাশ চাকমা।
সোনাবী চাকমা বলেন, এই দিনটি এক ঐতিহাসিক দিন, এই দিনটি আমাদের সকলের মূল্যায়ন করতে হবে। আমাদের জুম্ম নারীরা পৃথিবীর সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া নারী। আমাদের সকলেই এই বিষয়ে যথাযথভাবে সচেতন হতে হবে, প্রগতিশীল চিন্তার অধিকারী হতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের লড়াই সংগ্রাম আরো বেগবান করতে হবে।
বিশেষ অতিথি জগৎ জ্যোতি চাকমা বলেন, বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডে নারীরা পিছিয়ে রয়েছে, নানান ভাবে নির্যাতন ও হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন। আমাদের সমাজে দেখা যায় বিভিন্ন ধরনের ভেদাভেদ ও বৈষম্য। এই সমাজকে বদলাতে আমাদের নারী ও পুরুষ সকলে এক সাথে এগিয়ে যেতে হবে।
বিশেষ অতিথি জিসন খীসা বলেন, নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করতে সকলের প্রগতিশীল চিন্তার অধিকারী হতে হবে, আমাদের অধিকার স্বাধিকার সম্পর্কে আরো সচেতন হতে হবে, নারী সমাজকে এগিয়ে আনতে সকলকে সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
প্রধান অতিথি দিসান তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, এই দিনে ১৮৫৭ সালে আমেরিকা নিউইয়র্ক শহরে সুতাকলের নারী শ্রমিকরা শ্রম ও মুজুরি বৈষম্যের প্রতিবাদ করে। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ এই দিবসটি আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। তিনি বলেন, একজন নারী চাইলে অনেক কিছু করতে পারে। আমাদের জুম্ম সমাজে বৈষম্য কেন থাকবে? নারী ও পুরুষ উভয়ে মানুষ! তাহলে নারী পুরুষের ভেদাভেদ কেন? পৃথিবীর সৃষ্টি লগ্ন থেকে তো পুরুষ ও নারীর সমান ভূমিকা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মহান পার্টি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সুদীর্ঘ দুই যুগের অধিক সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষর করে। কিন্তু ২৬ বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনো চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি। এই চুক্তি বাস্তবায়নের সংগ্রামে নারী সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
আলোচনা সভার সভাপতি চিজিপুদি চাকমা তার সমাপনী বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।