হিল ভয়েস, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, বিশেষ প্রতিবেদক: চাঁদাবাজি ও মুক্তিপণের অর্থ ভাগাভাগিতে বিরোধের জেরে সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়নের জি২আই কর্তৃক সেনা ও ক্ষমতাসীন দল মদদপুষ্ট এক চাঁদাবাজকে গুলি করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়নের জি২আই মো: এরশাদ উল্লাহ এবং ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)-এর বান্দরবান জেলা প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা অনুপম চাকমা ও অর্থ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কালাচোখা চাকমা (অটল) এর মধ্যে চাঁদাবাজি ও মুক্তিপণের অর্থ ভাগাভাগিতে বিরোধ দেখা দেয়।
এই বিরোধের জের ধরে গত বুধবার ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ দিবাগত রাত ১১:০০ ঘটিকায় কালাচোখ চাকমা (অটল) ও অনুপম চাকমাকে রিজিয়নের জি২আই মো: এরশাদ উল্লাহ পিস্তল দিয়ে গুলি করে বলে জানা যায়। এতে সেনা-মদদপুষ্ট চাঁদাবাজ ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অনুপম চাকমা গুরুতর আহত হয়।
ঘটনাটি বান্দরবান সদর সেনাগ্যারিসন থেকে 200 গজ দূরে সেগুনবাগান এলাকায় ঘটে। আহত অনুপম চাকমাকে প্রাথমিকভাবে বান্দরবান সদরের ইম্মানিয়েল মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হয়। অপারেশন সফল হলেও সুস্থ না হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেফার করা হয় বলে জানা যায়।
এদিকে ঘটনাটি সম্পর্কে রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়া উল অবহিত হলে সেনা ও ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্ট সংস্কারপন্থী জেএসএস, ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও মগপার্ট সন্ত্রাসী গ্রুপের সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বান্দরবান রিজিয়নের জি২ মেজর মো: এরশাদ উল্লাহকে ঢাকায় বদলি করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনী ও ক্ষমতাসীন দল কর্তৃক সৃষ্ট সশস্ত্র সংগঠন সংস্কারপন্থী জেএসএস, ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও মগ পার্টিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে খুন, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় ইত্যাদি সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। সংস্কারপন্থী ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সদস্যদের রাঙ্গামাটি জেলার সুবলং, লংগদুর তিনটিলা, দীঘিনালার বাবুছড়া, রাঙ্গামাটি জীবতলীসহ বিভিন্ন স্থানে এবং বান্দরবান পৌরসভার বালাঘাটা ও শহরের কেন্দ্রস্থলে সশস্ত্রভাবে মোতায়েন রেখে জনসংহতি সমিতির সদস্য ও চুক্তি সমর্থকসহ সাধারণ লোকের উপর সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও প্রশাসন আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লক্ষ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজি করে চলেছে।
অপরদিকে মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের পোয়াইতু পাড়ায় মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের রাজস্থলীর পোয়াইতু পাড়ায় খুন, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় ও লক্ষ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজি করে চলেছে। সম্প্রতি সেনাবাহিনীর উদ্যোগে বান্দরবান সদর এলাকায় কুহালং মৌজার সশস্ত্র অবস্থায় মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কুহালং এলাকায় মো: রনি নামে জনৈক ব্যক্তি মগপার্টির নেতৃত্বের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। মগপার্টিকে বান্দরবান সদর পাইছড়া এলাকায় চাঁদা কালেকশনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।