হিল ভয়েস, ১০ মে ২০২৩, রাঙামাটি: রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়িতে সুশীল সমাজের উদ্যোগে এলাকার ভারত প্রত্যাগত জুম্ম (উপজাতীয়) শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ভারত প্রত্যাগত জুম্ম (উপজাতীয়) শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ জুম্ম উদ্বাস্তুদের দ্রুত পুনর্বাসন দাবি করে এ সংক্রান্ত একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
আজ ১০ মে ২০২৩ বুধবার বাঘাইছড়ি ইউনিয়নের মোরঘোনাছড়া নামক জায়গায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং ‘ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উপজাতীয় উদ্বাস্তুদের দ্রুত পুনর্বাসন দাবি বিষয়ক কমিটি, বাঘাইছড়ি’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
৩২নং বাঘাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুনীল বিহারী চাকমার সভাপতিত্বে এবং যুব নেতা মন্টু চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাঘাইছড়ি উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের হেডম্যান, কার্বারি, মেম্বার সহ সুশীল সমাজের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভায় বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ‘ঘ’ খন্ডের ঘ (১) ও ঘ (২) নং ধারায় ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার বিধান থাকলেও এখনো পর্যন্ত সরকার বাঘাইছড়ি উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেনি বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
বক্তারা আরও বলেন, তৎকালীন সময়ে বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে আশেপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত শত শত পরিবার বাঘাইছড়ি উপজেলায় আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু হিসেবে রয়েছে, যারা এখনও অনিশ্চিত ও দারিদ্র্যক্লিষ্ট মানবেতর জীবন অতিবাহিত করতে বাধ্য হচ্ছে।
তারা আরও অভিযোগ করেন, গত ১৩-০৯-২০১৪ খ্রি: তারিখে টাস্ক ফোর্স সভায় আভ্যন্তরীণ উপজাতীয় উদ্বাস্তু পরিবারদেরকে রেশনসহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধা প্রদানের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং উক্ত সিদ্ধান্ত সম্বলিত কার্যবিবরণী ২৮-০২-২০১৫ খ্রি: তারিখে অনুষ্ঠিত টাস্ক ফোর্স সভায় অনুমোদিত হলেও উক্ত সিদ্ধান্ত এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ সরকারের কাছে চুক্তি মোতাবেক ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধাদি নিশ্চিতকরণ সহ অবিলম্বে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবি জানান।
আলোচনা সভার শেষদিকে উপস্থিত সকলের সম্মতিক্রমে নিখিল জীবন চাকমাকে আহ্বায়ক এবং সুনীল বিহারী চাকমাকে সদস্য সচিব নির্বাচিত করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উপজাতীয় উদ্বাস্তুদের দ্রুত পুনর্বাসন দাবি বিষয়ক কমিটি গঠন করা হয়।