হিল ভয়েস, ১০ এপ্রিল ২০২২, বান্দরবান: বান্দরবান পার্বত্য জেলাধীন সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নে তিন গ্রামের মারমা যুবক-যুবতীদের জোরপূর্বক সেনাবাহিনী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী মগ পার্টিতে যোগদানে বাধ্য করা হচ্ছে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে এলাকার যুবক-যুবতী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
গতকাল ৯ এপ্রিল ২০২২ রাতে যোগদানে অনিচ্ছুক তিনটি গ্রামের প্রায় ২৫ জন মারমা যুবক-যুবতী ভয়ে পালিয়ে গিয়ে বান্দরবান সদরে আশ্রয় নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন ধরে মারমা ন্যাশনাল পার্টির (মগ পার্টি) সন্ত্রাসীরা কুহালং ইউনিয়নের চেমী ডলু পাড়া, আমতলী পাড়া ও ভাঙামুড়া গ্রামের যুবক-যুবতীদের মগ পার্টিতে যোগদান করার জন্য বাধ্য করার চেষ্টা করে আসছে। কিন্তু যুবক-যুবতীরা মগ পার্টিতে যোগদানে অনীহা ও অনিচ্ছা প্রকাশ করে আসছিল। এক পর্যায়ে বিপদের আশংকা করে ওই তিন গ্রামের ২৫ জন যুবক-যুবতী গতকাল রাত ৯:০০ টার দিকে বান্দরবান সদরে পালিয়ে আসে।
চেমী ডলু পাড়া, আমতলী পাড়া ও ভাঙামুড়া গ্রামসমূহ আমতলী সেনা ক্যাম্পের পাশে অবস্থিত বলে জানা গেছে। গ্রামবাসীদের তথ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নাকের ডগায়ই মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা সেখানে সশস্ত্রভাবে ঘোরাফেরা করছে এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী এক যুবতী মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা তাদেরকে (যুবক-যুবতীদের) মগ পার্টির আস্তানায় যেতে এবং তাদের দলে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করছে বলে জানান। ওই যুবতী আরও বলেন, ‘আমাদের ইচ্ছে নেই মগ পার্টিতে যোগদান করার। তাই আমরা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে এসেছি। আরো অনেকেই চট্টগ্রামসহ বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে পালিয়ে গেছে।’
পালিয়ে আসা আরেক যুবক জানান, ‘জোরপূর্বক মগ পার্টিতে যোগদানের খবর প্রচার করা হলে আমাদের ক্ষতি হবে এবং মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেয় সন্ত্রাসীরা।’ ইতোমধ্যে সন্ত্রাসীরা চার গ্রামবাসীকে খুব নির্যাতন করেছে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বৃদ্ধ গ্রামবাসী জানান, ‘এইগুলি সব বর্তমান সরকারের স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের কাজ। জেএসএস’র বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়ার জন্য প্রত্যেক গ্রাম থেকে যুবক-যুবতীদের তুলে নিয়ে মগ পার্টিতে যোগদান করতে বাধ্য করা হবে।’
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, গতকাল সেনামদদপুষ্ট ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীদের প্রশাসনিক দায়িত্ব থাকা অনুপম চাকমা ও মগ পার্টির সাথে প্রশাসনের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা প্রান্ত ঘোষ রনি পাইছড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লক্ষে গোপনে তিন নাম্বার রাবার বাগান এলাকায় এক গোপনে বৈঠক করেছে।
সূত্রটি আরো জানায়, উভয় সন্ত্রাসী দলই টংকাবতী এলাকার জনগণকে নানাভাবে হয়রানি ও নিপীড়ন চালাচ্ছে। তারা বিভিন্ন মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে গ্রামবাসী অনেকের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করছে।