হিল ভয়েস, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, বান্দরবান: বান্দরবানের রাজবিলা ইউনিয়নে সেনাবাহিনী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ মদদপুষ্ট মগপার্টির সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ৪ জন গ্রামবাসী বাড়ি তল্লাসী এবং একজন গ্রামবাসীকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, গতকাল রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯:১৫ ঘটিকার সময় মগপার্টি নামে খ্যাত মারমা লিবারেশন পার্টি আনুমানিক ১৫-২০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙালহালিয়া থেকে এসে বান্দরবান সদর উপজেলার ১নং রাজবিলা ইউনিয়নের ৩ন ওয়ার্ডের রাজবিলা তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ার নিবাসী খোকন তঞ্চঙ্গ্যা (৪০), পিতা- মৃত দিরি মোহন তঞ্চঙ্গ্যা-এর বাড়ি ঘেরাও করে।
দূর থেকে দেখতে পেয়ে খোকন তঞ্চঙ্গ্যা তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। এরপর মগপার্টি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা খোকন তঞ্চঙ্গ্যার বাড়ি ঘেরাও করে তল্লাশি করতে থাকে। তাকে না পেয়ে সন্ত্রাসীরা প্রায় ১০-১৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে।
তার ১৫-২০ মিনিট পর খোকন তঞ্চঙ্গ্যার আপন ছোট ভাই রতন তঞ্চঙ্গ্যা (৩৬), পিতা মৃত দিরি মোহন তঞ্চঙ্গ্যার বাড়ি ঘেরাও করে এবং রতন তঞ্চঙ্গ্যাকে খোঁজ করে। সে সময় সন্ত্রাসীরা রতন তঞ্চঙ্গাকে মারধর করে মাথা ও সমস্ত শরীর জখম করে রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞান করে রেখে চলে যায়।
মগ পার্টি সদস্যরা খোকন তঞ্চঙ্গ্যা ও রতন তঞ্চঙ্গ্যার বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর রাত আনুমানিক ১০:১৫ ঘটিকার সময় মগপার্টির সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা রাজবিলা মধ্যম পাড়ার নিবাসী চিংহ্লাউ মারমা (৫৫), পিতা মৃত থোয়াইঅং মারমার বাড়ি ঘেরাও করে এবং তাকে খোঁজাখুজি করে।
চিংহ্লাউকে না পেয়ে রাজবিলা উপর পাড়ার মংতো মারমা (কার্বারী)-এর বাড়ি দেখাতে চিংহ্লাউ ছেলেকে সঙ্গে নিতে উদ্যত হয়। পরে চিংহ্লাউ মারমার স্ত্রী মগ পার্টির সদস্যদের কাছে ছেলেকে ফেরত পাওয়ার জন্য পা ধরে ছেলের জীবন ভিক্ষা চাইলে তখন সন্ত্রাসীরা ছেলেকে রেখে চলে যায়।
এরপর রাত আনুমানিক ১০:২০ ঘটিকার সময় একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের রাজবিলা মধ্যম পাড়ায় হানা দেয়। তখন পাড়ায় গিয়ে মংতো মারমা কার্বারী (৩৮), পিতা- মৃত মংপ্রু মারমা-এর বাড়ি ঘেরাও করে এবং বাড়ি তল্লাশি করতে থাকে। এসময় কার্বারীর স্ত্রীর কাছ থেকে তার স্বামী কোথায় আছে এবং কোথায় থাকে ইত্যাদি জিজ্ঞাসা করে এবং বাড়ির যাবতীয় আসবার পত্রসহ তছনছ করে ঘরের দরজা জানালা ভেঙে দিয়ে যায়।
উল্লেখ্য যে, রতন তঞ্চঙ্গ্যাকে মারধরের পর সন্ত্রাসীরা গুরুতর আহত অবস্থায় রেখে যায়। আজ সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে চিকিৎসার জন্য রতন তঞ্চঙ্গ্যাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
যাদের বাড়ি তল্লাসী করেছে ও যাকে মারধর করেয়ে তাঁরা এক সময় জেএসএস-এর সমথর্ক ছিলেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে তারা নিস্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছেন এবং তাদের নিজ নিজ পারিবারিক কাজ কর্ম নিয়ে থাকেন।
উল্লেখ্য যে, বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অর্থ বিভাগের প্রধান চীফ কালেক্টর কালাচোখা চাকমা অটলকে ধর্মত ছেলে হিসেবে গ্রহণ করেছে। ক্যশৈহ্লা এই সন্ত্রাসীকে তাঁর নিজের স্বার্থে নিরাপত্তা দিতে বিশেষ বাহিনীর হিসাবে ব্যবহার করে চলছে। বিশেষ সূত্রে জানতে পারি, প্রত্যেক সপ্তাহে একবার করে ক্যশৈহ্লার সরকারি বাসভবনে (বাংলোর) সাক্ষাৎ করতে নিয়মিত আসা যাওয়া করে বলে জানা গেছে।