হিল ভয়েস, ১ জুন ২০২৩, বান্দরবান: বান্দরবান পার্বত্য জেলার রুমা উপজেলায় ২৮ বীর রুমা জোনের ক্যাপ্টেন আলী তৌহিদ এর নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল ৩নং রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের থিংদলতে পাড়া হতে ৪নং ওয়ার্ডের সালৌপি পাড়ায় টহল অভিযানের সময় কেএনএফের পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে একজন সেনা সদস্য নিহত ও দুইজন সেনা সদস্য গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ ১ জুন ২০২৩, সকাল আনুমানিক ৯:৪৫ টার দিকে ২৮ বীর রুমা জোন থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল টহল অভিযানে বের হয়। এই টহল অভিযানে নেতৃত্ব দেন ২৮ বীর রুমা জোনের ক্যাপ্টেন আলী তৌহিদ। সেনাবাহিনীর টহল দলটি প্রথসে উপজেলার ৩নং রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের থিংদলতে পাড়াতে অবস্থান করে। পরে সেখান থেকে ৪নং ওয়ার্ডের সালৌপি পাড়ার দিকে রওনা দেয়। এমন সময় যাওয়ার পথে কেএনএফের পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে সৈনিক মোঃ তুজাম হোসেন(৩০), ল্যান্স কর্পোরেল মোঃ তৈয়ব ও ওয়ারেন্ট অফিসার আমিনুল ইসলাম নামে তিনজন সেনা সদস্য গুরুতর আহত হয়। এতে মাইন বিস্ফোরণের ফলে সৈনিক তুজামের শরীর থেকে দুটি পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে খবর পাওয়া গেছে।
আহতদেরকে সকাল ১১.০০ টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং অতিরিক্ত রক্তকরণের ফলে সৈনিক তুজাম হোসেন সেখানে মৃত্যুবরণ করেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, সেনাবাহিনী সৃষ্ট বম পার্টি খ্যাত কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসীদের কর্তৃক পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে এর পূর্বে গত এক সপ্তাহে ২ ব্যক্তি নিহত এবং ৩ ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন। তারমধ্যে গত ১৭ মে ২০২৩, সেনাবাহিনীর অভিযান পরিচালনার সময় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে জুয়েল ত্রিপুরা নামে এক জুম্ম নিহত এবং আব্রাহাম ত্রিপুরা নামে অপর এক জুম্ম গুরুতর আহত হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও এসব অভিযানে সেনাবাহিনী গণহারে সাধারণ জুম্ম গ্রামবাসীকে পোর্টার হিসেবে নিয়ে যাচ্ছে এবং যুদ্ধে তাদেরকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ জনের অধিক জুম্মকে সেনাবাহিনী পোর্টার হিসেবে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
এভাবেই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন তথা জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনের বিরুদ্ধে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর সহায়তায় গঠিত কেএনএফ আজ সেনাবাহিনী তথা বাংলাদেশ সরকারের জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে।