হিল ভয়েস, ১৪ মার্চ ২০২৩, বান্দরবান: বান্দরবান জেলাধীন রোয়াংছড়ি উপজেলা সদর এলাকার বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু এক নিরীহ মারমা ছাত্র সেনাবাহিনীর বেধরক মারধর ও অপমানের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনীর মারধরের ফলে ওই মারমা ছাত্রের হাতে ও পিটে গুরুতর জখমের সৃষ্টি হয়েছে।
আজ ১৪ মার্চ ২০২৩, সকাল ৯.৩৫ টার দিকে রোয়াংছড়ি উপজেলা সদরের সুয়ানলু পাড়ার প্রবেশমুখে রোয়াংছড়ি সেনা ক্যাম্পের সেনা সদস্যদের কর্তৃক এই অমানবিক আচরণ ও মারধরের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী মারমা ছাত্রের নাম উশৈমং মারমা (২৪), পীং-উক্যাচিং মারমা, গ্রাম-মধ্যম পাড়া, রোয়াংছড়ি সদর উপজেলা। উশৈমং মারমা এবছর ঢাকার লালমাটিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বমপার্টি খ্যাত কেএনএফ সশস্ত্র সদস্যদের গুলিতে সেনাবাহিনী সদস্য নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে রোয়াংছড়ি সেনা ক্যাম্পের সেনাবাহিনী গতকাল (১৩ মার্চ) থেকে সুয়ানলু পাড়ার প্রবেশমুখে থানচাঙ মেম্বারের (সাবেক) ঘরের পাশে একটি চেকপোস্ট বসায়।
আজ (১৪ মার্চ) সকালে উশৈমং মারমা মোটর সাইকেল যোগে তার বড় বোন কিলিউ মারমা (৩৩),স্বামী-উথোয়াইচিং মারমা এর সাথে সুয়ানলু বম পাড়ার ‘পার্বত্য শিশু উন্নয়ন বোর্ড’ থেকে ব্যাগ নিতে সেখানে যাচ্ছিলেন।
এসময় সেনা সদস্যরা মোটর সাইকেল থামিয়ে জিজ্ঞেস করে যে, ‘কোথায় যাও? কি কর?’ জবাবে উশৈমং মারমা বলেন যে, ‘সুয়ানলু পাড়াতে যাচ্ছি ভাগ্নের জন্য ব্যাগ নিতে। আমি সদ্য এইচএসসি পাশ করেছি এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোচিং করছি।’
কথা শুনে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সকলেই অট্টহাসি দিয়ে টাট্টার সুরে বলে, ‘তুমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে? এই চেহারা নিয়ে!’
তারপর সেনা সদস্যরা উশৈমং মারমাকে গাড়ির কাগজপত্র দেখাতে বলে। উশৈমং তার এক বন্ধুকে দিয়ে কাগজপত্রগুলো আনিয়ে সেনাবাহিনীকে দেখায়। কিন্তু তারপরেও কোনো কারণ ছাড়াই সেনা সদস্যরা তার বোনের সামনেই উশৈমং মারমাকে শক্ত কাঠ দিয়ে পিঠে ৫ বার এবং পায়ে ৪ বার আঘাত করে।
ঘটনার পরে উশৈমং ও তার বোন ইউএনও এর কাছে গিয়ে বিচার চাইলে, ইউএনও এর জবাবে করার কিছু নাই বলে জবাব দেন।