হিল ভয়েস, ৫ ডিসেম্বর ২০২১, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটির সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নে সেনা মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) কর্তৃক চুক্তিপক্ষের একজনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
গত ৩০ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ভোর ৫ টায় বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের কিজিং আদাম নামক স্থানে এই হত্যাকান্ডটি ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম আবিষ্কার চাকমা (৪০)। তিনি সারোয়াতুলি ইউনিয়নের সিজক এলাকার মিন্টু চাকমার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবিষ্কার চাকমা কয়েকদিন আগে বাঘাইছড়ি থেকে এসে বন্দুকভাঙা ও সুবলং এলাকায় সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করছিলেন। ঘটনার দিন তিনি বন্দুকভাঙা ইউনিয়নের কিজিং আদাম নামক স্থানে রাত্রিযাপনকালে সুবলং বাজারে অবস্থানরত সেনামদদপুষ্ট ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ওই বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে চলে যায়।
সন্ত্রাসীরা হত্যাকান্ডটি সংঘটিত করার পর একদল সেনাসদস্য ওই স্থান ত্যাগ করতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করার ব্যাপারে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রামবাসী।
বান্দরবানে জনসংহতি সমিতির নেতৃবৃন্দকে হুমকি:
অন্যদিকে গত ২৪ নভেম্বর বুধবার অপরাহ্ন ২:৩০ ঘটিকায় সেনা-মদদপুষ্ট ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও সংস্কারপন্থী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বান্দরবান সদরের উজানী পাড়াস্থ জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য ও বান্দরবান জেলা কমিটির সদস্য শম্ভু কুমার তঞ্চঙ্গ্যার বাড়ি ঘেরাও করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, রাঙ্গামাটির নান্যাচরের অধিবাসী অটল চাকমার নেতৃত্বে অস্ত্রশস্ত্রসহ ৫/৬ জন সংস্কারপন্থী ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীরা শম্ভু কুমার তঞ্চঙ্গ্যার বাড়ি ঘেরাও করে। কিন্তু সেসময় শম্ভু কুমার তঞ্চঙ্গ্যা বাড়িতে ছিলেন না।
এ সময় সন্ত্রাসীরা শম্ভু কুমার তঞ্চঙ্গ্যার ছোট ভাইকে হুকুম দিয়ে যায় যে, পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে শম্ভু কুমার তঞ্চঙ্গ্যাসহ বান্দরবানে অবস্থানকারী জনসংহতি সমিতির সকল সদস্যদেরকে বান্দরবান ছেড়ে চলে যেতে। অন্যথায় যাকে যেখানে পাওয়া যাবে, তাকে সেখানে গুলি করে হত্যা করা হবে বলে সন্ত্রাসীরা হুমকি দিয়ে চলে যায়।
একই সময়ে সেনা মদদপুষ্ঠ সন্ত্রাসীরা বান্দরবানের কালাঘাটাস্থ অংচাইনথং মারমা পাড়াস্থ জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য সাধুরাম ত্রিপুরা মিল্টনের বাড়িও ঘেরাও করে।
উল্লেখ্য, সেনাবাহিনী ও সেনা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের আশ্রয় ও সহায়তায় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা বালাঘাটা, সুয়ালক, নিউ গুলশান, মেঘনা তালুকদার পাড়া প্রভৃতি স্থানে অস্ত্রসহ অবস্থান করে থাকে।
সেসব অবস্থান করে সন্ত্রাসীরা সাধারণ লোকজন, ব্যবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায় করে থাকে। এমনকি বাজারদিনে কৃষি পণ্য বিক্রেতাদের কাছে প্রকাশ্যে চাঁদা করে থাকে। সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের মদদ থাকায় সাধারণ মানুষ এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না।