হিল ভয়েস, ৯ অক্টোবর ২০২৩, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলাধীন বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নে স্থানীয় এক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ আবারও জোরপূর্বক হুমকি দিয়ে আদিবাসী তিন জুম্ম গ্রামবাসীর ভূমি বেদখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী তিন জুম্ম গ্রামবাসী হলেন- (১) বিজয় কান্তি চাকমা, পীং-রাঙ্গা চন্দ্র চাকমা, (২) মানেক চাকমা, পীং-রসিক মনি চাকমা ও (৩) বুদ্ধজয় চাকমা, পীং-প্রমোদ চাকমা। তারা সকলেই ৪নং ভূষণছড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এর ঠেগাদোর গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ ভূষণছড়া ইউনিয়নের ১২ বিজিবি ছোট হরিণা জোনের অধীন ঠেগাদোর বিওপি ক্যাম্পের ক্যাম্প কম্যান্ডার নায়েক সুবেদার সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক ডেকে পাঠালে স্থানীয় কার্বারি (গ্রাম প্রধান) পুলিন চাকমা, কার্বারি আথোইসি সহ উপরোল্লিখিত তিন গ্রামবাসীও (বিজয় কান্তি চাকমা, মানেক চাকমা ও বুদ্ধজয় চাকমা) ক্যাম্পে উপস্থিত হন।
এসময় ক্যাম্প কম্যান্ডার নায়েক সুবেদার সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক কার্বারি পুলিন চাকমাকে বলেন যে, ওই তিন গ্রামবাসীর ৩ একর পরিমাণ জায়গা তাদের লাগবে। ক্যাম্প কম্যান্ডার বলেন, ‘হাই কম্যান্ডের নির্দেশ মোতাবেক ওই জায়গায় আমাদের ধান চাষ করতে হবে, সেই ধান জোনে পাঠাতে হবে এবং সেখানে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হবে। তাই আমাদের এই জায়গা পেতে হবে।’
ক্যাম্প কম্যান্ডার হুমকি দিয়ে আরও বলেন যে, ‘যদি আমাদের অনুরোধে জায়গাগুলো ছেড়ে দেয়া না হয় তাহলে আঙুল বাঁকা করতে হবে।’
জানা গেছে, তিন গ্রামবাসীর ঐ ৩ একর পরিমাণ জায়গায় ধান্যজমি, ফলজ বাগান রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখও হিল ভয়েস-এ বিজিবি কর্তৃক ঐ ভূষণছড়া ইউনিয়নের ঠেগা খুব্বাং এলাকার সোনাধন চাকমা, পীং-বুদ্ধমনি চাকমা নামে এক জুম্ম গ্রামবাসীর ধান্যজমি বেদখল এবং এ নিয়ে গ্রামবাসীকে হুমকি দেয়ার অভিযোগের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ অক্টোবর ২০২৩ ভূষণছড়া ইউনিয়নের ১২ বিজিবি ছোট হরিণা জোনের অধীন ঠেগা খুব্বাং বিওপি ক্যাম্পের দায়িত্বরত কম্যান্ডার ক্যাপ্টেন সাদেকী আরফান নিলয় স্থানীয় খুব্বাং এলাকার কার্বারি (গ্রাম প্রধান) শ্যামল কান্তি চাকমাকে তার ক্যাম্পে ডেকে পাঠান। কার্বারি শ্যামল কান্তি চাকমা ক্যাম্পে গেলে ক্যাপ্টেন সাদেকী আরফান নিলয় কার্বারিকে জানান যে, তাদের ক্যাম্পের পার্শ্ববর্তী অবস্থিত সোনাধন চাকমার যে ধান্যজমিটা রয়েছে সেটা আর সোনাধন চাকমাকে চাষ করতে দেয়া হবে না।
পরে জমির মালিক সোনাধন চাকমা ক্যাম্পে গিয়ে ক্যাপ্টেন সাদেকী আরফান নিলয় এর দেখা করলে, ক্যাপ্টেন বলেন, ওই ধান্যজমি তিনি (সোনাধন) আর পাবেন না, এটা তাদের (বিজিবি) দখল করতে হবে। এটা ১২ বিজিবি ছোট হরিণা জোনের কম্যান্ডিং অফিসারের (সিও) সিদ্ধান্ত। এটা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে পরিণতি ভালো হবে না বলেও ক্যাপ্টেন সাদেকী আরফান নিলয় সোনাধন চাকমাকে বলেন।
জানা গেছে, সোনাধন চাকমার পরিবার পাকিস্তান আমল থেকে ওই জমিতে ধানচাষ করে আসছেন। ওই জমির পরিমাণ .৬০ একর (৬০%)।