হিল ভয়েস, ২০ জুলাই ২০২৩, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় চলমান জাতিসংঘের এক্সপার্ট ম্যাকানিজম অন দ্য রাইট্স অব ইন্ডিজেনাস পিপল্স (এমরিপ) এর ৩য় দিনের সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) প্রতিনিধি অগাস্টিনা চাকমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জুম্ম জনগণ ভগ্ন প্রতিশ্রুতি ও সরকারের প্রতারণা শিকার হয়েছেন।
গতকাল ১৯ জুলাই ২০২৩, জেনেভায় অনুষ্ঠিত এমরিপের ১৬শ অধিবেশনের ৩য় দিনের সভায় এজেন্ডা আইটেম ১০: ইন্টারসেসশনাল এক্টিভিটিস এন্ড ফলো আপ টু পাস্ট স্টাডিজ এন্ড এডভাইস এর উপর বিবৃতি উপস্থাপন করার সময় পিসিজেএসএস প্রতিনিধি অগাস্টিনা চাকমা এসব কথা বলেন।
জাতিসংঘের এমরিপের এই ১৬শ অধিবেশনটি শুরু হয় গত ১৭ জুলাই এবং তা আগামী ২১ জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানা যায়।
অগাস্টিনা চাকমা তার বিবৃতির শুরুতে বলেন, আজ আমি আদিবাসীদের দ্বারা সম্মুখীন চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরার জন্য একটি অজুহাত নিয়ে অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় এই পরিষদে বক্তব্য প্রদান করছি। রাষ্ট্র ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে চুক্তি, সমঝোতা ও গঠনমূলক ব্যবস্থাসমূহ বিপুল অঙ্গীকার ধারণ করে। তিনি বলেন, গত বছর এক্সপার্ট মেকানিজম এই ব্যাপারটির গুরুত্ব যথাযথভাবে চিহ্নিত করেছিল এবং ইহার জটিলতাসমূহ অনুসন্ধানের জন্য একটি গবেষণার আহ্বান জানিয়েছিল। তবে আমরা কেবল গবেষণাতেই থেমে যেতে পারি না। সত্যিকারের পরীক্ষা নিহিত রয়েছে এইসব চুক্তি ও সমঝোতাসমূহ বাস্তবায়নের মধ্যে।
তিনি বলেন, এটা দেখতে পাওয়া হতাশাব্যঞ্জক যে, অগণিত দেশ যেগুলো এসব সমঝোতায় স্বাক্ষর করেছে মাত্র গুটিকয়েক রয়েছে যারা তাদের প্রতিশ্রুতিকে সম্মান জানিয়েছে।
অগাস্টিনা চাকমা বলেন, বাংলাদেশে একটি আশার প্রতীক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির কথা বিবেচনা করুন- যা অপূর্ণাঙ্গ অবস্থায় রয়েছে। ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত হওয়ার পর দীর্ঘ ২৬ বছর অতিক্রান্তির পরও সরকার গুরুত্বপূর্ণ বিধানসমূহসহ ইহার দুই তৃতীয়াংশ ধারা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, আদিবাসীদের নিজেদের যথাযথ ঐতিহ্যকে অস্বীকার করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বার বার পীড়িত করা ভূমি সমস্যাটি এখনও বজায় রয়েছে। চুক্তির একটি কেন্দ্রীয় বিষয় বেসামরিকীকরণ বাস্তবায়ন থেকে এখনও দূরে রয়েছে।
অগাস্টিনা চাকমা আরও বলেন, আমরা এই অবিচার বজায় রাখতে দিতে পারি না। আমাদের অবশ্যই আত্মতুষ্টর উর্ধে দাঁড়াতে হবে এবং সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের অবশ্যই জবাবদিহির দাবি করতে হবে এবং বাংলাদেশ সরকারকে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে চ্যালেঞ্জ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমি চুক্তি ও সমঝোতাসমূহের বাস্তবায়নকে অগ্রাধিকারদানের উপর জোর দেওয়ার জন্য এই পরিষদকে অনুরোধ জানাচ্ছি, তাদের উদ্দেশ্যকে পরিপূর্ণ করে এবং আদিবাসীদের অধিকার ও কল্যাণের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।