হিল ভয়েস, ২০ জুন ২০২৩, চট্টগ্রাম: আজ মঙ্গলবার (২০ জুন ২০২৩) সকাল ১১ ঘটিকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে টাঙ্গাইলের মধুপুরে গারো আদিবাসীদের কৃষি জমিতে লেক খননের নামে ভূমি বেদখলের প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চবি সংসদের শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সুদীপ্ত চাকমার সঞ্চালনায় এবং বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চবি সংসদের সভাপতি প্রত্যয় নাফাকের সভাপতিত্বে বক্তব্য প্রদান করেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চবি শাখার সভাপতি নরেশ চাকমা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চবি শাখার সাধারণ সম্পাদক অন্তর চাকমা, ছাত্র ইউনিয়ন চবি সংসদের সদস্য সোহেল রানা, চবি শিক্ষার্থী মুক্ত দিব্রা প্রমূখ। এ্রছাড়া সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চবি ২নং গেইট শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন চাকমা।
নরেশ চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, উচ্ছেদের উন্নয়ন আমরা চাই না, জনগনের নিরাপত্তা থাকবে এমন উন্নয়ন চাই। ভূমি রক্ষার জন্য ২০০৪ সালে পীরেন স্নালকে জীবন দিয়েছেন। আজ আবারও মধুপুরের গারোদের ধান চাষের জমি বেদখল করে লেক খননের পায়তারা করা হচ্ছে। পাহাড় কিংবা সমতলে সব জায়গায় আদিবাসীরা অধিকারহীন ও বঞ্চিত। সরকার পার্বত্য চুক্তিকে অবাস্তবায়িত রেখে দিন দিন সমস্যাকে জটিল রুপ দিচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে পাহাড় কিংবা সমতলে আবারও সংগ্রামের আগুন জ্বলবে।
অন্তর চাকমা বলেন, সরকার এখনও আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়নি বরং সর্বক্ষেত্রে অবহেলিত করে রেখেছে। মধুপুরে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে আদিবাসীদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে । যে ভূমি আদিবাসীদের জীবন সেই ভূমিতে তাদের প্রথাগত ভূমি অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে না। পার্বত্য চুক্তির ২৫ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও মৌলিক বিষয়গুলো সরকার অবাস্তবায়িত রেখেছে যার ফলে দিন দিন পাহাড়ের আদিবাসীরা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে।
সোহেল রানা তার বক্তব্যে বলেন, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ সকল আদিবাসীদের নিরাপত্তার বিধান করতে হবে। দূর্বল ভেবে শক্তি প্রয়োগ করে অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক ভূমি বেদখল বন্ধ করতে হবে।
মুক্ত দিব্রা তার বক্তব্যে বলেন, শাসকগোষ্ঠী আদিবাসীদের পূর্বপুরুষের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে অবৈধভাবে বেদখল করছে। একটি জনগোষ্ঠীকে পিছিয়ে রেখে একটি সমাজ একটি রাষ্ট্র সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারে না। মধুপুরে আদিবাসীদের ভূমি বেদখল বন্ধ করতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে সুমন চাকমা বলেন, সচেতন ছাত্র সমাজকে ভূমি দখলদারদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। অধিকার আদায়ে সকলকে এক হয়ে সংগ্রাম করে আদিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে প্রত্যয় নাফাক বলেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের নামে সরকার প্রতারণা করছে। আদিবাসী জনগোষ্ঠী তাদের বেঁচে থাকার অধিকার হারাচ্ছে। পাহাড়ে এবং সমতলে সবখানে আদিবাসীদের প্রতিবাদমূখর হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে হবে।
সমাবেশ শেষে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে প্রশাসনিক ভবন প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।