হিল ভয়েস, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বান্দরবান: আজ (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টার দিকে সেনাসৃষ্ট বম পার্টি খ্যাত কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সন্ত্রাসীদের গুলিতে বান্দরবান জেলাধীন রুমা উপজেলার রুমা সদর ইউনিয়নের এক নিরীহ মারমা গ্রামবাসী গুরুতর আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সন্ত্রাসীরা আরও এক মারমা গ্রামবাসীর কাছ থেকে জোরপূর্বক ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আহত ব্যক্তির নাম উহ্লাচিং মারমা (৪০), পিতা-মংনাক মারমা, গ্রাম-রেজুক মারমা পাড়া, ৯নং ওয়ার্ড, রুমা সদর ইউনিয়ন। জানা গেছে, উহ্লাচিং মারমার নিজ বাড়ি বাসাদ্য পাড়া গ্রামে। তিনি ঘরজামাই হিসেবে রেজুক মারমা পাড়া গ্রামে বসবাস করেন।
জানা গেছে, আজ ভোর সকালে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ২৪ জনের একটি সশস্ত্র দল হঠাৎ ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে রেজুক মারমা পাড়ায় প্রবেশ করে। এসময় গ্রামবাসীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সন্ত্রাসীরা গ্রামে প্রবেশ করেই সম্মুখে উহ্লাচিং মারমাকে দেখতে পায় এবং তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে উহ্লাচিং মারমার পেটে ও কোমরে গুলি লেগে তিনি গুরুতর আহত হন।
বর্তমানে আহত উহ্লাচিং মারমাকে রুমা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া সন্ত্রাসীরা গ্রামের বাড়িগুলোতে প্রবেশ করে ব্যাপক তল্লাসি এবং জিনিসপত্র তছনছ করে। এসময় সন্ত্রাসীরা খ্যাউ মারমা নামে এক মারমা গ্রামবাসীর কাছ থেকে জোরপূর্বক ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, কেএনএফ সন্ত্রাসীরা বর্তমানে রুমার আর্থা পাড়ার পার্শ্ববর্তী টেবিল পাহাড় এবং রুমা সদরের পলিকা পাড়া ও ইডেন পাড়ার মধ্যবর্তী পাহাড়ে অবস্থান করছে। সেখান থেকেই তারা আশেপাশের এলাকায় তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে।
সেনাবাহিনী কেএনএফ সন্ত্রাসীদের অবস্থান ও তৎপরতা জেনেও না জানার ভান করে থাকে বলে কয়েকজন এলাকাবাসীর অভিযোগ।
উল্লেখ্য যে, মাত্র কয়েকদিন আগেও, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ কেএনএফ সন্ত্রাসীদের একটি দল রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের নিয়াংক্ষ্যং পাড়ার দুই মারমা গ্রামবাসীকে ব্যাপক মারধর করে। এছাড়া একই দিন একই ইউনিয়নের নিয়াংক্ষ্যং পাড়া ও পারুয়া পাড়ার ৬ মারমা গ্রামবাসীকে অপহরণ করে কয়েক ঘন্টা আটকে রাখে।
এর পূর্বে (১৪ জানুয়ারি) কেএনএফ সন্ত্রাসীরা পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমাকে (৫০ অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বান্দরবানের এক মুরুব্বি জানান, গত ৫ নভেম্বর ২০২৩ শান্তি কমিটির সাথে কেএনএফের বৈঠকের পর থেকে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ঐ বৈঠকে উভয়পক্ষের অন্যতম ঐকমত্যের বিষয় ছিল সংলাপ চলাকালে কেএনএফ ও সেনাবাহিনী পরস্পরের উপর আক্রমণ করবে না। বস্তুত এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা এখন বেপরোয়াভাবে এলাকায় চাঁদাবাজি, অপরহরণ, জনগণকে মারধরসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রম জোরদার করেছে।