হিল ভয়েস, ১১ জানুয়ারি ২০২২, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলার পর বিলাইছড়ি উপজেলায়ও সেনাবাহিনীর অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। জুরাছড়িতে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন হয়রানি, বাড়ি তল্লাসি ও সম্পত্তি আত্মসাতের খবরে বিলাইছড়ি এলাকার জুম্ম জনগণের মধ্যেও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে সেনাবাহিনীর জনৈক লেফটেন্যান্টের নেতৃত্বে ২০ জনের একটি সেনাদল বিলাইছড়ির ঢেবার মাধা নামক গ্রামে যায়। এই সেনা সদস্যরা তাদের হাতে থাকা একটি মানচিত্র অনুসারে গ্রামের ও আশেপাশের বিভিন্ন রাস্তাগুলিতে ঘোরাফেরা ও পর্যবেক্ষণ করার পর বিলাইছড়ি সেনা জোনে ফিরে যায় বলে জানা যায়।
অপরদিকে প্রায় একই সময়ে সীমান্তবর্তী জুরাছড়ি উপজেলার শীলছড়ি সেনা ক্যাম্প হতে বিলাইছড়ির বটতলী মোনে (পাহাড়) এসে বেশ কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান গ্রহণ করার পর আবার সেনা ক্যাম্পে চলে যায়।
এদিকে বিলাইছড়ির ধুপশীল সেনা ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল শালবাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং তক্তানালা সেনা ক্যাম্প, ফারুয়া সেনা ক্যাম্প, শুক্করছড়ি সেনা ক্যাম্প ও তাংকৈতাং সেনা ক্যাম্প থেকেও যৌথভাবে প্রায় ১২০ জনের একটি সেনাদল লতা পাহাড় এলাকায় অবস্থান নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আগামীকাল সেনা সদস্যের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা হবে জানা গেছে।
অচিরেই বিভিন্ন গ্রামে ও পাহাড়ে সেনা অভিযান শুরু করা হবে বলে জানা গেছে। সেনাবাহিনীর এই জমায়েত ও অভিযানের পাঁয়তারার খবরে এলাকার সাধারণ জুম্ম গ্রামবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ ও নানা আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিলাইছড়ির পার্শ্ববর্তী জুরাছড়ি উপজেলায় প্রায় ১৬ দিনব্যাপী (২১ ডিসেম্বর ২০২২-৬ জানুয়ারি ২০২৩) এক সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানে সেনা সদস্যরা স্থানীয় জুম্মদের ব্যাপক হয়রানি, বাড়িতে তল্লাশিসহ, বিনামূল্যে ইচ্ছেমত জুম্মদের গৃহপালিত গরু, ছাগল, মোরগ-মুরগী ও চাল ভোজন করে। ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধকে শীতের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আটক রাখে এবং স্থানীয় জুম্ম গাছ বাগানের মালিক ও ব্যবসায়ীর ৬৬১৬টি সেগুন গাছের গুড়ি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জব্দ করে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা বলে জানা গেছে। সেনা নির্যাতনের ভয়ে গ্রামবাসী অনেকেই তীব্র শীতের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।