হিল ভয়েস, ২৯ মার্চ ২০২২, বিশেষ প্রতিবেদক: আজ (২৯ মার্চ) পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের অন্যতম প্রচার সৈনিক ড. রামেন্দু শেখর দেওয়ানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী।
তিনি গত বছর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারের নিজ এ্যাপার্টমেন্টে ৮৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ২৯ মার্চ পুলিশ এ্যাপার্টমেন্ট থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করেছিল। তিনি ১৯৩২ সালে ১৭ জানুয়ারি খাগড়াছড়ির খবংপয্যায় জন্মগ্রহণ করেন।
ড. আর এস দেওয়ান উচ্চশিক্ষার বৃত্তি নিয়ে এমফিল করার জন্য ১৯৬৭ সালের ৩ নভেম্বর লন্ডনে পাড়ি জমান।সেখানে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কুইন্স এলিজাবেথ কলেজ থেকে এমফিল সম্পন্ন করেন এবং এরপর ম্যানচেষ্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি শুরু করে, যা ১৯৮০ সালে সম্পন্ন করেন।
লন্ডনে অধ্যয়নকালে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের জাতীয় জাগরণের অগ্রদূত মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার আহ্বানে ড. আর এস দেওয়ান পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনের পক্ষে আন্তর্জাতিক প্রচারকার্যে যুক্ত হয়ে পড়েন। উচ্চশিক্ষার পর তিনি আর দেশে ফিরে আসেননি এবং যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে আন্দোলনের পক্ষে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক প্রচারকার্য চালিয়ে যান।
ড. দেওয়ানই প্রথম ব্যক্তি যিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গণে তুলে ধরেছিলেন এবং জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনের পক্ষে জোরালো আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তোলেন।
গত ২৬-২৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আনরেপ্রেজেন্টেড ন্যাশনস এন্ড পিপলস অর্গানাইজেশন (ইউএনপিও)-এর সাধারণ পরিষদের সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিনিধিদলের প্রস্তাবনায় ড. আর এস দেওয়ানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তাঁকে স্মরণ করা হয়।
ইউএনপিও’র সাধারণ পরিষদের সভার শুরুতেই ড. আর এস দেওয়ানের জীবন, সংগ্রাম ও অবদানের কথা মহাসচিব রাল্ফ বুনচে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ড. আর এস দেওয়ান কেবল জুম্ম জনগণের প্রতিনিধি ছিলেন না, তিনি বিশ্বের অপ্রতিনিধিত্বশীল ও প্রান্তিক জাতি ও জাতিগোষ্ঠীর মুখপাত্র ছিলেন।
ড. আর এস দেওয়ানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আগামী ২ এপ্রিল ২০২২, শনিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬:৩০ ঘটিকায় প্রীতিবিন্দু চাকমা ও প্রধীর তালুকদারের সঞ্চালনা ও ব্যবস্থাপনায় সিএইচটিলিজেন্ড.কম-এর উদ্যোগে এক আন্তর্জাতিক স্মরণসভার আয়োজন করা হবে। এতে জুম্ম অধিকার কর্মীসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সুরক্ষা কর্মীবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
এছাড়া সেদিন সিএইচটিলিজেন্ড.কম-এর উদ্যোগে ড. আর এস দেওয়ানের আন্তর্জাতিক প্রচারকার্যের দলিলপত্রাদি নিয়ে একটি ডিজিটাল মিউজিয়াম উদ্বোধন করা হবে এবং একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে।