হিল ভয়েস, ২১ ডিসেম্বর২০২১, বিশেষ প্রতিবেদক: “ম্রো আদিবাসীদের ভূমিতে কি ঘটছে?”- এই শিরোনামে ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্ক ফর ইন্ডিজিনাস এ্যাফেয়ার্স (ইবগিয়া) কর্তৃক ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে ম্রো জনগোষ্ঠীর উপর সেনাবাহিনীর চাপ ও হুমকি, প্রতিবাদ সত্ত্বেও পাঁচতারা হোটেল নির্মাণ অব্যাহত রাখা, সংবাদ মাধ্যমের উপর সেনাবাহিনীর নজরদারি ও সেন্সরশীপ, ম্রো জনগোষ্ঠীর হত্যাশা ও অসহায়ত্ব ইত্যাদি উঠে এসেছে। নিম্নে ইবগিয়ার উক্ত প্রতিবেদনের বাংলা অনুবাদ দেয়া গেল-
কি হচ্ছে ম্রো আদিবাসীদের ভূমিতে?
চিম্বুকের চারপাশের পাহাড়গুলো খাড়া। এগুলি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম (সিএইচটি) জুড়ে বিস্তৃত পৈতৃক জমির অংশ, যেগুলি বহু শতাব্দী ধরে আদিবাসী ম্রো সম্প্রদায়ের আবাসস্থল। কিন্তু সেই পাহাড়ের চূড়ার সেই জমির একটা বিশাল এলাকায় তারা এখন আর যেতে পারে না। এই কারণে নয় যে এই পাহাড়গুলি চড়তে খুব উঁচু। ম্রোরা পাহাড়ে চড়তে অভ্যস্ত। এটি তাদের পৈতৃক জমি এবং তারা বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসছে। তারা ঐ এলাকায় যেতে না পারার কারণ হল এটি ধাতব তার দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে এবং তা ম্রোদের দ্বারা নয়।
আমরা যে ম্রো ছাত্র-যুব কর্মীদের সাথে কথা বলেছি, তাদের এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য তাদের নাম-পরিচয় দেয়া যাবে না।তারা পাহাড়ের উপরে বেড়া ঘেরা এলাকার দিকে তাকান।তারা ব্যাখ্যা করে বলেন, সেখানে বহু মিলিয়ন ডলারের হোটেল কোম্পানি ম্যারিয়টের লোগো সহ ব্যানার ছাপা হয়েছিল। এখন ধাতব বেড়া ছাড়া আর কিছুই নেই। কোন চিহ্ন নেই, কোন তথ্য নেই।
তারা বললেন, “আমরা সত্যিই জানি না যে সেনাবাহিনী জড়িত কিনা বা অন্য কোন কোম্পানি এই প্রকল্পে জড়িত কিনা।“
কি হচ্ছে ম্রো জনগোষ্ঠীর ভূমিতে?
২০২০ সালের শেষের দিকেপার্বত্য চট্টগ্রামে একটি ম্যারিয়ট ফাইভ-স্টার বিলাসবহুল হোটেল নির্মাণের ঘোষণার পরিকল্পনা প্রকাশ্যে আসে, সেখানে বসবাসকারী আদিবাসী ম্রো সম্প্রদায়কে তাদের জমি থেকে উচ্ছেদ এবং ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে, যা কেবল তাদের বাড়িই নয়, তাদের জীবন-জীবিকার সাথে অন্তর্নিহিতভাবে জড়িত। সেইসাথে ম্রো জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি, পরিচয় এবং তাদের জীবিকা নির্বাহের সাথে জড়িত রয়েছে।
এক বছর পরে, ম্রো সম্প্রদায়কে তাদের বাড়ি এবং তাদের জমিতে কী ঘটছে তা নিয়ে তাদেরকে অন্ধকারে রাখা হচ্ছে , কিন্তু প্রতিবেশী গ্রামে যা ঘটছে তা নিঃসন্দেহে তাদের জন্য অশনিসংকেত ।
“সেখান অনেক কষ্ট, হতাশা আছে”
পার্বত্য চট্টগ্রাম ১১টি বিভিন্ন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর আবাসস্থল এবং দেশের সবচেয়ে সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় অঞ্চলগুলির মধ্যে এটি একটি। তবে এটি আদিবাসীদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান এবং বিশ্বের সবচেয়ে সামরিক অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি। ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া সত্ত্বেও পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনও পর্যন্ত শক্তিশালী সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে । তাছাড়া ভূমি দখল, নির্যাতন ও শোষণের বিরোধিতা করার কারণে সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে আদিবাসী সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তু করা হয় ও হয়রানির শিকার হতে হয়।
২০২১ সালের এপ্রিলে, আমরা পরিকল্পিত বিলাসবহুল হোটেল প্রকল্পের কারণে উচ্ছেদের মুখোমুখি ম্রো সম্প্রদায়ের একজন সদস্যের সাথে কথা বলেছিলাম। সেখানে পাহাড়ের উপর আকস্মিকভাবে লাল পতাকা এবং পিলার বসানো হয়। এখন আট মাস পরে, পতাকা এবং পিলারগুলি এখন বেড়াতে পরিণত হয়েছে এবং এখনও রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ম্রো ছাত্র-যুব কর্মীদের একজন বলেছেন, সেখানে আমাদের অনেক কষ্ট ও হতাশা রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। তাদের জমিতে কী করা হচ্ছে এবং কার দ্বারা হচ্ছে সে সম্পর্কে তাদের কোন প্রকার তথ্য নেই। তারা শুধু একটি বিষয় জানেন যে, প্রাথমিকভাবে পরিকল্পিত পাঁচ-তারকা বৃহৎ হোটেলের পরিবর্তে তা এখন ছোট ছোট কটেজ করা হবে এটুকুই। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পাহাড়ে আসলে কী ঘটছে তা এখনও তারা জানেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ম্রো আদিবাসী জানান, “যেহেতু এলাকাটি ঘেরা দেয়া হয়েছে, সেই সীমানার ভিতরে কী ঘটছে তা কেউ বলতে পারে না।” বস্তুত আদিবাসী ম্রো যাদের এই জমিতে অবাধ প্রবেশাধিকার ছিল এখন আর তা নেই।
দুর্গম পাহাড়ের চূড়ায় বেড়া দিয়ে ঘেরা জায়গা পর্যন্ত পথটি অত্যন্ত কঠিন, খাড়া ঢালে ঘেরা, যেখানে গাড়ি ছাড়া পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব। তাছাড়া এটি একটি ব্যাপক সামরিক এলাকা, যেখানে সামরিক বাহিনী চব্বিশ ঘন্টা টহল দেয়। ক্ষতিগ্রস্ত ম্রো সম্প্রদায়ের সদস্যদের তাদের জমিতে কী ঘটছে তা দেখার একমাত্র উপায় হল পাহাড়ে চড়ে বেড়ার উপর দিয়ে এক ঝলক দেখার চেষ্টা করা, যা একটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।
“সেখানে নিষেধাজ্ঞা আছে এবং এটাই বাস্তব”
যদিও ২০২১ সালের শুরুতে পরিকল্পিত প্রকল্প এবং ম্রোদের আসন্ন উচ্ছেদের উপর মিডিয়ার উল্লেখযোগ্য মনোযোগ ছিল। সেখানে উৎপাতমূলক কার্যকলাপ অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও ঘটনাগুলির রিপোর্টিং হ্রাস পেয়েছে এবং বছরের বাকি সময়টাতে তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
অধিকার কর্মীরা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার কথা জানান।
অক্টোবরে সংঘটিত রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সংসদ সদস্য দীপঙ্কর তালুকদারের নেতৃত্বে উন্নয়ন প্রকল্পের স্থান সম্পর্কে তদন্তের পর কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনের জন্য কাউন্সিল সিটি হলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানান। তারপর সম্মেলন শুরু হওয়ার প্রাক্কালে সামরিক বাহিনী সাংবাদিকদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন এবং ফলে সেই তদন্তের ফলাফলগুলি এখনও পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি।
সভা শেষ হওয়ার পরে, ভিতরে উপস্থিত কিছু ম্রো কর্মী বাইরে থাকা বিতাড়িত সাংবাদিকদের কাছে গেলে কর্মীরা তাদের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার আগেই সামরিক বাহিনী আবার হস্তক্ষেপ করে এবং সাংবাদিকদের তাড়িয়ে দেয়।
তারপরে ছাত্র অধিকার কর্মীরা ফলাফলের রিপোর্ট করার জন্য বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে ধর্ণা দিয়েছিল, কিন্তু তারা যেসব সংবাদ মাধ্যমে অফিসগুলির সাথে যোগাযোগ করেছিল তাদের কেউই উচ্ছেদের ঘটনা সম্পর্কে কভার করতে চায়নি।
“সেখানে নিষেধাজ্ঞা (সেন্সরশীপ) আছে এবং এটাই বাস্তব,” কর্মীরা বলেছেন।
আমরা যত বেশি কথা বলি, ততই স্পষ্ট হয়ে ওঠে প্রতিটি সাংবাদিক, রিপোর্টার বা সংবাদ মাধ্যমের অফিসগুলো, যার ঘটনাবলী প্রকাশ করার চেষ্টা করছিলেন, সামরিক বাহিনী পরিকল্পিতভাবে তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করতে থাকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ থেকে সরে যেতে থাকেন।
“এমনকি যদি কেউ চেষ্টা করে থাকলেও এবং রিপোর্ট করার সাহস দেখার চেষ্টা করলেও, তারা সেনাবাহিনীর বাধা অতিক্রম করে পুরো ঘটনাবলীর তথ্য পেতো না,” অধিকার কর্মীরা ব্যাখ্যা করেন।
এরকম বিভিন্ন মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা প্রকাশ্যে আনার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর কৌশল হচ্ছে, যেমন- সাংবাদিকদের ভয় দেখানো, তথ্য সংগ্রহ, ঘটনাবলী লুকিয়ে রাখা এবং নিষেধাজ্ঞা জারি করা থেকে শুরু করে কথা বলতে চাওয়া অধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে সরাসরি হুমকি পর্যন্ত প্রদান করা হয়।
আরেকটি সাধারণ ‘সামরিক কৌশল’ হচ্ছে, যা আমরা এপ্রিল নিবন্ধে রিপোর্ট করেছি, তা হল আদিবাসীদের বিভিন্ন দলকে একে অপরের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়া।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি লং মার্চ এবং প্রতিবাদের পর, সামরিক বাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের দু’টি দলকে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করালে তাদের মধ্যে হানাহানির ঘটনা শুরু হয়। সেনাবাহিনীর চোখে সম্ভাব্য বিপজ্জনক ম্রো ছাত্র কর্মী যারা হোটেল উন্নয়ন প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে তাদের ছবি তোলা হয় এবং এর পরে সামরিক বাহিনী তাদের গ্রামে এসে ছবিতে থাকা ব্যক্তিদের সম্পর্কে এলাকার লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।
“তারা তদন্ত করার চেষ্টা করেছিল কারা এই ম্রো যুবক। কিন্তু যেহেতু গ্রামবাসীদের ম্রো ছাত্র অধিকার কর্মীদের উপর বিশ্বাস আছে সেহেতু তারা পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিল। তাদের বেশির ভাগই বলেছে, তারা জানে না এই ছাত্রগুলো কারা। এই ম্রো যুবকরা কারা তা জানতে সেনাবাহিনী তাদের ম্রো সম্প্রদায়কে চাপ দিচ্ছিল যাতে তারা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। আপনি জানেন যে এটা শুধুমাত্র হয়রানি, যাতে সেই ব্যক্তি তার ম্রো সম্প্রদায়ের অধিকারের দাবির জন্য লড়াই না করে । ঈশ্বরকে ধন্যবাদ তারা কোনো মামলা করেনি।” তারা আরও বলেন।
“আমরা এগুলি আগেও দেখেছি”।
আমাদের কথোপকথন শেষে, আমরা তাদের জিজ্ঞাসা করেছি এই মুহূর্তে তাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ কী?
“আমরা এগুলি আগেও দেখেছি,”তারা বলেন, “তারা ক্রমাগত এগিয়ে আসছে এবং তারা আরও বেশি করে জমি অধিগ্রহণ করে চলেছে।”
দুঃখজনকভাবে সত্য হল, বাংলাদেশের চিম্বুক পাহাড়ের চারপাশে উন্নয়নের নামে যে উচ্ছেদ ও জমি অধিগ্রহণ চলছে তা শুধুমাত্র এই অঞ্চল বা এই নির্দিষ্ট উন্নয়ন প্রকল্পের নয়। এটি শাসকগোষ্ঠীর একটি সাধারণ পদ্ধতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বলেন, তাদের বাড়ি থেকে খুব বেশি দূরে নয় নীলগিরি এলাকা।সেখানে কী ঘটেছিল তা তাদের জানা আছে। সেখানে সেনাবাহিনী ইতিমধ্যেই রিসোর্ট তৈরি করা শুরু করেছে৷
“যখন তারা রাস্তা তৈরি করছিল, সেখানকার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে, রাস্তার দুই পাশে বসবাসকারী সমস্ত সম্প্রদায়ের বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে। তাদেরেকে বৈদ্যুতিক সংযোগের সাথে যুক্ত করা হবে,” অধিকার কর্মীরা ব্যাখ্যা করেন।
কিন্তু ম্রো সম্প্রদায় যখন সন্দেহ প্রকাশ করতে থাকেন এবং তাদের অধিকার ও দাবির উপর জোর দিতে থাকেন, তখন সামরিক বাহিনী তাদেরকে একলক্ষ টাকা [প্রায় ১,০৩০ ইউরো] প্রদান করে তাদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করনে।কিন্তু হঠাৎ করে তারা তা আবার ফিরিয়ে নেয়। আর যখন একজন ম্রো ব্যক্তি সেনাবাহিনীর লোকজনের কাছে গিয়ে বলেন, ‘আপনারা এটা করতে পারবেন না, এটা আমার জন্মভূমি’, তখন তাকে এ বিষয়ে কিছু না বলার জন্য সরাসরি হুমকি দেওয়া হয়। সুতরাং, যদি এই ঘটনাগুলি নীলগিরিতে ঘটে, যা আমার পাহাড় থেকে খুব বেশি দূরে নয়, যেখানে সেনাবাহিনী তার সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে, আমাদের এলাকার লোকেরা, তারা জানে তাদের ক্ষেত্রে কী ঘটতে চলেছে, যদি রিসর্ট বা কটেজ বা পাঁচতারা হোটেলগুলো তাদের জায়গার উপর নির্মিত হয়।
“এতে আমাদের হাত বাঁধা”
ম্রো ছাত্র যুবরা নিজেরা এখন কি করতে পারে? তারা যা করতে পারে সেটা কি?
তারা বলেন, হতাশার কাছে আত্মসমর্পণ না করা কঠিন। “এতে আমাদের হাত বাঁধা”।
প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শের অভাব, মিডিয়ার উপর ক্রমাগত হস্তক্ষেপ এবং অধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে হুমকি তাদের কাজকে আরও কঠিন করে তুলছে।
এই সমস্ত কিছুর পাশাপাশি, এই তরুণ সক্রিয় ছাত্র কর্মীরা তাদের নিজস্ব পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে এবং তাদের নিজস্ব জীবন গঠন করতে হচ্ছে। কার্যকরীভাবে এবং ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় সম্প্রদায়কে সংগঠিত করার এবং আরও প্রতিবাদী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার জন্য এবং তাদের অধিকার সংক্রান্ত জাতীয় সরকার অনুস্বাক্ষরিত নীতি ও ঘোষণাগুলিতে করার দাবিতে সোচ্চার রাখতে ছাত্র অধিকার কর্মীদের যে সময়, উদ্যোম এবং সক্ষমতার দরকার তার অভাব রয়েছে।
এবং যদিও তারা জানে না তাদের ভূমিতে কী ঘটছে, তারা জানে যে তাদের কিছু একটা করতে হবে।
তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যেমন তাদের ভূমি,তাদের ঘরবাড়ি,তাদের সংস্কৃতি এবং পরিচয় রক্ষা করতে যা করা দরকার তা হল অনেক বড় কার্যক্রম হাতে নেওয়া যাতে সংবাদমাধ্যমগুলো সেগুলো উপেক্ষা করতে না পারে।
তারা বলেন, “আমাদের আরও বেশি কর্মসূচি গ্রহণ দরকার যা এত বড় হবে যে মিডিয়া সেসব উপেক্ষা করতে পারবে না”। তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যা তাদের জমি, তাদের বাড়ি, তাদের সংস্কৃতি এবং তাদের পরিচয় রক্ষা করতে মুলত আরও কার্যক্রম হাতে নেওয়া দরকার বলে মনে করে তারা।
আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এবং বিশাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিকদার গ্রুপ-আরএন্ডআর হোল্ডিংস-এর কর্মকর্তাদের দাবি করা সত্ত্বেও, ভূমির একটি বিশাল এলাকা অবৈধভাবে নেওয়া হয়েছিল, এবং স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি ব্যতিরেকেই হোটেল প্রকল্পটি কোনও উপযুক্ত পরামর্শ ছাড়াই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তার পরপরই সামরিক বাহিনী চিম্বুক পাহাড়ের ২০ একর জমিতে বেড়া দেওয়া শুরু করে। এই ঘটনাগুলি সুদূরপ্রসারী প্রতিবাদের জন্ম দেয়, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, জাতিসংঘের একাধিক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ারের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট মূল ব্যক্তিদের কাছে একটি আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংসদ সদস্যের কাছে একটি খোলা চিঠি পাঠানো হয়।
ম্যারিয়ট হোটেল জাতিসংঘের স্পেশাল র্যাপোটিয়্যারদের অফিসিয়াল যোগাযোগের জবাবে বলেছে যে, তারা হোটেল নির্মাণে বিনিয়োগ করবে কিনা তা এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ ব্যাপারে স্পেশাল র্যাপোটিয়্যারদের যোগাযোগে প্রতুত্তরে বাংলাদেশ সরকার কখনোই সাড়া দেয়নি।