হিল ভয়েস, ১৮ আগস্ট ২০২২, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে স্বাধীন পক্ষগুলোর জন্য অবাধ প্রবেশাধিকারের দুয়ার খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে সরকারি সফর শেষে মিশেল ব্যাচেলেট বাংলাদেশ সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানান।
১৭ আগস্ট ২০২২-এ জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, “আমি সহিংসতা বা জমি জবরদখল থেকে সংখ্যালঘু গোষ্ঠী বিশেষ করে হিন্দু এবং আদিবাসীদের সুরক্ষার জন্য গুরুত্বারোপের ওপর জোর দিয়েছি। ২৫ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি সম্পাদনা করা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্রমাগত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি এবং বেসামরিকীকরণের প্রয়োজনীয়তার সাথে স্বার্থে, আমি শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং স্বাধীন পক্ষগুলোকে সেই এলাকা পরিদর্শনের জন্য অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছি।”
মিশেল ব্যাচেলেট আরও বলেন, মানবাধিকার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সংবিধান, আইন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের একটি দৃঢ় কাঠামো রয়েছে। বাংলাদেশ হচ্ছে জাতিসংঘের সকল মৌলিক মানবাধিকার আন্তর্জাতিক চুক্তি/আইনের অনুস্বাক্ষরকারী পক্ষ। তবে এখনো জোরজবরদস্তি অন্তর্ধান থেকে সকল ব্যক্তিদের সুরক্ষামূলক আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুস্বাক্ষর করেনি। তিনি এই কনভেনশনকে অনুস্বাক্ষরের জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন।
স্বল্প-মেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী উভয় প্রকার জোরপূর্বক অন্তর্ধানের ক্ষেত্রে এবং যথাযথ প্রক্রিয়া ও বিচারিক সুরক্ষার অভাব সম্পর্কে ক্রমাগত ও উদ্বেগজনক অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে তদন্তে অগ্রগতির অভাব এবং ন্যায়বিচারে অন্যান্য বাধার কারণে দীর্ঘস্থায়ী হতাশার প্রেক্ষিতে, তিনি সরকারকে একটি স্বাধীন ও বিশেষ কর্মব্যবস্থা প্রবর্তন করতে উত্সাহিত করেছেন যা বলপূর্বক গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের অভিযোগের তদন্ত করার ক্ষেত্রে ভিকটিম, তাদের পরিবার এবং সুশীল সমাজের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।
“আন্তর্জাতিক মানদন্ডের সাথে সঙ্গতি রেখে কীভাবে এই ধরনের কমিটি গঠনের পরিকল্পনা করা যায় সে বিষয়ে আমার অফিস পরামর্শ প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে” বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
মিশেল ব্যাচেলেট আরও জোর দিয়েছিলেন যে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ইউনিফর্মধারী কর্মীদের সবচেয়ে বড় যোগানদার হিসেবে, বাংলাদেশের উচিত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক মানবাধিকার যাচাইয়ের জন্য একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।