শিজক বৌদ্ধ বিহারের জায়গাটি নিরাপত্তা বাহিনীর সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা

হিল ভয়েস, ২৭ মার্চ ২০২৩, রাঙামাটি: রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ির শিজকমুখ সর্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের জায়গা বেদখল করে নির্মিত সেনা ক্যাম্প থেকে সম্প্রতি সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার করা হলেও বৌদ্ধ বিহারের ঐ জায়গা নিরাপত্তা বাহিনীর সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা দিয়ে একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে।

সাইনবোর্ডে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবহৃত ক্যাম্প, বিনা অনুমাতিতে প্রবেশ নিষেধ’ এবং ‘ক্যাম্পে অবস্থিত সরকারি সম্পদের কোন প্রকার ক্ষতিসাধন করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ’।

আজ ২৭ মার্চ ২০২৩ সকাল আনুমানিক ১০:৩০ টার দিকে লংগদু উপজেলার ৩৭ বিজিবি রাজানগর জোনের অধীন শিজকমুখ বিজিবি ক্যাম্প থেকে জনৈক নায়েক সুবেদার এর নেতৃত্বে একদল বিজিবি সদস্য সেখানে গিয়ে উক্ত সাইনবোর্ডটি স্থাপন করে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ মার্চ ২০২৩ দুপুর আনুমানিক ১২:৩০ টায় শিজকমুখ সর্বজনীন বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে নির্মিত সিজক সেনা ক্যাম্পের সেনাবাহিনী গোলাবারূদ, অস্ত্র-শস্ত্র ও সাজসরঞ্জামসহ তাদের জিনিসপত্র নিয়ে কাউকে কিছু না বলে পার্শ্ববর্তী দুরছড়ি বাজার সেনা ক্যাম্পে চলে যায়। যাওয়ার সময় সেনা ক্যাম্পের প্রধান ফটকে ক্যাম্পের নামও মুছে দিয়ে যায়। কিন্তু ক্যাম্পের জন্য নির্মিত বিভিন্ন বাড়ি-ঘর, সেন্ত্রী পোস্ট ইত্যাদি কোনো স্থাপনা ভেঙে নিয়ে যায়নি।

পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার করার পর ক্যাম্পের জায়গা সংশ্লিষ্ট মালিককে বা পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করার বিধান থাকলেও সেনাবাহিনী তা করেনি। উপরন্তু বিজিবি কর্তৃপক্ষ আজ বৌদ্ধ বিহারের উক্ত জায়গাটি নিরাপত্তা বাহিনীর ‘সংরক্ষিত এলাকা’ উল্লেখ করে সাইনবোর্ড টাঙিয়েছে, যা সুস্পষ্টভাবে বেআইনি এবং পার্বত্য চুক্তির লংঘন।

উল্লেখ্য যে, গত ২৫ এপ্রিল ২০১৯ লংগদু উপজেলার সেনাবাহিনীর ২১ বীর রেজিমেন্টের মাইনী জোনের ক্যাপ্টেন খালেদ ও ওয়ারেন্ট অফিসার হাসমতের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য শিজকমুখ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে গিয়ে জোরপূর্বক ও পার্বত্য চুক্তি লংঘন করে উক্ত সেনা ক্যাম্পটি স্থাপন করে। সেনা ক্যাম্পটি স্থাপনের পরপরই ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা বিহারের ধর্মীয় কার্যাদি সম্পাদনে নানা প্রতিবন্ধকতা ও ধর্মীয় পরিহানি সৃষ্টি করে এবং এলাকার জুম্ম জনগণের উপর অপরিসীম হয়রানি ও নিপীড়নমূলক কর্মকান্ড চালায়।

জানা গেছে, উক্ত বৌদ্ধ বিহারটি বহু পুরনো একটি বিহার, যা ১৯৬০ দশকে কাপ্তাই বাঁধের পর উদ্বাস্তু হওয়া মানুষ এই বিহারটি নির্মাণ করে।

More From Author