হিল ভয়েস, ২০ আগস্ট ২০২৩, বিশেষ প্রতিবেদক: আজ ২০ আগষ্ট ২০২৩ সকাল ১০:৩০ ঘটিকায় ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির ৮ম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ এমপি-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির অপর দুই সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা এবং ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পুনর্বাসন সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া সভায় সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম কুমার চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণলায়ের সচিব মো: মশিউর রহমান, মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব ও একজন যুগ্ম সচিব উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিগত ৭ম সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন করা হয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতির উপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির পূর্বের সভায় প্রত্যাহৃত সেনা ক্যাম্পের জায়গায় এপিবিএন মোতায়েনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ স্থগিত করা হয়েছিল। উক্ত বিষয়ে পার্বত্য মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোন মতামত পাওয়া যায়নি বলে জানান পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মশিউর রহমান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বিধিমালাও এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান যে, বর্তমানে ভূমি মন্ত্রী বিদেশ সফরে রয়েছেন। তিনি দেশে ফিরলে ভূমি কমিশনের বিধিমালা চূড়ান্ত করা হবে।
কমিটির বিগত সভায় তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে কি কি বিষয় ও কার্যাবলী হস্তান্তর করা হয়েছে তা নিরূপনের জন্য পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রণালয় কর্তৃক উক্ত কমিটি গঠন ও নিরূপনের উদ্যোগ এখনো নেয়া হয়নি। তাই এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার জন্য ৮ম সভায় পার্বত্য মন্ত্রণালয়কে আবারো তাগাদা দেয়া হয়েছে।
কমিটির বিগত সভায় পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের উপর মন্ত্রীপরিষদ সচিবের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। উক্ত বৈঠকে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম কুমার চাকমাও উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
কমিটির বিগত সভায় পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির ২৭টি পদ বিশিষ্ট অর্গানোগ্রাম অনুসারে জনবল নিয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও এখনো অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন প্রদান করা হয়নি। এ বিষয়ে আবারো উদ্যোগ নেয়ার জন্য ৮ম সভায় পার্বত্য মন্ত্রণালয়কে তাগাদা দেয়া হয়েছে।
টাস্কফোর্সের সভা অচিরেই অনুষ্ঠিত করা এবং আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়ার জন্য ৮ম সভায় টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে তাগাদা দেয়া হয়।
জনসংহতি সমিতির সদস্য ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের জন্য পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনো যথাযথ কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তবে অতি সম্প্রতি পার্বত্য মন্ত্রণালয় থেকে জনসংহতি সমিতির সভাপতিকে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান পার্বত্য সচিব মো: মশিউর রহমান।
পরিশেষে পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনায় বান্দরবান জেলার ডেপুটি কমিশনারের কাছ থেকে কেএনএফের বিষয়ে প্রতিবেদন সংগ্রহের জন্য পার্বত্য মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির ৮ম সভা সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।