হিল ভয়েস, ১৮ জুলাই ২০২৩, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় চলমান জাতিসংঘের এক্সপার্ট ম্যাকানিজম অন দ্য রাইট্স অব ইন্ডিজেনাস পিপল্স (এমরিপ) এর ২য় দিনের সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) প্রতিনিধি প্রীতি বিন্দু চাকমা বলেছেন, ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে আদিবাসীদের নিজস্ব উন্নয়ন নির্ধারণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্বলিত বিশেষ শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য বিধান করা হয়েছিল। কিন্তু চুক্তির ধারা লংঘন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের আওতায় তিন পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, অধিকাংশ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে পাশ কাটিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে। ফলে পাহাড়ের অধিবাসীরা আত্ম-নিয়ন্ত্রিত উন্নয়নের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আজ ১৮ জুলাই ২০২৩, জেনেভায় সকালের দিকে অনুষ্ঠিত এমরিপের ১৬শ অধিবেশনে এজেন্ডা আইটেম ৫: ইন্টারঅ্যাকটিভ ডায়ালগ উইথ দি এক্সপার্ট ম্যাকানিজম অন দ্যা রাইটস টু ডেভেলপমেন্ট এর উপর বিবৃতি উপস্থাপন করার সময় জেএসএস প্রতিনিধি এসব কথা বলেন।
জাতিসংঘের এমরিপের এই ১৬শ অধিবেশনটি গতকাল শুরু হয় এবং আগামী ২১ জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানা যায়।
পিসিজেএসএস প্রতিনিধি প্রীতি বিন্দু চাকমা আরও বলেছেন, আরেকটি গুরুতর ইস্যু হচ্ছে যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ শাসনব্যবস্থাকে অবজ্ঞা করে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী কর্তৃক পর্যটন ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। তারা আদিবাসীদের ভূমি দখল করে এবং পাঁচতারা হোটেল সহ বিলাসবহুল পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলে। সেনাবাহিনী সীমান্ত সড়ক ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে আদিবাসীদের বাড়িঘর, বাগান-বাগিচা, জুমভূমি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ ধ্বংস করছে।
তিনি বলেন, উন্নয়নের অধিকার বিষয়ক এক্সপার্ট মেকানিজমের কাছে আমার প্রশ্ন, এধরনের উন্নয়ন কর্মসূচিসমূহ কীভাবে বন্ধ করা যায়, যেগুলি আদিবাসীদের জীবিকা ও সংস্কৃতি এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের জন্য ধ্বংসাত্মক?
আদিবাসীদের নিজেদের উন্নয়নের অগ্রাধিকারসমূহ নির্ধারণের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ শাসনব্যবস্থা যথাযথভাবে প্রবর্তনের জন্য এক্সপার্ট মেকানিজম কর্তৃক বাংলাদেশ সরকারকে কি উৎসাহিত করতে পারা যায়?