আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন লামা সরই ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব লাংকম ম্রো

হিল ভয়েস, ২৮ জুন ২০২৩, বান্দরবান: বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ কর্তৃক দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় বান্দরবান জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন চাইতে গিয়ে আটককৃত পাড়ার কার্বারি ও লামা সরই ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব লাংকম ম্রো জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১ মার্চ ২০২৩ লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ’র সহকারী ম্যানেজার আব্দুল মালেক বাদী হয়ে ১২ জনের নামে লামা থানায় একটি মিথ্যা ও ষড়ন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করেন। এরপর গত ৩০ মার্চ ২০২৩ লাংকম ম্রো, রংধজন ত্রিপুরা, রেংয়েন ম্রো, রিংরং ম্রো, দুইথং ম্রোসহ ৮ জন জামিনের জন্য বান্দরবান জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন জানান। মামলার শুনানী শেষে এক পর্যায়ে আদালতের হাকিম নাজমুল হোসেন রংধজন ত্রিপুরাসহ ৭ জনের জামিন মঞ্জুর করলেও লাংকম ম্রোর জামিন নাকচ করে দেন এবং লাংকম ম্রো’কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ প্রদান করেন।

দীর্ঘ ৩ মাস কারাবরণের পর গত ২৬ জুন ২০২৩ রাত ৮ টার দিকে পাড়ার কার্বারি ও লামা সরই ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব লাংকম ম্রো’কে জামিনে মুক্তি দিয়েছে আদালত।

কারাগার থেকে মুক্তির পর লাংকম ম্রো বলেন, মামলা, হামলা এবং জুলুমের ভয় দেখিয়ে ত্রিপুরা এবং ম্রোদের ৪০০ একর জুম ভূমি রক্ষার আন্দোলনকে কখনো দমানো যাবেনা। তিনি ত্রিপুরা এবং ম্রোদের নামে এ যাবৎ দায়েরকৃত সকল ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানিয়েছেন।

এর পূর্বে গত ১ মার্চ ২০২৩ উক্ত মামলায় ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির অন্যতম সংগঠক মথি ত্রিপুরাকে আটক করেছিল পুলিশ। ২৬ দিন কারাভোগের পর গত ২৭ মার্চ ২০২৩ জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পান মথি ত্রিপুরা।

উল্লেখ্য, গত ১ জানুয়ারি ২০২৩ লামা রাবার কোম্পানী কর্তৃক লাংকম ম্রো কার্বারী পাড়ায় হামলা চালিয়ে ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় লাংকম ম্রো কার্বারী ৭ জানুয়ারি ২০২৩ লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ’র সহকারী ম্যানেজার আব্দুল মালেকসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১৫০-১৭০ জন অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে লামা থানায় মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উল্টো লামা রাবার কোম্পানীর দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় ৩০ মার্চ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত লাংকম ম্রোকে জেলে প্রেরণ করেন।

এছাড়া, ২০২২ সালের এপ্রিলে লামার সরই ইউনিয়নের তিনটি ম্রো ও ত্রিপুরা গ্রামের ৪০০ একর জুম ভূমি, বাগান-বাগিচা ও গ্রামীন বন জ্বালিয়ে দেয়ার পর লামা রাবার কোম্পানী এযাবৎ এক ডজনের অধিক বার হামলা, ঘরবাড়ি ভাঙচুর, ঝর্নার উৎসে বিষ ঢেলে দিয়ে গ্রামবাসীদের হত্যা, মিথ্যা মামলা দায়ের, ভূমি বেদখল ইত্যাদি ঘটনা সংঘটিত করেছে।

More From Author