হিল ভয়েস, ১ জানুয়ারি ২০২৩, বিশেষ প্রতিবেদক: পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলাসহ দেশের উপকূল অঞ্চলেও সেনা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই কর্তৃক আদিবাসী রাখাইন জনগোষ্ঠীর নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত পরিচিতি সংগ্রহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেকে এটাকে সেনাবাহিনীর আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর কর্তৃত্ব আরোপ ও সাধারণ প্রশাসনের উপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত বলে মনে করছেন।
উপকূল অঞ্চলের স্থানীয় এক সূত্রে জানা যায় যে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের শেষান্তে পটুয়াখালী জেলার ডিজিএফআইয়ের লোক পরিচয় দিয়ে জনৈক ব্যক্তি ‘ব্যক্তিগত পরিচিতি (রাখাইন)’ একটি ফরম রাখাইন সম্প্রদায়েরর নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের নিকট সরবরাহ করেন এবং উক্ত ফরম পূরণ করে অতিসত্ত্বর জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
উক্ত ফরমে নাম ও ছবি, পিতার নাম, বাংলাদেশে স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানা, বাংলাদেশের বাইরে ঠিকানা, জন্ম তারিখ, বয়স, সনাক্তকারী চিহ্ন, উচ্চতা এবং বর্ণ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ধর্ম, বৈবাহিক অবস্থা, পারিবারিক পরিচিতির মধ্যে পিতা-মাতা ও ভাই-বোনের তথ্যাবলী, স্বামী/স্ত্রীর নাম, ছেলে-মেয়ের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, মোবাইল নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, ইমেইল ঠিকানা, ফেসবুক আইডি, বিশেষ যোগ্যতা, সম্প্রদায়ের জন্য অবদান, সামাজিক বা রাজনৈতিক সংগঠন বা দলের সাথে সম্পৃক্ততা, রক্তের গ্রুপ, বিদেশী লিঙ্ক বা সম্পৃক্ততা, সম্ভাব্য কার্যক্রম, আর্থিক অবস্থা, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ইত্যাদি ২৫ প্রকার তথা চাওয়া হয়েছে।
এভাবে আদিবাসী রাখাইন জনগোষ্ঠীর নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা সেনা গোযেন্দা সংস্থার কাজ কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অন্যদিকে সুনিদিষ্টভাবে রাখাইন জনগোষ্ঠীর জন্য নিদিষ্ট ফরম তৈরি তথ্য সংগ্রহের পেছনে ডিজিএফআইয়ের কী উদ্দেশ্যই রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্নের উদ্রেক করেছে।
বিশেষ করে এভাবে রাখাইন জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ফরম তৈরি করে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের ফলে রাখাইন জনগোষ্ঠীর মধ্যে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।