হিল ভয়েস, ২৩ মে ২০২৩, বান্দরবান: সেনাবাহিনী সৃষ্ট বম পার্টি খ্যাত কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসীদের কর্তৃক পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে বান্দরবান জেলাধীন রুমা উপজেলার রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নে আবারও এক নির্মাণ শ্রমিক নিহত এবং এক নির্মাণ শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে দুইটি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় ২ ব্যক্তি নিহত এবং ৩ ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন।
এদিকে কেএনএফের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানে তেমন কোনো সাফল্য অর্জন না করেও সেনাবাহিনী বিপদজনক এলাকায় পাহাড়ি ও বাঙালি শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করছে এবং এতে এসব নিরস্ত্র শ্রমিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তাদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দিচ্ছে বলে কেউ কেউ অভিযোগ তুলছেন।
আজ ২৩ মে ২০২৩ সকাল ১১ টার দিকে সংঘটিত এই বিস্ফোরণে নিহত নির্মাণ শ্রমিকের নাম মোঃ রাশেদ (১৮), পীং-নুরুল হক, গ্রাম-চনুয়া-মদিনা পাড়া, ৪নং ওয়ার্ড, বাঁশখালী উপজেলা, চট্টগ্রাম এবং আহত ব্যক্তির নাম মোঃ দুলাল (৩৫), পীং-মহিবুল্লাহ, গ্রাম- চনুয়া-মদিনা পাড়া, ৪নং ওয়ার্ড, বাঁশখালী উপজেলা, চট্টগ্রাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ঐ সময় রুমার রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নে বঙ্কুপাড়া এলাকায় সেনাবাহিনী ও বিজিবি কর্তৃক পরিচালিত সীমান্ত সড়কের নির্মাণ কাজ করার সময় হঠাৎ মাইন বিস্ফোরণ ঘটলে ঘটনাস্থলে মোঃ রাশেদ নিহত হয় এবং মোঃ দুলাল আহত হয়। গতকালই এই দুই শ্রমিককে সেখানে কাজ করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, এর পূর্বে গত ১৭ মে ২০২৩ রুমা উপজেলার রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভিযান পরিচালনার সময় কেএনএফের পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে সেনাদলটির শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে জুয়েল ত্রিপুরা নামে এক জুম্ম নিহত এবং আব্রাহাম ত্রিপুরা নামে অপর এক জুম্ম গুরুতর আহত হয় বলে খবর পাওয়া যায়। এদিন এক সেনা সদস্যও মাইন বিস্ফোরণে আহত হয়।
জানা গেছে, এদিন সেনাদলটি রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন জুম্ম গ্রামবাসীকে মালামাল বহন ও বিভিন্ন কাজের জন্য জোরপূর্বক শ্রমিক হিসেবে তাদের সাথে যেতে বাধ্য করে। সেনা অভিযানের এক পর্যায়ে বিকাল ৩টার দিকে সেনাদলটি রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের সলৌপি পাড়া সংলগ্ন এক পাহাড়ের পাদদেশে পৌঁছলে হঠাৎ মাইন বিস্ফোরণ ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসীর অভিযোগ, গত ১৬ মে ২০২৩ কেএনএফের এ্যাম্বুশে পড়ে সেনাবাহিনীর দুইজন জওয়ান নিহত ও তিনজন আহত হওয়ার পর রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে সেনাবাহিনী গণহারে সাধারণ জুম্ম গ্রামবাসীকে পোর্টার হিসেবে নিয়ে যাচ্ছে এবং যুদ্ধে তাদেরকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ জনের অধিক জুম্মকে সেনাবাহিনী পোর্টার হিসেবে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।