হিল ভয়েস, ২৬ মার্চ ২০২৩, রাঙ্গামাটি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক জোরপূর্বক রাঙ্গামাটি জেলাধীন বাঘাইছড়ি উপজেলার সার্বোয়াতলী ইউনিয়নে শিজকমুখ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে নির্মিত সেনা ক্যাম্পের সেনা সদস্যদের অবশেষে গতকাল (২৫ মার্চ ২০২৩) প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে, সেনাবাহিনী সেনা ক্যাম্পের জায়গাটি ঐ জায়গার মালিক বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির কাউকে বুঝিয়ে না দিয়ে ৩৭ বিজিবি রাজনগর জোনের অধীনে শিজক মুখ বিজিবি ক্যাম্পের নিকট হস্তান্তর করেছে বলে জানা গেছে।
গতকাল ২৫ মার্চ ২০২৩ দুপুর আনুমানিক ১২:৩০ টায় উক্ত শিজকমুখ সেনা ক্যাম্পের সেনাবাহিনী গোলাবারূদ, অস্ত্র-শস্ত্র ও সাজসরঞ্জামসহ তাদের জিনিসপত্র নিয়ে কাউকে কিছু না বলে পার্শ্ববর্তী দুরছড়ি বাজার সেনা ক্যাম্পে চলে যায় বলে জানা যায়। যাওয়ার সময় সেনা ক্যাম্পের প্রধান ফটকে ক্যাম্পের নামও মুছে দিয়ে যায়। কিন্তু ক্যাম্পের জন্য নির্মিত বিভিন্ন বাড়ি-ঘর, সেন্ত্রী পোস্ট ইত্যাদি কোনো স্থাপনা ভেঙে নিয়ে যায়নি।
পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার করার পর ক্যাম্পের জায়গা সংশ্লিষ্ট মালিককে বা পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করার বিধান রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী তা না করে বিজিবি কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করে চলে যায় বলে স্থানীয় এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়।
জানা গেছে, সেনাবাহিনী কর্তৃক উক্ত শিজকমুখ সেনা ক্যাম্প ত্যাগ করে চলে যাওয়ার বিষয়টিকে এলাকার জনগণ প্রথমে ইতিবাচকভাবে দেখতে শুরু করে। কিন্তু পরে সেনাবাহিনী কর্তৃক ঐ ক্যাম্পটি ৩৭ বিজিবি রাজানগর জোনের অধীনে শিজক মুখ বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার কে হস্তান্তর করার খবর এলাকাবাসীর মধ্যে আবার হতাশা সৃষ্টি করেছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য যে, গত ২৫ এপ্রিল ২০১৯ লংগদু উপজেলার সেনাবাহিনীর ২১ বীর রেজিমেন্টের মাইনী জোনের ক্যাপ্টেন খালেদ ও ওয়ারেন্ট অফিসার হাসমতের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য শিজকমুখ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে গিয়ে জোরপূর্বক ও পার্বত্য চুক্তি লংঘন করে উক্ত সেনা ক্যাম্পটি স্থাপন করে। সেনা ক্যাম্পটি স্থাপনের পরপরই ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা বিহারের ধর্মীয় কার্যাদি সম্পাদনে নানা প্রতিবন্ধকতা ও ধর্মীয় পরিহানি সৃষ্টি করে এবং এলাকার জুম্ম জনগণের উপর অপরিসীম হয়রানি ও নিপীড়নমূলক কর্মকান্ড চালায়।
জানা গেছে, উক্ত বৌদ্ধ বিহারটি বহু পুরনো একটি বিহার, যা ১৯৬০ দশকে কাপ্তাই বাঁধের পর উদ্বাস্তু হওয়া মানুষ এই বিহারটি নির্মাণ করে।