সোহেল তঞ্চঙ্গ্যা
একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয় সে জাতির ছাত্র ও যুব সমাজের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কার্মকান্ডের উপর। রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড নির্ভর করছে তার শিক্ষা এবং জ্ঞান অর্জনের উপর। কিন্তু জ্ঞান অর্জন আর শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম শিক্ষার্থীদের বড় একটি সংকট হচ্ছে পারিবারিকভাবে পড়াশুনার অর্থ যোগান দিতে না পারা। এতে করে তারা অধিক পরিমাণে শারীরিক বা মানসিক ভোগান্তিতে পড়ে। ফলশ্রুতিতে অর্থের অভাবে তারা পড়াশুনা বাদ দিয়ে পারিবারের জন্য অর্থ যোগান দিতে বাধ্য হয়। যেখানে উন্নত রাষ্ট্রে একজন শিক্ষার্থী ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সে কিভাবে রকেট তৈরি করে তার নকশা অঙ্কন করে, সেখানে আমাদের দেশে তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম শিক্ষার্থীদের মাঝে পারিবারিক দায়বদ্ধতা এসে দাঁড়ায়। ফলে সে শিক্ষার্থী উচ্চতর পর্যায়ে পড়াশুনা থেকে বঞ্চিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামে একদিকে রাষ্ট্রযন্ত্র কর্তৃক জুম্মদের ধ্বংস করার প্রয়াস অন্যদিকে শিক্ষা ক্ষেত্রে দূর্নীতির ছাপ। একজন জুম্ম পরিবার যেখানে মাসে নূন্যতম ১০,০০০ টাকা আয় করে সেখানে পড়াশুনা করার জন্য স্কুল বা কলেজ বাবদ ফি, শহরায়নের ফলে এখন একজন শিক্ষার্থী শহরে বসবাসের জন্য নূন্যতম ৪ থেকে ৫ হাজার বাসা ভাড়া টাকা, প্রাইভেট পড়ার জন্য একটি বিষয়ে ১,০০০ টাকা বরাদ্দ রাখতে হয়। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে অর্থনৈতিক অবস্থা ভঙ্গুর হওয়ায় একটি সাধারণ জুম চাষ করা পরিবার থেকে এত টাকা আয় করা মোটেও সম্ভব হয় না।
লক্ষ করার বিষয়, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা পয়েন্টের হিসাবে দিন দিন বৃদ্ধি করছে সরকার আর অপরদিকেও আদিবাসী কোটা বন্ধ হওয়ায় সেই সব প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতা পূরণ করতে না পারায় ভর্তিতে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। কিভাবে বা পারবে? একদিকে পারিবারিক অর্থনৈতিক ভঙ্গুর, অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রাথমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানগুলো যেখান থেকে একজন শিক্ষার্থী তার প্রাথমিক পড়াশুনার ধাপ অতিক্রম করে সেই সব প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত পরিমাণে শিক্ষক নেই, অবকাঠামো নেই। সাজেকের মতো জায়গা দুর্গম অঞ্চল হওয়ায় সেই সব স্থানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংকট প্রকট। অথচ সেই সাজেক অঞ্চলে সরকার স্থানীয় আদিবাসীদের উচ্ছেদ করে বিলাসবহুল রিসোর্ট তৈরি করেছে, কোটি টাকা খরচা করে মসজিদ তৈরি করে দিয়েছে। তারপরও সেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই।
গত ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সরকার রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন জুম্মকে প্রো-ভিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তার মধ্য দিয়ে আমরা কিছুটা ভাবতে পারি সরকার রাজনৈতিক কৌশলী খেলায় ভাল এগিয়ে। উল্লেখ করার মতো, অতীতের দিনগুলোর দিকে তাকালে আমরা কী দেখতে পাই? কাপ্তাই সুইডিশ পলিটেকনিক যেখানে একসময় ভর্তির ক্ষেত্রে জুম্মদের অগ্রাধিকার দেওয়া হতো, কিন্তু এখন সেখানে ৫ শতাংশ শিক্ষার্থীও ভর্তি হতে পারে কিনা সন্দেহ থেকে যায়। তার কারণ জুম্ম শিক্ষার্থীরা পারিবারিকভাবে অর্থনৈতিক ভঙ্গুর হওয়ায় প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিক পড়াশুনা করতে না পারায় তারা যোগ্যতার অভাবে সেখানে ভর্তি হতে পারে না। বর্তমান সময়ে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা মেডিকেল কলেজ জুম্মদের ক্ষেত্রে আর্শিবাদ নাকি অভিশাপ তা বুঝে উঠতে পারেনি জুম্মরা। তাহলে একজন অসচ্ছল আদিবাসী শিক্ষার্থী সে কিভাবে উচ্চ পর্যায়ে পড়াশুনা করতে পারবে।
এখন প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা কি তাহলে একটি অর্থনৈতিক সমস্যা? অতীতেও তৎকালীন সেনাশাসক জিয়াউর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে অর্থনৈতিক সমস্যা বলে চিহ্নিত করে “পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড” গঠন করেন। কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয় কিন্তু সমস্যার কি সমাধান মিলেছে? মিলেনি, বরং সমস্যা আরো জটিল হয়েছিল। পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে বুঝতে হলে প্রয়োজন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সঠিক দর্শন। তাইতো পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) বারংবার বলে আসছে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা একটি রাজনৈতিক ও জাতীয় সমস্যা।
তাই রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, দীর্ঘ দুই যুগ অতিক্রমের পরেও এই চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়িত হয়নি৷ যার ফলে চুক্তির মৌলিক বিষয়াদি যেমন- পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদ আইণ এখনো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। সাধারণ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা, পুলিশ, ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, বন ও পরিবেশ, পর্যটন, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়সহ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা এসব পরিষদে হস্তান্তর করা হয়নি। পাহাড়ে এখনও চার শতাধিক অস্থায়ী ক্যাম্পসহ ‘অপারেশন উত্তরণ’ এর নামে সেনা শাসন বলবৎ রয়ে গেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। ভারত-প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ জুম্ম উদ্বাস্তুদেরকে তাদের জায়গা-জমি প্রত্যর্পণ পূর্বক পুনর্বাসন করা হয়নি। চুক্তি অনুসারে পার্বত্যাঞ্চলে প্রযোজ্য আইন ও বিধি সংশোধিত হয়নি। সেটেলারদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে যথাযথ পুনর্বাসন প্রদান করা হয়নি। অপরদিকে সামরিক ও বেসামরিক আমলারাও চান না পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়িত হোক। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম দিন দিন কঠিন পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম ছাত্র ও যুব সমাজকে পরিস্থিতি বিষয়ে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা দরকার। সাধারণ জ্ঞান দিয়ে নয়, বরং রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে সেটি মূল্যায়ন করা জরুরী।
‘রাজনীতি’ মাত্র কয়েকটি বর্ণে গঠিত এই শব্দটি। হয়তো কারোর কাছে বোধগম্য এই শব্দটির অর্থ আবার কারোর কাছে না, আবার কেউইবা শুধু শুনেছেন বা উপলল্ধি করেন কিন্তু বাস্তবিক অর্থে শব্দটির অর্থ সম্পর্কে যেকেউ পরিষ্কার নয়। কেউ আবার এই শব্দটিকে মনে প্রাণে গ্রহণ করেন, কেউবা এই শব্দটিকে ঘৃণার চোখে দেখেন বা ভাবেন। তাহলে কী এই রাজনীতি? কেনই বা বর্তমান সমাজের মানুষ এই রাজনীতি শব্দটিকে পছন্দ বা অপছন্দ করে থাকেন।
রাজনীতি:
‘রাজনীতি’ যার ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘politics’। এটি গ্রিক শব্দ politica হতে politics শব্দে ব্যবহার করা হয়েছিল। রাজনীতির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে অনেকে অনেকভাবে ব্যাখ্যা করে থাকেন। মূলত রাজনীতি বলতে “রাষ্ট্রের শাসন প্রক্রিয়ায় সমাজবদ্ধ মানুষের কল্যান সাধনই রাজনীতি। অর্থাৎ কোনো শাসক বা রাজনৈতিক দল যখন রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের অভিপ্রায়ে প্রজাদের শাসন করে বা জনকল্যান শাসন করে তাই রাজনীতি”। বর্তমান একবিংশ শতাব্দী বিশ্বে এসে রাজনীতি যে কোথাও প্রয়োগ নেই এটি কেউ স্বীকার করতে পারবেন না? সেটি হোক অর্থনীতিতে, প্রতিষ্ঠানে বা সামাজিকগতভাবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজনীতি বিদ্যমান। এখন হয়তো প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক সেটি কিভাবে সম্ভব।
রাজনীতি করতে হলে একটি রাজনৈতিক দল থাকা আবশ্যক। কিন্তু এই রাজনৈতিক দল বা পার্টি বলতে কি বুঝায়? শ্রেণি বিভক্ত সমাজে স্ব স্ব শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা ও রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে যে কর্মসূচী প্রণয়ন পূর্বক যে সংগঠন গড়ে উঠে তাকে আমরা পার্টি বা রাজনৈতিক দল বলি। যখন এই রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে তখনই এই রাজনৈতিক দল সমস্ত কিছু রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যার ফলে একজন মানুষ হিসেবে তার নিত্য প্রয়োজনীয় যা কিছু প্রয়োজন সব কিছু অর্থাৎ সে কোথায় যাবে, কিভাবে যাবে, কোথায় অবস্থান করবে সেইসব কিছু একটি রাজনৈতিক দলই নির্ধারিত করে থাকে। ফলে কেউই রাজনীতির বাইরে নয়। কোনো না কোনো ভাবে একজন মানুষ রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত এবং পরিচালিত।
কিন্তু সব রাজনৈতিক দল কি জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে কাজ করে থাকে? এ প্রশ্নের উত্তর নাও আসতে পারে। তার কারণ বর্তমান পুঁজিবাদী বিশ্বে মানব জাতির মুক্তির স্বার্থ বিবেচনা না করে মুনাফার কথা বেশি চিন্তা করা হয়। যার ফলে এখনো মানব জাতির মুক্তির দিশা মেলেনি। এটা মানা আব্যশক যে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল কোন না কোন শ্রণির প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। যেমন- বুর্জোয়া শ্রেণি, পেটি বুর্জোয়া শ্রেণি, দক্ষিণপন্থী পেটি বুর্জোয়া শ্রেণি এবং সর্বহারা শ্রেণি এই কয়েকটি শ্রেণির স্বাভাবিকভাবে এক একটি রাজনৈতিক দল প্রতিনিধিত্ব করে থাকে।
শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির দিশা:
ঊনবিংশ শতকের জার্মান দার্শনিক কার্ল মার্ক্স যিনি একাধারে অর্থনীতিবিদ, ইতিহাসবিদ, সমাজ বিজ্ঞানী, রাজনৈতিক তাত্ত্বিক, সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী তিনিই একমাত্র কিভাবে মানব জাতি মুক্তির প্রশ্নের উত্তর দেখিয়েছিলেন। মার্ক্সের ইতিহাস দর্শন ঐতিহাসিক বস্তুবাদ বলে অধিক পরিচিত।
তাঁর সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতিসংক্রান্ত তত্ত্বসমূহ মার্কসবাদ নামে পরিচিত। তিনি দেখিয়েছিলেন “দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ প্রয়োগ করে পূর্বতন সমাজব্যবস্থাগুলোর মতো পুঁজিবাদ ও তার অন্তঃসত্ত্ব বিভেদ ও শ্রেণি সংগ্রামের দরুন ভেঙ্গে পড়বে এবং পুঁজিবাদের গর্ভে সমাজতন্ত্রের জন্মলাভ করবে। তিনি মনে করেন, অস্থিতিশীল ও সংকটপ্রবণ পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় ক্রমাগত শ্রেণি সংগ্রামের ভিতর দিয়ে মজলুম শ্রমজীবী শ্রেণীর মাঝে শ্রেণীচেতনার জন্ম হবে; যার ফলে তাদের মাঝে ঐক্য গড়ে উঠবে এবং এই ঐক্যবদ্ধ শ্রমজীবী শ্রেণি জালেম শাসক শ্রেণিকে ক্ষমতাচ্যুত করে শ্রেণিহীন কওমী সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলবে। তিনি আরও মনে করেন, বিদ্যমান পুঁজিবাদী জালেমী ব্যবস্থার অবসান করতে এবং নিজেদের মুক্তির খাতিরে মজলুম শ্রমজীবী শ্রেণিগুলোর ঐক্যবদ্ধ হয়ে সশস্ত্র বিপ্লবের বিকল্প নেই”
মার্ক্সবাদের তিনটি স্তম্ভ, “দর্শন, রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র, রাষ্ট্র ও বিপ্লব” তত্ত্বের ভিত্তিতে প্রথম ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়া ওরফে লেনিন সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) সমাজতান্ত্রিক বা সর্বহারা শ্রেণির রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। পরবর্তীতে চীন, ভিয়েতনাম, কিউবা, লাওস, এবং উত্তর কোরিয়া মত সমাজতান্ত্রিক বা সর্বহারা শ্রেণির রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে সক্ষম হয়েছে তাঁর এই তত্ত্বের ভিত্তিতে।
এখন হয়তো স্পষ্ট শুধুমাত্র রাজনৈতিক দল থাকলে কিংবা কর্মসূচী প্রণয়ন করলে সেই রাজনৈতিক দলটি মানব মুক্তির তরে কাজ করতে পারে না। মানব মুক্তি তখনি সম্ভব যখন এই সমগ্র পুঁজিবাদী দেশের রাষ্ট্রযন্ত্র সর্বহারা শ্রেণির হাতে অর্থাৎ উৎপাদন যন্ত্র যতক্ষন না সামাজিক প্রক্রিয়ায় না আসা অবধি।
আমাদের বর্তমান সমাজ এখনও স্বার্থান্বেষী চিন্তাধারা প্রভাবিত। তার কারণ, এই বর্তমান নয়া সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বে মানুষের মনে ‘পুঁজি’ শব্দটি এমনভাবে গেঁথে দেওয়া হয় যা পুরো সমাজ বা রাষ্ট্র সেই দিকে ধীরে ধীরে ধাবিত হয়। যার ফলে মানুষের বিবেক বুদ্ধি হারিয়ে মানবতা জিনিসটিকে চিরতরে ধ্বংস করে ফেলে। একজন ব্যক্তি সাধারণত তিনটি কারণে রাজনীতি করে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে সম্পত্তি তৈরির করার উদ্দেশ্যে, দ্বিতীয়টি হচ্ছে সম্পত্তি বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে এবং তৃতীয়টি হচ্ছে সমগ্র মানব মুক্তি অর্থাৎ সর্বহারা তথা মেহনতী মানুষের মুক্তির উদ্দেশ্যে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনীতি ধারাবাহিকতা গোলকধাঁধার ন্যায় বলা যায়। এখানে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি আমলাদের অপরাজনীতির প্রতিচ্ছায়া। পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনীতি ধারাবাহিকতা সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি ধারা বোঝা সম্ভব নয়। প্রয়োজন গভীর অধ্যয়ন ও পর্যবেক্ষণ। যেখানে বর্তমান ছাত্র ও যুব সমাজ বুঝতে অক্ষম। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেখানে অঘোষিত সেনা শাসন বিরাজমান সেখানে স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতি নৃশংস রূপ ধারণ করবে। ইতিহাসের পাতায় যদি দৃষ্টি আকর্ষণ করি, তাহলে দেখতে পাওয়া যায় যেখানে সামরিক শাসন কায়েম হয়েছে সেখানে রাজনীতি তথা সাধারণ জনজীবন নৃশংস রূপ ধারণ করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামও এর ব্যতিক্রম নয়।