হিল ভয়েস, ৩ জানুয়ারি ২০২৩, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আন্তর্জাতিক পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন (সিএইচটি কমিশন) ম্রো সম্প্রদায়ের উপর অব্যাহত সহিংসতার জন্য গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার, নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সিএইচটি কমিশনের তিন কো-চেয়ার সুলতানা কামাল, এলসা স্ট্যামাটোপলু এবং মিরনা কানিংহাম কাইন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে সিএইচটি কমিশন এই উদ্বেগ ও দাবি জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বান্দরবানের লামার রেংয়েন ম্রো পাড়ায় ম্রো আদিবাসী সম্প্রদায়ের ওপর লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড আবারও অগ্নিসংযোগ করেছে জেনে সিএইচটি কমিশন অত্যন্ত মর্মাহত।
সিএইচটি কমিশন ম্রো সম্প্রদায়ের ন্যায়বিচার, নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকরভাবে কাজ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। মিডিয়া রিপোর্ট ১২ অনুযায়ী, সোমবার (২ জানুয়ারি) রাত ১:০০ টার দিকে, লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ভাড়া করা কয়েকশ দুর্বৃত্ত আক্রমণ শুরু করে।
দুর্বৃত্তরা ম্রো আদিবাসী সম্প্রদায়ের এক ডজনের বেশি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয় ও ভাংচুর করে এবং তাদের মোবাইল ফোন, গৃহস্থালির জিনিসপত্র, হাঁস-মুরগি, গবাদি পশু ও অন্যান্য জিনিসপত্র লুট করে। হামলার সময় শারীরিক ক্ষতি থেকে বাঁচতে ম্রো লোকেরা জঙ্গলে পালিয়ে যায়।
দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বান্দরবানের লামা উপজেলার লাংকম কার্বারি পাড়া, জয়চন্দ্র ত্রিপুরা কার্বারি পাড়া ও সরই ইউনিয়নের রেংয়েন ম্রো পাড়ার আদিবাসীদের উপর বারবার সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগ করে আসছে তাদের জমি দখলের উদ্দেশ্যে।
এর পূর্বে সিএইচটি কমিশন ৩০ এপ্রিল ২০২২ এবং ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে দুটি পৃথক প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করেছিল এবং আদিবাসী সম্প্রদায় তাদের ঐতিহ্যগত ভূমি ও পরিবেশের জন্য ন্যায়বিচার ও সুরক্ষার দাবি জানিয়েছিল। ২ জানুয়ারি সাম্প্রতিক হামলাটি পূর্বের হামলার জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে সরকারের বার বার ব্যর্থতারই ফল বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে সিএইচটি কমিশন।
সিএইচটি কমিশন আশা করছে, সরকার এবার অভিযুক্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কিছু দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং আদিবাসীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। সিএইচটি কমিশনের বিশ্বাস, বিচারহীনতার বিদ্যমান সংস্কৃতিই এই অপরাধীদের আদিবাসীদের উপর বারবার আক্রমণ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করে।
সিএইচটি কমিশন আরও অনুরোধ করেছে যে, যাতে সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অবিলম্বে খাদ্য সহায়তা এবং আশ্রয় প্রদান করে এবং তাদের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করে।