জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার সংগ্রামে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি

৫ম অংশ: রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিভিন্ন সরকারের সাথে আনুষ্ঠানিক সংলাপ
মঙ্গল কুমার চাকমা

সশস্ত্র আন্দোলনের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা শান্তিপূর্ণ ও রাজনৈতিক উপায়ে সমাধানের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সরকারের সাথে বরাবরই সংলাপের পথ খোলা রেখেছিল এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য বার বার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসতে থাকে। বস্তুত জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আদায়ের সশস্ত্র আন্দোলন অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যেতে থাকে তখন সরকার ও সরকারি বাহিনী প্রবল চাপের মধ্যে পড়ে। দুর্বার সশস্ত্র আন্দোলনকে মোকাবেলা করতে গিয়ে নিরীহ জুম্ম জনগণের উপর সরকারি বাহিনীর নিপীড়ন-নির্যাতন বৃদ্ধি পেলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরেও সরকারের বিরুদ্ধে প্রবল জনমত গড়ে উঠে। সামরিক উপায়ে, অর্থনৈতিক উপায়ে, লক্ষ লক্ষ মুসলমান বাঙালি বেআইনীভাবে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে, ভাগ করো শাসন করো নীতির ভিত্তিতে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়েও জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে দমন করতে না পেরে এবং দেশে-বিদেশে প্রবল চাপের মধ্যে পড়ে বিভিন্ন সরকার আলোচনার মাধ্যমে পার্বত্য সমস্যার শান্তিপূর্ণ ও রাজনৈতিক উপায়ে সমাধানের পথ খুঁজতে বাধ্য হয়েছিল। তারই ফলশ্রুতিতে প্রথমে জেনারেল জিয়া সরকার আলোচনার মাধ্যমে পার্বত্য সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করে। কিন্তু এক সামরিক অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট জিয়া নিহত হলে সেই উদ্যোগ ভেস্তে যায়।

সংলাপের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধানে এরশাদ সরকারের সাথে বৈঠক

জেনারেল জিয়া এক সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হলে এরপর জেনারেল এরশাদ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসেন। এরশাদ সরকার সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসলে একপর্যায়ে ১৯৮৫ সালের ২১ অক্টোবর এরশাদ সরকারের সাথে সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক শুরু হয়। এই বৈঠকে জনসংহতি সমিতির প্রতিনিধিদল পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে রাজনৈতিক ও জাতীয় সমস্যা বলে জোরালো ও বলিষ্ঠ যুক্তি তুলে ধরে। ফলে উভয় পক্ষ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে “পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা একটা জাতীয় ও রাজনৈতিক সমস্যা, আর ইহা রাজনৈতিকভাবে সমাধান হোক।” উক্ত বৈঠকে সরকারি প্রতিনিধিদল পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যাকে রাজনৈতিক ও জাতীয় সমস্যা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন।

এরপর ১৭-১৮ ডিসেম্বর ১৯৮৭ তারিখে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বৈঠকের প্রথম দিনে জনসংহতি সমিতির প্রতিনিধিদল নিজস্ব আইন পরিষদ সম্বলিত প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের পাঁচ দফা দাবিনামা সরকারের প্রতিনিধিদলের পেশ করেন এবং সরকারি প্রতিনিধিদল তা গ্রহণ করেন। কিন্তু পরে সরকার পক্ষ পেশকৃত পাঁচ-দফা দাবিনামা সংবিধান বিরোধী, দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতার প্রতি হুমকিমূলক, সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের স্বার্থ বিরোধী ইত্যাদি অবাস্তব ও অযৌক্তিক বিষয় অবতাড়না করে প্রত্যাখ্যান করেন। পক্ষান্তরে জনসংহতি সমিতির দাবিনামাকে পাশ কাটিয়ে ১৯৮৮ সালের ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত চতুর্থ বৈঠকে সরকার পক্ষ থেকে নয়দফা খসড়া রূপরেখা পেশ করা হয়। একপর্যায়ে ১৯৮৮ সালের ১৪-১৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বৈঠকে জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে সংশোধিত পাঁচদফা দাবিনামা সরকারি প্রতিনিধিদলের কাছে পেশ করা হয়। সরকার পক্ষ আবারো ৯ দফা রূপরেখার উপর জোর দেন। জনসংহতি সমিতির প্রতিনিধিদল উক্ত ৯ দফা রূপরেখার উপর আলোচনা করতে রাজী না হওয়ায় কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই ৬ষ্ঠ বৈঠক সমাপ্ত হয়।

জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে জুম্ম জনগণের দুর্বার আন্দোলনের মুখে এবং দেশে-বিদেশে প্রবল জনমতের চাপে পড়ে জেনারেল এরশাদ সরকার জনসংহতি সমিতির সাথে বৈঠক অব্যাহত রাখলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার প্রকৃত রাজনৈতিক সমাধানে এরশাদ সরকারের কোন সদিচ্ছা ছিল না। তাই প্রবল জনমতকে বিভ্রান্ত করার জন্য এবং নয়দফা রূপরেখার ভিত্তিতে নামকাওয়াস্তে অধিকার দিয়ে সস্তায় সমাধান প্রদানের ষড়যন্ত্র হিসেবে জনসংহতি সমিতিকে পাশ কাটিয়ে তথাকথিত উপজাতীয় নেতৃবৃন্দের নামে জুম্মদের কতিপয় সুবিধাবাদী ও সুযোগসন্ধানী ব্যক্তির সাথে সরকার তলে তলে আলোচনা শুরু করে। জনসংহতি সমিতির সাথে প্রস্তাবিত ৭ম বৈঠক অনুষ্ঠিত করার পূর্বে ১৯৮৯ সালে ২২ ফেব্রুয়ারি সরকার ৯ দফা রূপরেখা অনুসারে প্রণীত পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ বিল জাতীয় সংসদের উক্ত অধিবেশন পেশ করা হলে এরশাদ সরকারের আনুষ্ঠানিক সংলাপ ভেঙ্গে যায়।

বিএনপি সরকারের সাথে আনুষ্ঠানিক সংলাপ

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকার গঠন করে। সরকার গঠনের পর খালেদা জিয়া পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে কোন কার্যকর উদ্যোগ নিতে অব্যাহতভাবে বিরত থাকেন। অপরদিকে পূর্বসূরি জেনারেলদের মতো খালেদা জিয়া সরকারও দমন-পীড়নের মাধ্যমে জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বাধীন জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনকে বানচাল করার হীনষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে থাকে। এমতাবস্থায় খালেদা জিয়া সরকারকে আলোচনায় আসতে বাধ্য করতে জনসংহতি সমিতি ১৯৯২ সালের ১০ আগস্ট একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। এতে সরকার দেশে-বিদেশে প্রবল চাপের মধ্যে পড়ে। ফলে একপর্যায়ে সরকার তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী কর্ণেল (অব:) অলি আহমেদকে প্রধান করে ৯-সদস্য বিশিষ্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় কমিটি গঠন করে জনসংহতি সমিতির সাথে আনুষ্ঠানিক সংলাপে সামিল হতে বাধ্য হয়।

খালেদা জিয়া সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রথম বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪ ডিসেম্বর ১৯৯২ সাল পার্বত্য চট্টগ্রাম যোগাযোগ কমিটির মাধ্যমে জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের নিকট সংশোধিত পাঁচদফা দাবিনামাসহ আঞ্চলিক পরিষদ সম্বলিত আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের সংক্ষিপ্ত রূপরেখা পেশ করা হয়। দেশে-বিদেশের জনমতের চাপে পড়ে সরকার উক্ত সংসদীয় কমিটি গঠন করলেও সরকারের ছিল না পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যাকে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা। খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের সাথে ১৩ বার (মূল কমিটির সাথে ৭ বার ও সাব-কমিটির সাথে ৬ বার) বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও কোন সমঝোতা অর্জিত হয়নি।

ভারতে আশ্রিয় জুম্ম শরণার্থীদের সাথে সরকারের ১৬-দফা প্যাকেজ চুক্তি

দীর্ঘ কয়েক দফা আলোচনা ও দর কষাকষির পর বিএনপি সরকার শরণার্থীদের ভূমি ফেরতসহ জুম্ম শরণার্থীদের ১৩ দফা দাবিনামা মেনে নিলে ১৬ জানুয়ারি ১৯৯৪ তারিখে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ে জুম্ম শরণার্থী নেতৃবৃন্দ ১৬-দফা প্যাকেজ চুক্তিতে সম্মত হয় এবং তদনুসারে জুম্ম শরণার্থীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে রাজী হয়। ১৬ দফা প্যাকেজ চুক্তি অনুসারে দুই দফায় প্রায় ৫,০০০ জন জুম্ম শরণার্থী স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে। তবে ১৬ দফা প্যাকেজ চুক্তি অনুসারে সরকারের তরফ থেকে প্রত্যাগত শরণার্থীদের যথাযথ পুনর্বাসন, ভূমি প্রত্যর্পণ ও জারমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করায় শরণার্থী প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।

আওয়ামীলীগ সরকারের সাথে আনুষ্ঠানিক সংলাপ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি

১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আসন্ন নির্বাচন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আলোচনার জন্য শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হিসেবে আওয়ামীলীগের অন্যতম নেতা ওবায়েদুল কাদেরের দুধুকছড়ায় গিয়ে জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমার সাথে আলোচনা করেন। উক্ত আলোচনায় উভয় পক্ষে ঐক্যমত হয় যে, যেহেতু ’৯১-এর নির্বাচনে জনসংহতি সমিতি আওয়ামীলীগকে সমর্থন দিয়েছিল, তাই ’৯৬-এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ও জনসংহতি সমিতি যৌথভাবে একক প্রার্থী প্রদান করা। তবে প্রার্থী নির্ধারণ করবে জনসংহতি সমিতি। কিন্তু সমঝোতা লঙ্ঘন করে আওয়ামীলীগ একতরফাভাবে খাগড়াছড়ি আসনে কল্পরঞ্জন চাকমা, রাঙ্গামাটি আসনে দীপঙ্কর তালুকদার ও বান্দরবান আসনে বীর বাহাদুরকে মনোনয়ন দেয়।

১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ জয় লাভ করে। সরকার গঠনের পর ১৯৯৬ সালের ১৪ অক্টোবর শেখ হাসিনা সরকার জাতীয় সংসদের তৎকালীন চীফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহকে আহ্বায়ক করে ১১-সদস্য বিশিষ্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটি গঠন করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের নিমিত্তে ২১ ও ২৪ ডিসেম্বর ১৯৯৬ শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় খাগড়াছড়ি সার্কিট হাউজে। জনসংহতি সমিতির বৈঠকে সমিতির পক্ষ শেখ হাসিনা সরকারের নিকট আঞ্চলিক পরিষদ সম্বলিত আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন সংক্রান্ত সংশোধিত পাঁচদফা দাবিনামা পেশ করা হয়।

আওয়ামীলীগ সরকারের সাথে প্রথম বৈঠকের পর জনসংহতি সমিতির প্রতিনিধিদলকে পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে পরবর্তী বৈঠকগুলো রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ১৯৯৭ সালের ২৬ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’য় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং উভয়পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে ২ ডিসেম্বর ১৯৯৭ তারিখে সকাল ১০:৩২ ঘটিকায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে জুম্ম জনগণের রক্ত পিচ্ছিল দুর্বার আন্দোলনের ফলে দেশের শাসকগোষ্ঠী বাধ্য হয় এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে। এই চুক্তি জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের কঠোর আত্মত্যাগের ফসল। দীর্ঘ আড়াই দশক ধরে রক্ত-পিচ্ছিল সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জুম্ম জনগণ তথা পার্বত্যবাসীর অধিকার সনদ এই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অর্জিত হয়েছে।

২০-দফা প্যাকেজ চুক্তি ও শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তন

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ হাসানাত আবদুল্লাহ-এর নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটির এক প্রতিনিধিদল ১৯৯৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চ এবং ৬ মার্চ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত দুই দফায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে সফর করেন। সফরকালে প্রতিনিধিদল ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থিত বিভিন্ন জুম্ম শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন। প্রতিনিধিদল এবং ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থানকারী পার্বত্য চট্টগ্রাম জুম্ম শরণার্থী নেতৃবৃন্দের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক জুম্ম শরণার্থীদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে যে সকল সুযোগ-সুবিধা ঘোষণা করেছিলেন তা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় এবং উভয়পক্ষ ২০-দফা প্যাকেজ চুক্তিতে একমত পোষণ করে শরণার্থী প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

২০ দফা প্যাকেজ চুক্তি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ৬টি শরণার্থী শিবির থেকে ৬ দফায় ১২,২২২ পরিবারের ৬৪,৬০৯ জন জুম্ম শরণার্থী প্রত্যাবর্তন করে। উল্লেখ্য যে, ১৯৯৪ সালের ১৬-দফা প্যাকেজ চুক্তি এবং ১৯৯৭ সালের ২০-দফা প্যাকেজ চুক্তি স্বদেশে প্রত্যাবর্তন ছাড়াও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের শরণার্থী দুর্বিষহ জীবন সহ্য করতে না পেরে এবং নানা অনাচারের ফলে প্রায় ৫৪ হাজার শরণার্থী স্বউদ্যোগে স্বদেশে ফিরে এসেছিল। স্বউদ্যোগে প্রত্যাবর্তিত এসব শরণার্থীরা ১৬-দফা প্যাকেজ চুক্তি কিংবা ২০-দফা প্যাকেজ চুক্তির কোন সুযোগ-সুবিধাদি লাভ করেনি।

(চলবে…..)

More From Author