হিল ভয়েস, ৯ আগস্ট ২০২২, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আজ ৯ আগস্ট ২০২২ সকাল ১১:১৫ টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সকল আদিবাসী শিক্ষার্থীরা জাতিসংঘ ঘোষিত ‘ঐতিহ্যগত বিদ্যা সংরক্ষণ ও বিকাশে আদিবাসী নারী সমাজের ভুমিকা’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসে এক র্যালি ও সমাবেশের আয়োজন করে। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে শুরু হয়ে ডায়না চত্বর প্রদক্ষিণ করে স্মৃতিসৌধে এসে সমবেত হয়। র্যালিতে প্রায় অর্ধশতাধিক আদিবাসী শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
র্যালি শেষে মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী কোকো সাইন মারমা’র সঞ্চালনায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জুম্ম ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি বিশাল চাকমার সভাপতিত্বে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সমতল আদিবাসী ছাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জুলিয়ান হেমরম জয়, সমতল আদিবাসী ছাত্র সংগঠনের সহ-সভাপতি স্বপন টপ্য, অর্থনীতি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী নীল মনি কিস্কু, অর্থনীতি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী চাইন্দাওয়াং মারমা। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিপার্টমেন্টের মেধাবী শিক্ষার্থী অংসিংমং মারমা।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, বাংলাদেশে বসবাসরত আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীগুলো বর্তমানে জাতীয় অস্তিত্ব হারানোর পথে রয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত ভূমির অধিকার হারাচ্ছে, প্রতিনিয়ত তাদের ভূমি বেদখল করা হচ্ছে। তাদের যথাযথভাবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি না দেওয়ার ফলে তারা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে তাদের ওপর প্রতিনিয়ত সাম্প্রদায়িক হামলা, নারীদের ধর্ষণ ও নির্যাতন, ভূমি বেদখল ইত্যাদি অমানবিক ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, জাতিসংঘ কর্তৃক আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস স্বীকৃতির ২৮ বছর পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত তার দেশে থাকা আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়নি। সেজন্য এদেশের আদিবাসীরা প্রতি পদে পদে বিভিন্ন হয়রানির শিকার হচ্ছে এবং উন্নয়নের নামে আদিবাসীদের নিজ ভূমি থেকে সুকৌশলে উচ্ছেদ করা হচ্ছে।
উপস্থিত বক্তারা আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন প্রতিষ্ঠা, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও শোষণ-বঞ্চনা প্রতিরোধে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ জানান। এছাড়াও বাংলাদেশ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক গত ১৯ জুলাই প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে আদিবাসী শব্দটি ব্যবহার না করার মতো অসাংবিধানিক নির্দেশনার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেন তারা।