হিল ভয়েস, ৩০ এপ্রিল ২০২২, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন এলাকায় এক নিরীহ জুম্ম প্রথমে মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের কর্তৃক অমানুষিক নির্যাতন এবং পরে সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম চিনুমং মারমা (৩০), পিতা-মৃত মংহ্লাচিং মারমা। চিনুমং মারমার মূল বাড়ি রাজস্থলী উপজেলার ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামে। তার স্ত্রীর বাড়ি বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়া গ্রামে। বিয়ের পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাঙ্গালহালিয়ার হেডম্যান পাড়া গ্রামে তার শশুর বাড়িতেই বসবাস করছেন।
চিনুমং মারমা একজন নিরীহ গ্রামবাসী এবং পেশায় রিকশা চালক ও দিনমজুর বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল ২০২২ বিকালের দিকে চিনুমং মারমা কাজ শেষে বাজার থেকে তরিতরকারি নিয়ে শশুর বাড়িতে আসেন। সন্ধ্যা নেমে আসলে বাড়ির উঠোনে বের হওয়ার পরপরই মগ পার্টির দুই সন্ত্রাসী চিনুমং মারমাকে চেপে ধরে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে দেয় এবং অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা সারারাত ধরে চিনুমং মারমাকে মারধর করে এবং ইলেকট্রিক শক দিয়ে নির্যাতন করে। নির্যাতন করতে করতে এক পর্যায়ে মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা চিনুমং মারমাকে জোরপূর্বক সে একজন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’র (পিসিজেএসএস) তথাকথিত সশস্ত্র সদস্য বলে স্বীকার করতে বাধ্য করে।
সূত্রটি আরও জানায়, এর পরদিন ২৯ এপ্রিল ২০২২ সকালে অংসিংনু মারমার বাঁধা চোখ খুলে দেওয়া হয়। এসময় চিনুমং মারমা দেখতে পায় যে, সে বাঙ্গালহালিয়া সেনা ক্যাম্পে রয়েছে এবং তার সামনে একটি অস্ত্র রাখা হয়েছে। এরপর বাঙ্গালহালিয়া সেনা ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা চিনুমং মারমাকে জেএসএস’এর সশস্ত্র সদস্য, তবে রান্নাবান্না কাজে নিয়োজিত বলে স্বীকার করতে বাধ্য করে।
পরে সেনাবাহিনী তাদের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে একটি একনলা বন্দুক ও গুলিসহ অংসিংনু মারমাকে আটক করেছে বলে বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা দাবি করে।
এরপর সেনাবাহিনী মিথ্যা মামলায় জড়িত করে নিরীহ চিনুমং মারমাকে কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করেছে বলে জানা গেছে।