ধীর কুমার চাকমা
আগামীকাল মহান ৭ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সামরিক শাখা ‘শান্তিবাহিনী’ প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্ণ হবে। এখন থেকে ৫০ বছর আগে ১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারি, মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাকে (এম এন লারমা) সর্বাধিনায়ক কওে এই বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই বাহিনীর অগ্রযাত্রা সূচিত হয়েছিল নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে। যে সমাজে রাজনীতির নামে ‘র’ শব্দটা পর্যন্ত শোনা যায়নি, সেই সমাজের মুক্তির বার্তা নিয়ে এই বাহিনীর জন্ম হয়েছিল শাসকগোষ্ঠীর অগোচরে।
ব্রিটিশ-ভারতের শাসনামল থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক ইতিহাস হচ্ছে প্রতারণার ইতিহাস। দেশ বিভাগের সময় সদ্য স্বাধীন পাকিস্তানের কাছে জুম্মরা ছিল ভারতপন্থী আর বাংলাদেশ স্বাধীনতার সময় তারা অভিযুক্ত হলো পাকপন্থী হিসেবে। তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিল একটি জেলা। এই জেলায় ২০ আগষ্ট পর্যন্ত ডিসি বাংলায় উড্ডীন ভারতের পতাকা পাঞ্জাবের বেলুচ রেজিমেন্ট এসে নামিয়ে পাকিস্তানের চাঁদ-তারা খসিত পতাকা উড়িয়েছিল। তখনই সূচনা হয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে পাকিস্তানের শাসন। বাংলাদেশ মুক্তিসংগ্রামের শেষান্তে ও ’৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ শত্রু মুক্ত হবার অব্যবহিত আগে ৫-৬ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ির পানছড়ি মঞ্জু আদাম ও দীঘিনালার হাসিন সনপুরেও মুক্তিবাহিনী গণহত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। সংগ্রামের শুরুতে মুক্তিবাহিনীতে প্রশিক্ষণ দেবার তালিকাভুক্তির পরেও জুম্মদেরকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। ভারত স্বাধীনোত্তরকাল থেকে বর্তমান বাংলাদেশ আমল পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্মরা ছিল রাজনৈতিক প্রতারণার শিকার। আর বারংবার প্রতারণা নয়, এর কারণ চিরতরে বন্ধ করাই শান্তিবাহিনীর অন্যতম লক্ষ্য।
প্রসঙ্গত কারণে এখানে একটা বিষয় না বললেই নয়। তা হচ্ছে, যে জাতির জন্য এই বাহিনী প্রতিষ্ঠা, জন্মলগ্নে সেই জাতি প্রথমে অনুভবই করতে পারেনি এই বাহিনীর জন্ম তাদেরই মুক্তির জন্য। তাই শান্তিবাহিনী নাম ধারণ করার আগে জুম্মরা এই বাহিনীকে বলতো, ‘ঝারবো’ (অর্থাৎ জঙ্গলে গোপন আস্তানায় অবস্থানকারী)। এক সময় গোপন আস্তানা থেকে এসে শাসকগোষ্ঠীর অগোচরে ঝারবো-রা সাংগঠনিক কাজ সেরে আবার আস্তানায় ফিরে যেতো। শান্তিবাহিনীর কম্যান্ডার হিসেবে যারা নিয়োগপ্রাপ্ত সেসব পাহাড়ী ছাত্র সমিতির নেতা-কর্মীরা নূতন সরকারের শাসনামলের শুরুতে সাবধানে চলাফেরা করতে বাধ্য হতেন। এভাবে কাজ করতে করতে ঝারবো-রা এক সময় জুম্মদের মন জয় করতে শুরু করে। তাই ঝারবো’র জায়গায় তাদেরকে বলতো ঐ “আমা ইগুন”(মানে ‘আমাদের লোকরা’)। ‘আমা ইগুন’ বলতে বলতে শেষাবধি তাদের কাজের ফলে জুম্ম সমাজে সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বলে “শান্তিবাহিনী” নাম দিয়েছিল জুম্ম জনগণ। এভাবেই পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র সমিতির ছত্রছায়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র ছাত্র-যুব সমাজের কর্মীরা ধাপে ধাপে, শান্তিবাহিনী নামেই জুম্ম সমাজে আবির্ভূত হলো।
চূড়ান্তভাবে শান্তিবাহিনী হচ্ছে সাধারণ জুম্মদের দেয়া নাম। জুম্ম জনগণের প্রদত্ত নাম বহন করেই আজ ঘরে-বাইরে এই বাহিনী বহুল পরিচিতি লাভ করেছে এবং শান্তিবাহিনী একটা সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে আশির দশকে সরকারি বাহিনীর অফিসার (জেএসএস’র শুভাকাঙ্খীরা) থেকে প্রশংসা কুড়িয়েছিল। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি তখনও পর্যন্ত স্বাভাবিক হয়নি। তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের গ্রামাঞ্চলে একদিকে মুক্তিবাহিনীর কাছ থেকে নূতন সরকার হাতিয়ার বুঝিয়ে নিচ্ছে, অপরদিকে সীমান্ত অঞ্চলে সামাজিক অপরাধী চক্রদ্বারা খুন, রাহাজানি, ডাকাতি ইত্যাদি অপরাধমূলক অপকর্ম ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবার ফলে পার্বত্যাঞ্চলের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতি সামাল দেয়াই ছিল, তখন পার্টির প্রথম ও মূখ্য কাজ। পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র সমিতির কর্মীরা সশস্ত্রভাবে এই সব কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছিল অনায়াসে। একদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গণসচেতনতা সৃষ্টি করা, অপরদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের গ্রামাঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা এই দু’টো কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র সমিতির নেতা ও নেতৃত্ব জুম্ম জনগণের আস্থাভাজন হয়ে উঠে। ফলশ্রুতিতে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আদায়ের আন্দোলনের পথ প্রশস্ত হয়। শক্ত ভিত্তি রচিত হয় শান্তিবাহিনীর। তখন একদিকে সমাজের অপরাধচক্রের ভয়ে যারা ভীত-সস্ত্রস্ত ও নির্ঘুম রাত কাটাতো তাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। অপরদিকে সমাজের অভ্যন্তরে অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পাবার সাথে সাথে কিছু বন্দুকধারী সদস্য পার্টির নীতি-আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শান্তিবাহিনীতে যোগ দেয় এবং স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনে সামিল হয়। উল্লেখ্য, তৎকালীন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার কর্তৃক আঞ্চলিক স্বাযত্বশাসনের দাবি প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল ১৯৭২ সালে। তাই সশস্ত্র আন্দোলনের প্রস্তুতি জরুরী এবং অনস্বীকার্য হয়ে উঠেছিল।
১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারি। পার্বত্য চট্টগ্রামের চেঙ্গী এলাকায়, অখ্যাত এক জায়গা, নাম তার কলাবন্যা (মুবাছড়ি থুম)। শীতের এক সকাল। চারিদিকে সবুজ পাহাড় পরিবেষ্টিত পাদদেশে ছোট্ট একটা মাঠ। মাঠের অদূরে আদিবাসী জুম্ম গ্রাম, যেই গ্রামের লোকজন শান্তিবাহিনীর ছায়াটাকেও জীবন্ত মানুষের মতো বিশ্বাস করতো। শান্তিবাহিনীর জন্য রসদ যোগানো এবং যোগাযোগ ইত্যাদি কাজ করে দিতো অকাতরে। সেই গ্রামের লোকজন মাঠের মাঝখান দিয়ে জুমে যাওয়া-আসা করতো, সংগ্রহ করতো বনের ফলমূল আর বনজ শাকশব্জি। ঠিক এই মাঠের মাঝখানে এক সময় অস্থায়ী ছাউনিতে ৪০/৫০ জন সাবেক ছাত্রনেতা ও কর্মীদের জড়ো করা হয়েছিল অনুষ্ঠানের দুয়েকদিন আগে। তাদের মধ্যে তৎকালীন সিনিয়র ছাত্রনেতা (পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র সমিতির) অধিকাংশই উপস্থিত ছিল। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত থাকায় সিনিয়র ছাত্র নেতা সবাই উপস্থিত থাকতে পারেনি। উপস্থিত ছিলেন মহান নেতা এম এন লারমা এবং বর্তমান পার্টি সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা।
সেদিন ছিল কুয়াশাঘন সকাল। তখন সকাল ৮টা/ ৯টায় পর্যন্ত সূর্যের মূখ দেখা যায় না। প্রকান্ড মরা গাছ কুড়িয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে শীত নিবারণ করা ছাড়া কোন উপায় ছিল না। চারিদিকে পাহাড়ের বন-উপবনের সবুজ গাছগাছালি কূয়াশায় একাকার হয়ে গেছে। চারিদিকে পাহাড় ঘেরা পাদদেশে সেই ছোট্ট অখ্যাত মাঠে সেদিন শান্তিবাহিনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল অনাড়ম্বর পরিবেশে। সমবেত সবার মাথার উপর মুক্তাকাশে সগৌরবে উড়েছিল দলীয় পতাকা। পতাকার নীচে দাঁড়িয়েছিলেন মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা (এম এন লারমা)। সবার গায়ে পোশাক ছিল যার যেমন আছে। আজ মহান নেতার ভাষণের আদ্যোপান্ত কিছু মনে নেই। তবে শপথ বাক্য পাঠ করানোর পর, দৃপ্ত কন্ঠে তাঁর ভাষণের সংক্ষিপ্ত বয়ান হচ্ছে এমন- “আজ পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্মদের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আদায়ের জন্য শান্তিবাহিনী তথা গণমুক্তি ফৌজ (পিএলএ) ঘোষণা করা হলো। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে এই বাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্মদের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করে যাবে।”
তাঁর এই ঐতিহাসিক ঘোষণার অব্যবহিত পরেই সেই শীতের শেষে বসন্তের শেষ ভাগে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র সমিতির নেতা কর্মীদের সমন্বয়ে (জেডএলসি) সামরিক প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হলো। পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র সমিতির সর্বশেষ থেকে দ্বিতীয় সভাপতি চাবাই মগকে আমি আজু বলে ডাকতাম। আমরা সেই সময়ের ছাত্র সংগঠনের ছাত্ররা জুম্ম জাতীয়তাবাদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়ায় তাকে পুরোনো নানা(স্পর্শকাতর) প্রবাদ দিয়ে তার সাথে মসকারী করতাম। তিনিও কিছুই মনে খারাপ করে নিতেন না। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে তৎকালীন সময়ে দশ ভিন্ন ভাষাভাষি অন্যান্য জাতিসত্তার সিনিয়র ছাত্রদের তখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
১৯৭৩ সালে শান্তিবাহিনী উদ্বোধনের পর এই জেডএলসি (জোনাল লিডারশীপ কোর্স) প্রশিক্ষণ কোর্স ব্যবস্থাপনা হচ্ছে প্রয়োজনে সশস্ত্র আন্দোলনের পূর্ব প্রস্তুতি স্বরূপ। ’৭৩ সালের বসন্তকালে প্রশিক্ষণ শেষে সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রাম (সাংগঠনিক পর্যায়ে) কয়েকটি সামরিক জোন এবং সেক্টরে বিভক্ত করা হলো। শুরু হলো সাংগঠনিক কার্যক্রম। পার্টি সংগঠনের শুরুতে পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি সমান্তরাল সরকার (প্যারালেল গভর্ণমেন্ট) কাঠামোগত সাংগঠনিক কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছিল। সামরিক সংগঠনের পাশাপাশি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ইত্যাদি কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছিল। পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারি প্রশাসন একেবারে নীরব-নিস্তব্দ করে রাখা হয়েছিল। সরকারি কোর্ট কাছারিতে জুম্মদের মধ্যে আসামী বলতে রাজনৈতিক মামলা ছাড়া অন্য কোনো মামলার আসামী নেই বললেই চলে। এক পর্যায়ে ১৯৭৬-৭৭ সালে গঠিত হয়েছিল বিশেষ কোম্পানী, এফ কোম্পানী, ই কোম্পানী ইত্যাদি ফাইটিং ইউনিটগুলো। কেন্দ্রীয় কার্যালয় (জিএইচকিউ) এর সাথে থাকতো বিশেষ কোম্পানী। কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকতো বিশেষ সেক্টর এলাকায়। সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিবাহিনীর সাংগঠনিক অঞ্চলে পরিণত হলো।
১৯৭৬-৭৭ সাল শান্তিবাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র যুদ্ধ সংঘটিত হয় সরকারি বাহিনীর সাথে। এরপর ১৯৭৯ সালে সরকার সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামকে উপদ্রুত অঞ্চল ঘোষণা করে। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে সর্বত্র হেলিকপ্টারযোগে বিবৃতি ও প্রচারপত্র ছিটিয়ে দেয়, যাতে লেখা থাকতো সশস্ত্রভাবে সরকারের সাথে হাত মেলালে শান্তিবাহিনী সদস্যদের জন্য তথাকথিত সুযোগ-সুবিধা দানের প্যাকেজ। হাতিয়ারসহ পুরস্কার বাদেও শিক্ষাগত যোগ্যতানুযায়ী সরকারি চাকরির লোভ দেখানো হতো। অপরদিকে স্থানীয় ক্যাম্প কম্যান্ডারগণ পার্টি সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের ক্যাম্পে ডেকে পাঠিয়ে আত্মসমর্পণ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ত্যাগ করে সরকারি দলের রাজনীতিতে চলে আসার আহ্বান জানাতেন। এই সংকটাপন্ন অবস্থা মোকাবিলায় জুম্ম জনগণই ছিল যথেষ্ট। এব্যাপারে পার্টিকে কোনোরকম মাথা ঘামাতে হয়নি। তখন এম এন লারমা ছিলেন মাইনী দীঘিনালার ধনপাতায়। আর বর্তমান পার্টি সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা ছিলেন (১৯৭৫-১৯৭৯) বাংলাদেশ কারাগারে। ১৯৮০ সালের ২২ জানুয়ারি তিনি জেল থেকে বেকসুর খালাস পাবার পর আবারো পার্টিতে যোগদান করেন। পরিস্থিতির দ্রুত মোড় ঘুরে যায়। সরকারি বাহিনীর সাথে নবোদ্যগে সংঘর্ষ শুরু হয়।
১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারি এই শান্তিবাহিনী সৃষ্টি নাহলে যুগ যুগ ধরে পশ্চাদপদ জুম্ম জাতি কখনো নিপীড়নকারী শাসক-শোষক গোষ্ঠীর নির্মম নির্যাতন থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখতো না। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে পেশকৃত দাবি প্রত্যাখ্যাত হলে দাবি আদায়ের জন্য সশস্ত্র আন্দোলেনের বিকল্প কিছুই থাকে না, এই বাহিনী গঠনের মাধ্যমে সেটা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্বের যে কোনো দেশে কোনো নিপীড়িত জাতি মুক্তি পেতে চাইলে তাকে অবশ্যই এই বাহিনী গঠন করতে হবে। এই রকম একটা গণমুক্তি বাহিনী না থাকলে সেদেশের মুক্তিকামী জনগণের অস্তিত্ব রক্ষার বিকল্প কোনো উপায় থাকে না। শান্তিবাহিনী বা অন্য যেকোনো নামে হোক না কেন এই বাহিনীর মূল ভিত্তি হচ্ছে জুম্ম জনগণ। তাই বলা হয়ে থাকে জনগণই শক্তির উৎস।