হিল ভয়েস, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, চট্টগ্রাম: আজ শুক্রবার ২০২২ ইং তারিখে খাগড়াছড়ি সদরে ধর্মসুখ বিহারের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ ভদন্ত বিশুদ্ধা মহাথেরোকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা ও চট্টগ্রাম বায়োজিদস্থ মাঝের ঘোনা এলাকায় জুম্ম চাদিগাঙ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত জ্ঞান জ্যোতি ভিক্ষুকে কুপিয়ে জখম করার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রামস্থ সচেতন ছাত্র-যুব-নারী ও নাগরিক সমাজ।
মানববন্ধনে জুম্ম চাদিগাঙ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের সভাপতি, বাবু চৈতন্য বিকাশ চাকমা (আন্দোলন) এর সঞ্চালনায় রাপাইং মারমা (নেভী) সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জুম্ম চাদিগাঙ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ (ভিক্টিম) ভদন্ত জ্ঞান জ্যোতি ভিক্ষু, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও ডাক্তার সুশান্ত বড়ুয়া, চট্টগ্রাম নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষ ও চবি পালি বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর জিনো বোধি ভিক্ষু, চবি’র পালি বিভাগের সভাপতি ও অধ্যাপক ডক্টর জ্ঞান রত্ন মহাস্থবির, ধর্ম আলো বৌদ্ধ বিহার কার্যকারী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অংক্যচিং মারমা, সার্বজনীন শ্রী শ্রী ত্রিপুরা বিতা রাধা কৃষ্ণ মন্দির কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক পরেশ ত্রিপুরা, মৈত্রী বনবিহারে উপেদষ্টা ধিমান চাকমা, হিল চাদিগাং বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সাধনা জ্যোতি মহাস্থবির, ইঞ্জিনিয়ার মহিনী রঞ্জন চাকমা প্রমূখ।
অধ্যাপক ড. জ্ঞানরত্ন বলেন, শান্তিপূর্ণ ভিক্ষুরা সহজে রাজপথে নামে না। কিন্তু তাঁরা আজ নামতে বাধ্য হয়েছে। এদেশ বৌদ্ধ সংস্কৃতি ও সভ্যতায় সমৃদ্ধ। কিন্তু ইতিহাসকে অস্বীকার করে বার বার ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং হচ্ছে। খাগড়াছড়িতে বিশুদ্ধ মহাস্থবিরকে হত্যা এবং চট্টগ্রামে অগ্রজ্যোতি ভিক্ষুকে হত্যার উদ্দেশ্য হামলা একই বিষয়ের প্রতিনিধিত্ব করে।
অধ্যাপক ড. জিনো বোধি মহাস্থবির বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের উপর বার বার হামলার বিচার না হওয়ার কারণে ঘটনাগুলো পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। অবিলম্বে হত্যাকারী ও হামলকারীদের গ্রেফতার ও বিচার করতে হবে। অন্যথা বৌদ্ধ সমাজ রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বলেন, সারাদেশে পরিস্থিতি এমন খারাপ হয়েছে যে ধর্মীয়গুরু হত্যার প্রতিবাদে ধর্মীয়গুরু ও ধর্মাবলম্বীদের রাজপথে নেমে আন্দোলন করতে হয়। অথচ চাইলে প্রশাসন এসব স্পর্শকাতর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে পারে।
কিন্তু দেশের রাজনৈতিক দলের কোন প্রতিবাদ না থাকা কিংবা প্রশাসনের উদাসীনতা এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে উৎসাহী হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে যে ঘটনা সংগঠিত হয়েছে সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনী দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। অবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার করতে হবে।