হিল ভয়েস, ৪ জুলাই ২০২৩, কক্সবাজার: গতকাল ৩ জুলাই ২০২৩ কক্সবাজার জেলাধীন উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নে অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতিকারী কর্তৃক সত্তরোর্ধ বয়সী এক বৌদ্ধ ভিক্ষু হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি বর্তমানে মারাত্মক জখম অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী বৌদ্ধ ভিক্ষুর নাম শ্রীমৎ ধর্মজ্যোতি (৭২)। তিনি স্থানীয় মরিচ্যা শ্রাবস্তি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ। তিনি প্রায় ১৩ বছর আগে সংসার জীবন ত্যাগ করে প্রবজ্যা গ্রহণ করেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ভোরের দিকে অজ্ঞাতনামা একদল দুর্বৃত্ত বৌদ্ধ বিহারের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং এসময় সেখানে থাকা বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ধর্মজ্যোতিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে গুরুতর আহত বৌদ্ধ ভিক্ষু জ্ঞান হারান।
পরে সকাল ৬:৩০ টার দিকে ভুক্তভোগীর নাতি বাপ্পী বড়ুয়া সিয়ং (খাবার) দিতে বৌদ্ধ বিহারে গেলে শ্রীমৎ ধর্মজ্যোতিকে মারাত্মক আহত ও মুমুর্ষূ অবস্থায় খুঁজে পান।
এরপর বাপ্পী বড়ুয়া ও এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় শ্রীমৎ ধর্মজ্যোতিকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। দায়িত্বরত কমপ্লেক্সের চিকিৎসরা কিছুক্ষণ পরেই আহত বৌদ্ধ ভিক্ষুকে কক্সবাজার জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু আহত বৌদ্ধ ভিক্ষুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আবার কক্সবাজার জেলা হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত বৌদ্ধ ভিক্ষুর মাথায়, হাতে ও শরীরের অন্যান্য স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালেও একদল দুর্বৃত্ত স্থানীয় এক বৌদ্ধ বিহারে হামলা ও লুটপাট চালায়।
ঘটনার ব্যাপারে উখিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা যায়নি।
এদিকে উক্ত হামলার পর এলাকার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জনগণের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
শ্রীমৎ ধর্মজ্যোতির ওপর হামলায় ঐক্য পরিষদের নিন্দা ও ক্ষোভ
গতকাল হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দপ্তর সম্পাদক মিহির রঞ্জন হাওলাদার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় বৌদ্ধ ভিক্ষু শ্রীমৎ ধর্মজ্যোতির উপর আক্রমণে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে দুস্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়।