হিল ভয়েস, ২৯ মে ২০২৩, রাঙামাটি: একটি হত্যা মামলায় তালিকাভুক্ত অভিযুক্ত আসামীর নামের সাথে মিল থাকায় রাঙামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলার নিরীহ এক জুম্ম রাঙামাটির কারাগারে বন্দী রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী ওই জুম্মর নাম চিক্কা চাকমা (৫৮), পীং-মৃত জ¦লন্ত বিকাশ চাকমা, মাতা-মৃত জ্ঞান লক্ষী চাকমা, গ্রাম- বালুখালী মুখ, ১৩৩নং জুরাছড়ি মৌজা, জুরাছড়ি উপজেলা। চিক্কা চাকমা পেশায় একজন কৃষক।
অপরাধী না হয়েও পুলিশ ও আদালতের ভুলের কারণে গত ২২ মে ২০২৩ থেকে সাত দিন ধরে তিনি কারাগারে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানা গেছে। কখন কিভাবে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে তাও নিশ্চিত করে জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ১৭ মে ২০২৩ তারিখ হত্যা মামলার বাদী লোকবিধু চাকমা (৬২) আইনী প্রক্রিয়ায় সম্পাদিত এক হলফনামার মাধ্যমে উক্ত চিক্কা চাকমা তার ছেলের হত্যা ঘটনার সাথে জড়িত নয় এবং এই চিক্কা চাকমা জামিনে মুক্তি বা মামলা হতে খালাস পেলে তার আপত্তি থাকবে না বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু তারপরও আদালত তাকে জামিনে মুক্তি না দিয়ে জেলে প্রেরণ করে।
জানা গেছে, গত ১০ এপ্রিল ২০২০ উপজেলার বনযোগীছড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য হেমন্ত চাকমাকে অজ্ঞাত একদল দুর্বৃত্ত গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা লোকবিধু চাকমা বাদী হয়ে জুরাছড়ি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটিতে অভিযুক্তের তালিকায় চিক্কা চাকমা নামে এক ব্যক্তিকেও রাখা হয়। কিন্তু সেই চিক্কা চাকমার সুনির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা ও পরিচয় উল্লেখ ছিল না বলে জানা যায়। এদিকে তদন্ত শেষে পুলিশ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে গত ১৩ এপ্রিল ২০২৩ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। সেই তালিকার ১২ নম্বরে চিক্কা চাকমার নাম রাখা হয়।
মামলার আসামি করার বিষয়টি সম্প্রতি জানার পর কৃষক চিক্কা চাকমা গত ২২ মে ২০২৩ রাঙামাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার বাদী লোকবিধু চাকমা বলেন, ‘মামলায় যে চিক্কা চাকমাকে আসামি করা হয়েছে, তিনি কৃষক চিক্কা চাকমা নন। পুলিশ ভুল কিংবা অসাবধানবশত কৃষক চিক্কা চাকমাকে আসামি করে অভিযোগপত্র দিয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তকালে তাঁর বিষয়ে আমাকে কিছুই জানাননি।’
তিনি গত ১৭ মে ২০২৩ সম্পাদিত এক হলফনামায় উল্লেখ করেন যে, ‘আমি উক্ত চিক্কা চাকমার বিষয়ে সবিস্তারে খোঁজখবর করিয়া জানতে পারি যে, সে উক্ত ঘটনার সহিত জড়িত নয় এবং আমি তদন্ত কর্মকর্তাকে তাহার বিষয়ে কিছুই বলি নাই।..তবে চিক্কা চাকমা নামে অন্য লোক থাকতে পারে।’
জুরাছড়ি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিটন চাকমা বলেন, ‘একই নামে একাধিক ব্যক্তি থাকতে পারেন। তাই বলে নিরীহ মানুষের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা খুবই দুঃখজনক।’