হিল ভয়েস, ৭ জুলাই ২০২২, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) প্রতিনিধি অগাস্টিনা চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন সম্পর্কিত ২০১১ সালের অধিবেশনে গৃহীত জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক স্থায়ী ফোরাম (পিএফআইআই) এর সুপারিশ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি গত ৭ জুলাই ২০২২-এ জেনেভায় অনুষ্ঠিত এজেন্ডা আইটেম ১০: ভবিষ্যত বিষয়ভিত্তিক গবেষণা সম্পর্কে ফোকাস সহ বিশেষজ্ঞ কর্মব্যবস্থার ভবিষ্যত কাজ (আদিবাসীদের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠক)-এ অংশগ্রহণ করে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের আদিবাসীদের অধিকার সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কর্মব্যবস্থার ১৫তম অধিবেশনে এই আহ্বান জানান।
অগাস্টিনা চাকমার বক্তব্যের সম্পূর্ণ পাঠ নিচে দেওয়া হল:
আমাকে বলতে দেওয়ার জন্য চেয়ারকে ধন্যবাদ।
এমরিপ’এর বর্তমান অধিবেশনে দেওয়া বিবৃতিতে, আমরা, বাংলাদেশের আদিবাসী প্রতিনিধিরা উল্লেখ করেছি যে, বর্তমান সরকার ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পরিবর্তে সামরিক সমাধানের নীতি গ্রহণ করেছে।
এই ক্ষেত্রে, আমি পার্বত্য চট্টগ্রামে ৫ই জুলাই ২০২২ তারিখে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার উদাহরণ দিচ্ছি। খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলায় আদিবাসী জুম্ম গ্রামবাসীর ৩৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভাংচুর করেছে বাঙালি সেটেলাররা। হামলাকারীদের প্রতিহত করতে গিয়ে অন্তত দুই জুম্ম গ্রামবাসী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এই অগ্নিসংযোগের সময় সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও হামলাকারী সেটলারদের প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আমরা অনুমান করতে পারি যে, সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। জুম্ম গ্রামবাসীদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হল জুম্ম জনগণকে উচ্ছেদ করা এবং তাদের জমি দখল করা।
প্রকৃতপক্ষে, সরকারের প্রশ্রয়ে সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের প্রধান বাধা হিসেবে ভূমিকা পালন করে চলেছে।
তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সমাধানে ‘অপারেশন উত্তরণ’ নামক একপ্রকার সামরিক শাসনসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর সকল অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
এমতাবস্থায়, আমি আদিবাসী ইস্যুতে জাতিসংঘের স্থায়ী ফোরামের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য বিশেষজ্ঞ কর্মব্যবস্থা এবং মানবাধিকার কাউন্সিলের কাছে আবেদন জানাতে চাই।
এটি ২০১১ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়ন এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কাজ করার আগে সামরিক কর্মীদের এবং ইউনিটের মানবাধিকার রেকর্ডের যাচাইয়ের জন্য সুপারিশ গৃহীত হয়েছিল।
আবার আমাকে বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।