হিল ভয়েস, ১৩ মার্চ ২০২২, চট্টগ্রাম: “পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন সহ জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুব ও ছাত্র সমাজ সামিল হোন”- স্লোগানে পিসিপি চট্টগ্রাম পলিটেকনিক শাখার বার্ষিক শাখা সম্মেলন ও ১১ তম কাউন্সিল গত শুক্রবার (১১ মার্চ,২০২২) সম্পন্ন হয়েছে।
কাউন্সিলে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক শাখার দপ্তর সম্পাদক সেতু চাকমার সঞ্চালনায় ও অর্থ সম্পাদক দীপল চাকমার সভাপতিত্বে বার্ষিক শাখা সম্মেলন ও ১১ তম কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণ চাকমা, প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিপি, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি সুপ্রিয় তঞ্চঙ্গা, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি শাখার সাধারণ সম্পাদক নরেশ চাকমা, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ সভাপতি সৌরভ চাকমা ও ছাত্র ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সভাপতি এ্যানি সেন প্রমুখ। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জ্ঞান সাগর চাকমা এবং সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন হেলেন চাকমা।
আলোচনা সভা শুরুতে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বীর শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রাবণ চাকমা বলেন, আমরা পাহাড়ের মানুষ, মাটির মানুষ, ঝিরি-ঝর্ণার মানুষ এবং আমাদের মনগুলো ঝিরি-ঝর্ণার পানির মতো শীতল। আমাদের উচিত, পাহাড়ের সেই শীতল পানির মতো নিজেকে একজন সৎ সাহসী, প্রগতিশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা।
তিনি আরো বলেন, অনেক আদিবাসী পরিবার রয়েছে যারা চাকরি সূত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে অবস্থান করেন। সেই সকল অভিভাবকদের উচিত তাদের সন্তানদের পার্বত্য চট্টগ্রাম সর্ম্পকে ধারণা দেয়া। তিনি পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে ছাত্র ও যুব সমাজকে আন্দোলন সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে সুপ্রিয় তঞ্চঙ্গা বলেন, আজ যে সকল নবীনরা পিসিপি’র পতাকাতলে চলে আসছেন আপনাদের প্রতি আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনারা সৎ ও নিষ্ঠার সাথে স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করবেন এবং জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সামিল হবেন।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে আমাদের আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং ছাত্র ও যুব সমাজকেই সে হাল ধরতে হবে।
বিশেষ অতিথি বক্তব্যে নরেশ চাকমা বলেন, আপনারা যারা পিসিপি তে নতুন যুক্ত হচ্ছেন এবং যারা যুক্ত রয়েছেন তাদের সকলের কাজ হচ্ছে প্রথমে পাহাড় সম্পর্কে অধ্যয়ন করা। কারন আমাদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে, পাহাড়ে নিপীড়িত, শোষিত জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার করা।
তিনি আরো বলেন, ১৯৯৭ সালে ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তিতে যে শুধু সশস্ত্র “শান্তিবাহিনী” দের অবদান ছিলো তা নয়, তাতে সাধারণ জনগণ ও যুব সমাজের অবদানও ছিলো অপরিসীম এবং ভবিষ্যতেও সাধারণ জনগণ ও ছাত্র-যুব সমাজের জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অধিকতরভাবে অংশগ্রহণ করা অতীব জরুরি।
সৌরভ চাকমা বলেন, শাসকগোষ্ঠী আমাদের উপর যে শাসন, শোষণ চালাচ্ছে তা থেকে মুক্তির উপায় সংগ্রামের মধ্যেই নিহিত রয়েছে। শাসকদের কারাগার থেকে পাহাড়কে মুক্ত করতে ছাত্র ও যুব সমাজেকে সংগ্রামে অংশগ্রহণ করার তীব্র আহ্বান জানান।
আলোচনা শেষে দীপল চাকমা কে সভাপতি, হেলেন চাকমা কে সাধারণ সম্পাদক এবং সেতু চাকমা কে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট পিসিপি, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক শাখা গঠন করা হয়। নির্বাচিত কমিটিকে শপথ পাঠ করান পিসিপি, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক বিনিময় চাকমা।