হিল ভয়েস, ১৩ ফেব্রয়ারি ২০২৪, বান্দরবান: আজ ১৩ই ফেব্রুয়ারি ভোর সকালে রুমা সদর এলাকায় কেএনএফ সন্ত্রাসী কর্তৃক রেজুক মারমা পাড়াতে উহ্লাচিং মারমা নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে আহত করার প্রতিবাদে মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে দুপুর ১২.৩০ টার দিকে রুমা বাজারে একটি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে এই সময় রুমা সদর ইউপি চেয়ারম্যান শৈবং মারমা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রুমা আওয়ামীলীগের সদস্য অংশৈঅং মারমা, রুমা কলেজের অধ্যক্ষ শৈপ্রুসিং মারমা, ১নং পাইন্দু ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা, রুমা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নুম্রাউ মারমা, মানবাধিকার কর্মী উথোয়াইচিং মারমা এবং রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান উহ্লাচিং মারমা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, কেএনএফ নামক সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক প্রতিনিয়ত মারমা জনগোষ্ঠীর উপর আঘাত, হামলা, গুম, অপহরণ, হয়রানিসহ ইত্যাদি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, আমরা আজকের এই প্রতিবাদ মিছিল ও জনসমাবেশের মাধ্যমে প্রশাসনকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই যে, উহ্লাচিং মারমা যদি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মারা যায় তাহলে সেই লাশ নিয়ে রাজপথে গণমিছিল করা হবে। প্রশাসন যদি কেএনএফের এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কোনো সমাধান বের করতে না পারে, তাহলে মারমা জনগোষ্ঠী আর বসে থাকবে না। উত্তেজিত মারমা জনগোষ্ঠী যেকোনো মুহূর্তে কেএনএফ ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। তখন প্রশাসন আমাদের উপর দোষ চাপিয়ে দিতে পারবে না।
বক্তারা আরো বলেন, আগামীতে রুমা উপজেলার ভিতরে যদি বম জনগোষ্ঠী বাদে অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সাধারণ জনগণ ও যেকোনো সম্প্রদায়ের উপর কেএনএফ কতৃর্ক হয়রানি ও নাশকতার উদ্দেশ্যে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করা হয়ে থাকে, তাহলে তখন তাৎক্ষণিকভাবে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে।
উল্লেখ্য, আজ ভোর সকালে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ২৪ জনের একটি সশস্ত্র দল হঠাৎ ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে রেজুক মারমা পাড়ায় প্রবেশ করে। এসময় গ্রামবাসীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সন্ত্রাসীরা গ্রামে প্রবেশ করেই সম্মুখে উহ্লাচিং মারমাকে (৪০) দেখতে পায় এবং তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে উহ্লাচিং মারমার পেটে ও কোমরে গুলি লেগে তিনি গুরুতর আহত হন। বর্তমানে আহত উহ্লাচিং মারমাকে রুমা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া সন্ত্রাসীরা গ্রামের বাড়িগুলোতে প্রবেশ করে ব্যাপক তল্লাসি এবং জিনিসপত্র তছনছ করে। এসময় সন্ত্রাসীরা খ্যাউ মারমা নামে এক মারমা গ্রামবাসীর কাছ থেকে জোরপূর্বক ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে জানা গেছে।